প্রেস কাউন্সিল পদক ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে অতিথিদের সঙ্গে পুরস্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিকেরাছবি: বাসস
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সরকার করোনা মহামারি এবং বিশ্বে যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাাদেশকে অনেক দেশের তুলনায় ভালোভাবে পরিচালনা করছে। সেই কারণে আমরা অনেক দেশের চেয়ে ভালো আছি।’
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক ২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের প্রেক্ষাপট ও উদাহরণ টেনে বলেন, ‘আমাদের দেশে পান থেকে চুন খসলেই মির্জা ফখরুল সাহেব লাফ দিয়ে কথা বলেন। এর সঙ্গে আবার বুদ্ধিজীবী হিসেবে পরিচয় দিতে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা রাত ১২টার পর টেলিভিশনের টকশোতে পর্দা গরম করেন। কান ঝালাপালা হয়ে যায়।’ মন্ত্রী বলেন, তাঁদের বিশ্ব প্রেক্ষাপটটা দেখা প্রয়োজন।
মন্ত্রী দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে বলেন, ‘তুরস্কে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৩০ শতাংশ, ভারতে ৭-৮ শতাংশ, বাংলাদেশে আগে কম ছিল; কিন্তু গত দু-এক মাস ধরে একটু বেশি হওয়াতে যেভাবে লেখালেখি, কথাবার্তা, এগুলোর দিকে আমি সাংবাদিকদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে অনুরোধ জানাব। সেই সঙ্গে বিশ্ব প্রেক্ষাপটটাও লেখা হলে, পাঠক সঠিক তথ্য পাবে। অবশ্যই সরকারের ভুল থাকলে, সেটি নিয়ে সমালোচনা করতে হবে। সমালোচনাকে সমাদৃত করার মানসিকতা আমাদের আছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সেই সংস্কৃতি লালন করেন।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ভুলত্রুটির সমালোচনা যেমন থাকতে হবে, ভালো কাজের প্রশংসাও থাকতে হবে। দুটি না হলে দেশ এগোবে না। যাঁরা ভালো কাজ করেন এবং অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করার চেষ্টা করেন, তাঁরা আশা হারিয়ে ফেলবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ, রাষ্ট্রের আয়না হিসেবে কাজ করে, মানুষের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত উৎকর্ষ সাধনে এবং সততা ও নিষ্ঠা উৎসাহিত করতে প্রেস কাউন্সিল পদক চমৎকার ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত অনুষ্ঠানটির সভাপতি ও কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. নিজামুল হক নাসিম বলেন, প্রেস কাউন্সিল সাংবাদিক এবং সংবাদপত্রের মান উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদক বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাকে উৎসাহিত করে।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক এবং পদক জুরিবোর্ডের চেয়ারম্যান কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, সাংবাদিকরা এখন অনেক মানসম্পন্ন রিপোর্ট করছেন। এ পদক তাঁদের উৎসাহিত করবে।
প্রেস কাউন্সিল সদস্য ইকবাল সোবহান চৌধুরী স্বাগত বক্তৃতায় বলেন, জাতির পিতার হাতে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলকে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও যুগোপযোগী ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিয়েছেন।
পদক পেলেন যাঁরা
সাত বিভাগে দেওয়া পদকের মধ্যে এ বছর সর্বজন শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক ও দৈনিক সংবাদের সাবেক সম্পাদক মরহুম বজলুর রহমানকে মরণোত্তর আজীবন সম্মাননায় ভূষিত করা হয়। প্রয়াতের পক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি, সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী সম্মাননা পদকটি তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের হাত থেকে গ্রহণ করেন।
প্রাতিষ্ঠানিক বিভাগে সম্মাননাপ্রাপ্ত দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল আলম এবং আঞ্চলিক প্রাতিষ্ঠানিক সম্মাননাপ্রাপ্ত খুলনার দৈনিক পূর্বাঞ্চলের পক্ষে সম্পাদক মোহাম্মদ আলী পদক গ্রহণ করেন।
গ্রামীণ সাংবাদিকতায় দৈনিক ভোরের কাগজের সোনাগাজী প্রতিনিধি সৈয়দ মনির আহমেদ, উন্নয়ন সাংবাদিকতায় দ্য ঢাকা ট্রিবিউনের সিনিয়র রিপোর্টার মো. শাহেদুল ইসলাম (শাহেদ শফিক), নারী সাংবাদিকতায় বিটিভির রিপোর্টার তুলনা আফরিন এবং ফটোসাংবাদিকতা বিভাগে দ্য নিউ এইজের স্টাফ ফটোগ্রাফার মো. সৌরভ লস্করের হাতে প্রেস কাউন্সিল পদক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী ও অতিথিরা।
২০১৮ সালে প্রবর্তিত বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল পদকের আজীবন, প্রাতিষ্ঠানিক ও আঞ্চলিক প্রাতিষ্ঠানিক বিভাগে ১ লাখ টাকা এবং অপর ৪টি বিভাগে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সম্মাননা দেওয়া হয়