রাজশাহী: রাজশাহীর তানোর উপজেলায় গির্জায় তিন দিন ধরে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে আটকে রেখে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফাদার প্রদীপ গ্যা গরীকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৫। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর আমচত্বর সংলগ্ন বিশপ হাউজ থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এর আগে রাত সাড়ে ৮টার দিকে তানোর থানায় তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের হয়।
র্যাব-৫ এর রাজশাহীর কোম্পানি কমান্ডার এটিএম মাইনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
এটিএম মাইনুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ধর্ষণের খবর জানতে পারার পর থেকেই পলাতক প্রদীপ গ্যা গরীকে গ্রেফতারে প্রচেষ্টা শুরু হয়। পরে রাতেই তাকে বিশপ হাউজ থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর তাকে তানোর থানায় সোপর্দ করা হয়।
ফাদার প্রদীপ গ্যা গরীর তানোর উপজেলার সাধুজন মেরী ভিয়ান্নী গির্জায় কর্মরত ছিলেন।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আদিবাসী খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ওই কিশোরী শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে বাড়ির পাশে ওই গির্জার পাশে ঘাস কাটতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে না পেয়ে পরদিন রোববার (২৭ সেপ্টেম্বর) তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তার পরিবার। পরে সোমবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গির্জার ফাদার প্রদীপের ঘরে ওই কিশোরী বন্দি আছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্য এবং এলাকার লোকজন সেখানে খোঁজ করে তাকে উদ্ধার করেন।
এরপর সন্ধ্যায় গির্জার ভেতরেই সালিশি বৈঠক বসে। সেখানে দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ফাদার প্রদীপকে অপসারণ করে রাজশাহীতে নিয়ে আসা হয়। আর ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে গির্জার ভেতরে সিস্টারদের কাছে রাখা হয়।
গির্জার প্রধান ফাদার প্যাট্রিক গমেজ ও সালিশি বৈঠকের প্রধান কামেল মার্ডি তাকে আটকে রেখেছিলেন। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা নিখোঁজের জিডি থানা থেকে প্রত্যাহার করলে তাকে ছাড়া হবে বলে জানায় গির্জা কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার ওই কিশোরীর পরিবার থানায় অভিযোগ দিলে সন্ধ্যায় তানোর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাকিবুল হাসান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুশান্ত কুমার মাহাতো গির্জা থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করেন।
জানতে চাইলে রাজশাহীর তানোর থানার (ওসি) রাকিবুল হাসান বলেন, শারীরিক পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেফতার ফাদার প্রদীপকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।