আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বাধ্য হয়েই ভিন্ন মতের সহকর্মীদের সাথে কাজ করতে হয় বলে কষ্ট পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই বিসিএসে ছাত্রলীগের ছেলেদের অনেক দরকার।
গত ২৪ জুলাই বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক উপকমিটির পরিচিতি সভায় এমন মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সচিবালয় এবং প্রশাসনে আমাদের আরো দক্ষ লোকের প্রয়োজন। তাই ছাত্রলীগের সুদিন ফিরিয়ে আনতে হবে। লেখাপড়ায় আরো মনোনিবেশ করতে হবে। ছাত্রলীগের ছেলেরা কেনো বিসিএসে আসেনা কেনো লেখাপড়া করে না। প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই দুঃখ করে এ প্রশ্ন করেন বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন গুলোর কর্মীরা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে আদিষ্ট করার লক্ষ্যে শিক্ষা জীবনের শুরুতে দলীয় সংগঠনগুলির সাথে জড়িয়ে পড়েন এবং ছাত্র রাজনীতির এক পর্যায়ে এসে নিজেকে ছাত্র রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করতে না পেরে মুখ থুবড়ে পরেন ।উদাহরন স্বরুপ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গত ৩০ তম সম্মেলনে প্রায় ৪০০ কর্মীরা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র দাখিল করে যাদের বয়স ৩০ এবং ৩০ এর কাছাকাছি।প্রায় ৫০ লক্ষ শিক্ষার্থী সমর্থনকারী এই ছাত্র সংগঠনটির বিভিন্ন জেলা, বিশ্ববিদ্যালয়,কলেজ ইউনিটের চিত্র প্রায় একই রকম। উক্ত শিক্ষার্থীদের বাস্তবধর্মী শিক্ষা লাভের সুযোগ না থাকায়, পদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নেতাদের পেছনে ছুটে ছুটে জীবনের মূল্যবান সময় পার হয়ে যায় এবং সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে পরবর্তীতে তারা চাকরির বাজারে প্রবেশ করতে পারে না বয়স ৩০ এর শৃঙ্খলে আটকে যায়।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সরকারি এবং বেসরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর থাকায় ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনগুলোর একটি বৃহৎ অংশ বিশেষ করে বিভিন্ন ইউনিটের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের মত কাঙ্খিত পদ না পেয়ে ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠনের একটি বৃহৎ অংশ হতাশায় নিমজ্জিত হয় ফলে পরিবার, সমাজ এমনকি দেশের বোঝা হিসেবে আবির্ভূত হয়।
ছাত্রসংগঠন করার কারনেই বেকার থাকতে হচ্ছে, এমন খোঁচা প্রতি নিয়তই পরিবার থেকে শুনতে হয়, ফলে ক্রমান্বয়ে প্রতিটি পরিবারও এখন ছাত্ররাজনীতি অপছন্দ করতে শুরু করেছে।
তাই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুসারে ৩০ থেকে ৩৫ এ উন্নীত করলে শিক্ষার্থীরা নিজ যোগ্যতাবলে সরকারি-বেসরকারি সব সেক্টরে প্রবেশ করে নিজের পরিবার ও দেশের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে।।
এছাড়াও, লক্ষ লক্ষ কর্মী শুধুমাত্র দলকে ভালোবেসে ছাত্রসংগঠন করে যায় দলকে ভালোবেসে কর্মী হিসাবে নিজেকে উৎসর্গ করে। দলের নিয়মিত মিটিং সমাবেশে উপস্থিত থাকতে গিয়ে তারা যথাযথ পড়ার সুযোগ পায় না, বিধায় চাকরির জন্য অতিরিক্ত পড়ার সুযোগ পায় না। এই লক্ষ লক্ষ কর্মীদের মধ্যে গুটিকয়েক পদধারী নেতার ভাগ্য পরিবর্তন হয় কিন্তু যেই কর্মীগণ নিজেদের আত্মোৎসর্গ করলো, একটা সময় এসে দেখে বয়সসীমার ৩০ বছরের শৃঙ্খলে আটকিয়ে গিয়েছে। তাই দলের আত্মোৎসর্গকারী কর্মীদের জন্য হলেও বয়সসীমা বৃদ্ধি বা উন্মুক্ত করা আবশ্যকীয়।
১৯৯১ সালে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ২৭ থেকে ৩০ বছর অর্থাৎ ৩ বছর বৃদ্ধি করা হয় ।
আওয়ামীলীগ যেহেতু জনবান্ধব সরকার তাই আমরা চাই, এবার আওয়ামীলীগ সরকার বয়সসীমা বৃদ্ধি করুক।
আন্তর্জাতিক মানদন্ডের সামঞ্জস্য অনুযায়ী ৩৫ বছর করবে এবং ছাত্রসমাজের বহুল আকাঙ্ক্ষিত দাবি পূর্ণতা দানের মাধ্যমে আরও বেশি জন সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করবে এবং স্মাট বাংলাদেশ বিনির্মানে শিক্ষার্থী সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
শরিফুল হাসান শুভ
আহবায়ক,চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ প্রত্যাশী শিক্ষার্থী সমন্বয় পরিষদ।