আসন্ন ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে জমে উঠেছে কোরবানীর পশুর হাট। উত্তরবঙ্গের সর্ববৃহৎ পাঁচবিবি গো-হাটা সহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামীণ হাটবাজার গুলোতে জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা মাত্র কোরবানী পশুর বেচা-কেনা শুরু হয়েছে। এসব হাটগুলোতে দেশীয় গরুর পাশাপাশি ভারতীয় গরুর উপস্থিতিও বেশ লক্ষনীয়। একারণে কোরবানী ঈদকে উদ্দেশ্য করে লালন পালন কারী উপজেলার ক্ষুদ্র খামারীরা তাদের খামারের গরুর নায্য দাম নিয়ে দুঃচিন্তায় পড়েছেন। গো-খাদ্যের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গেলেও তারা লাভের আশায় বেশি দামে খাদ্য খাইয়ে গরু পালন করেছেন। কিন্তুু বাজারে ভারতীয় গরুর উপস্হিতির কারনে তারা তাদের পশুর ভালো দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন ।
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের ক্ষুদ্র খামারী রুহুল আমিন জানায়, তিনি কোরবানীর ঈদকে টার্গেট করে এবার বিভিন্ন জাতের ১৮টি গরু পালন করেছেন। ইতিমধ্যে তিনি ৫টি গরু বিক্রি করেছেন। কিন্তুু বাংলাদেশে ভারতীয় গরু প্রবেশ করায় বাজারে কিছুটা দাম কম থাকায় বাঁকী গরু আর বিক্রি করবেন না। তিনি জানান, বাজারে যে হারে গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, সে তুলনায় গরু বিক্রিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে। ভারতীয় গরু না আসলে আমার মত ক্ষুদ্র খামারীরা গরু বিক্রি করে কিছুটা লাভবান হতো।
উপজেলার ধরঞ্জী গ্রামের পশু চিকিৎসক জহুরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় পশু চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি কোরবানীর বাজারকে টার্গেট করে প্রতি বছর বিদেশী জাতের গরু লালন-পালন করি। এবার গো-খাদ্যের দাম লাগামহীন বেড়েই চলছে । এতে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। সে কারণে এবার মাত্র দুটি শাহীওয়াল জাতের গরু পালন করছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের হিসাব মতে এবার উপজেলায় ৭৫ হাজার ৬৭০ টি গবাদি পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুুত করেছেন ব্যক্তি উদ্যোক্তা সহ স্থানীয় খামারিরা। আর উপজেলায় কোরবানীর পশুর চাহিদা ৪৯ হাজার ৪৫০টি। চাহিদার চেয়ে প্রস্তুুত রয়েছে আরো প্রায় ২৬ হাজারের বেশি পশু । উপজেলায় বাণিজ্যিক কোন খামার না থাকলেও ৮ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার ১ হাজার ৫৫৪ টি পারিবারিক খামারে এসব পশু কোরবানীর জন্য প্রস্তুুত করা হয়েছে। কোরবানি যোগ্য গবাদি পশুর মধ্যে ষাঁড় ৭ হাজার ৫ শ টি, বলদ ৮ হাজার ৫শ টি, বকনা ১০ হাজার, মহিষ ২৫০টি, ছাগল ৩৫ হাজার, ভেড়া ৪ হাজার ৫শ সহ মোট ৭৫হাজার ৬৭০ টি গবাদিপশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় কোরবানির পশুর চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে ।
অপরদিকে এসব পশু বিক্রয়ের জন্য ১৭/১৮টি অনলাইন মাধ্যম ও সরকারী ভাবে পশুরহাট পাঁচবিবি জয়পুরহাট নামে একটি সরকারী ওয়েবসাইট রয়েছে। যেখানে মূল্য সহ প্রতিদিন এসবে পশুর ছবি সহ বিবরণ ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে আপলোড করা হচ্ছে।
পাঁচবিবি উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নিয়ায কাযমির রহমান বলেন, আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে এ উপজেলায় বিভিন্ন খামারে পর্যাপ্ত পরিমাণে কোরবানী যোগ্য পশু রয়েছে। খামারীরা তাদের পশুর ন্যায্য মূল্য যাতে পায় সে জন্যে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু প্রবেশে কড়া নজরদারী বাড়াতে ইতিমধ্যে বিজিবি ও পাঁচবিবি থানা পুলিশ কে অবহিত করা হয়েছে।
২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল তানজিলুর রহমান বলেন, সীমান্ত এলাকা দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে যেন গরু প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সীমান্ত এলাকায় বিজিবি সর্তক অবস্থায় রয়েছে।