নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজার সিনহা হত্যার ঘটনায় বরখাস্ত ওসি প্রদীপ বাহিনীর বিচার চাইলেন মিথ্যা মামলায় ১১ মাস পর কারামুক্ত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান। সেই সঙ্গে পেশাগত প্রয়োজনে দেশের সকল স্তরের সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, টেকনাফের বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশের অপকর্ম, মাদক নির্মূলের নামে মাদক সেবন ও ব্যবসার বিরুদ্ধে কলম ধরেছিলাম। বিবেকের দায়বোধ থেকে পেশাগত কারণে সংবাদগুলো করেছি। তার কারণে আমাকে একে একে ৬টি মামলার আসামি বানানো হয়েছে। দীর্ঘ ১১ মাস ৫ দিন কারাভোগ করেছি। আর কোন বিভেদ নয়। এখন সময় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।
রবিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে ফরিদুল মোস্তফার চিকিৎসার্থে আর্থিক সহায়তা প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি কথাগুলো বলেছেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম-বিএমএসএফের কক্সবাজার জেলা সভাপতি মিজান-উর রশিদ মিজান।
সাংবাদিক ফরিদ বলেন, জাতির জনকের স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণের শত্রুদের অপকর্মের খবর প্রকাশের অপরাধে অনেক জেল জুলুমের শিকার হয়েছি। মাদক ব্যবসায়ি ও অপরাধীদের হাতে কারাগারের ভিতরে বাহিরে লাঞ্চিত অপমানিত হয়েছি।
শুধু দেশের জন্য আমার যা গেছে তা- ফিরে পাবার নয়। তবুও প্রধানমন্ত্রী তথা সরকারের পক্ষ থেকে সাধ্যমত ক্ষতিপূরণ না দিলে এই জুলুম মহান আল্লাহ ও সহ্য করবে না।
আমি জানি প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব মানবতার মা। তিনি দেশিবিদেশীদের চোখের পানি মুছেন। মিথ্যা মামলার কারণে আমি সর্বহারা।
সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা বলেন, কারাগারে থাকাকালে ওসি প্রদীপের ইশারায় আমাকে শ্বাসরুদ্ধ, খাবারে বিষ প্রয়োগ, ভুল চিকিৎসাসহ নানাভাবে হত্যার অপচেষ্টা চালানো হয়। কিন্তু কারাগারের কর্মকর্তাদের আন্তরিকতাপূর্ণ তৎপরতায় প্রদীপ ও তার লালিত মাদক ব্যবসায়ীরা সফল হয়নি।
মাদক ব্যবসায়ী ও প্রদীপ বাহিনীর জুলুমের বিচার, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, জড়িতদের শাস্তি, জীবনের নিরাপত্তা, পরিবারের মাথা গুজার ঠাঁই, চিকিৎসাসহ পেশাগত সব প্রকার সহযোগিতা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি করছি।
সভায় বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বিএমএসএফের সাধারণ সাম্পাদক আহমদ আবু জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক ছৈয়দ খারুল আলম, কক্সবাজারের প্রবীণ সাংবাদিক ফজলুল কাদের চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক মুকুল, কক্সবাজার উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি রুহুল আমিন সিকদার, বাংলাভিশনের স্টাফ রিপোর্টার মোর্শেদুর রহমান খোকন, নির্যাতিত সাংবাদিক ছালামত উল্লাহ, ছোটন কান্তি নাথ প্রমুখ। সভা সঞ্চালক ছিলেন বিএমএসএফ কক্সবাজার জেলা সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিন। সভার শেষান্তে সাংবাদিকেরা কারামুক্ত ফরিদকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছে।
মতবনিময় সভার পর নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেনের সাথে সাক্ষাত করেন। এ সময় নির্যাতিত সাংবাদিক ফরিদুল মোস্তফা খান সুখ-দুঃখের বিষয়গুলো তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক তার ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। সেই সঙ্গে ফরিদের জীবনের নিরাপত্তাসহ প্রয়োনীয় সব প্রকারের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। সাক্ষাতকালে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাং শাজাহান আলিসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।