চৈত্র সাংক্রান্তী তিথিতে রামনবমী রামের জন্ম উৎসবে ঐতিহ্যবাহী নওগাঁর মান্দা উপজেলার ঠাকুরমান্দার রঘুনাথ জিউ মন্দির প্রাঙ্গণে ঢল নামে হাজারো ভক্তের। দিনভর চলে কীর্তন, প্রসাদ বিতরণ, ভক্তদের পুজো অর্চনা, ভোগ নিবেদন আর মানত দেওয়া।
আজ বৃহস্পতিবার এ উৎসবকে ঘিরে মুখর হয়ে উঠে মন্দিরের চারপাশের এলাকা। রামভক্তদের মিলনমেলায় পরিণত হয় মন্দির প্রাঙ্গণ।
এদিন ঠাকুর দর্শনে আসেন ভারতের সহকারী হাইকমিশনার মনোজ কুমার। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম তীর্থস্থান হিসেবেও ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে ঠাকুরমান্দা রঘুনাথ জিউ মন্দিরের।
স্থানীয়রা জানান, মন্দিরের পূর্বপাশ দিয়ে বয়ে চলা শিবনদ একসময় ছিল স্রোতস্বিনী। নদে ভক্ত দর্শনার্থীরা গঙ্গাস্নান করে ভেজা কাপড়ে পাশের বিল থেকে মালের, পদ্মপাতা তুলে মাথায় দিয়ে মন্দিরে যেতেন ঠাকুর দর্শনে। কিন্তু শিবনদের সেই জৌলুস আর নেই। বিলে নেই পদ্মপাতা। এরপরও ভক্তরা সেই রীতি এখনও মেনে চলার চেষ্টা করেন। শিবনদ ও বিলে পানি না থাকলেও মন্দির সংলগ্ন পুকুরে স্নানের পর মাটির পাতিলে ভোগের মিষ্টান্ন মাথায় নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে প্রভুর চরণে নিবেদন করেন ভক্তরা।
রামনবমী উৎসবে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পুণ্যার্থীরা আসেন ঠাকুর দর্শন ও মানসিত করতে। এবারও ভারত থেকে বেশকিছু দর্শনার্থী এসেছেন এই মন্দিরে। আগত ভক্ত ও দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এ মন্দিরের আশপাশের এক কিলোমিটার এলাকা। এ উৎসবকে ঘিরে মন্দিরের পাশে আয়োজন করা হয়েছে গ্রামীণ মেলার।
মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সত্যেন্দ্রনাথ প্রামানিক বলেন, ভোরে পুজা-অর্চনার পর মন্দিরের প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হয়। এরপর ভক্ত, দর্শনার্থীরা মন্দিরে প্রবেশ করেন। দুপুরে অন্নভোগ ছাড়াও ভক্তদের জন্য দিনভর পদাবলী কীর্তন ও রামের ভজন সঙ্গীতের আয়োজন করা হয়েছে মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে।
মন্দির কমিটির সভাপতি চন্দন কুমার মৈত্র বলেন, প্রতিবারের মত এবারও হাজার হাজার ভক্তদের আগমন ঘটেছে মন্দির চত্বরে। ভক্তদের নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত আছে। ৯দিন পর লক্ষন ভোজের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় এ উৎসব শেষ হবে।