মো: মাসুদ রানা,কচুয়াঃ
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পালাখাল মডেল ইউনিয়নের আইনপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা লিয়াকত আলী তালুকদার উত্তর পালাখাল মোড়ে দোতালা বাড়িটি গত ৮ বছর যাবত মৌমাছিদের দখলে রয়েছে। তবে এই মৌমাছিরা কখনও কাউকে আক্রমণ করেনি। প্রথম প্রথম এই মৌচাক দেখে পরিবারের সবাই ভয়ে আতংকিত থাকলেও এখন আর কেউ ভয় পায় না। বরং নিয়মিত মধু সংগ্রহ করে আনন্দিত তারা। পরিবারের চাহিদা পূরণ করেও মধু বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন এই বাসার মালিক।
বাসার মালিক অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লিয়াকত আলী তালুকদার ও স্ত্রী মনিরুন্নাহার বলেন , ২০১১ সালে তিনি দোতালা ভবনটি নির্মাণ করেন। ভবনটি করার কিছুদিন পর থেকেই মৌমাছিরা এসে তার ভবনে বাসা বাঁধে। প্রথম বছর দু-একটি করে চাক তৈরি করলেও প্রতিবছরই এই চাকের পরিমাণ বাড়তে থাকে। গত ৮বছর ধরে তার ভবন ও ভবনের পাশের গাছে প্রায় অর্ধশতাধিক চাক বসিয়েছে। বর্তমানে ওই বাড়িতে প্রায় ১৪টি মধুর বাসার চাক রয়েছে। প্রাকৃতিকভাবে মৌমাছির চাক বসানোতে তাদের বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। মৌমাছি পরিচর্যা, মধু সংগ্রহ ও সংরক্ষন বিষয়ে জানতে পারলে আরও বেশি পরিমাণে মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হতো।
বর্তমানে পুরো বাড়িটি এখন মৌমাছিদের দখলে রয়েছে। তবে প্রথম দিকে বাড়ির সবাই এই মৌমাছিদের দেখে ভয়ে আতংকে থাকলেও এখন আর কেউ খুব একটা ভয় পায় না। কাউকেই তারা কখনও আক্রমণ করেনি। এ বছর ভবনের ১৪টি চাক বসিয়েছে মৌমাছিরা।
তবে তার মেয়ে শামীমা আফরিন বিথী বলেন, বাড়িটি নির্মানের পর থেকে এই মৌমাছি গুলো এখানে বাসা বাধে। মৌমাছি গুলো আমাদের পরিবারের একটা অংশ। তবে এখান থেকে প্রতিবছর অনেক মধু সংগ্রহ করে থাকি। তবে আত্মীয়-স্বজনের মাঝে মধু বিলি করে থাকি এবং বিক্রি করে যে আয় হয় সেখান থেকে মসজিদে ও মানুষের মাঝে যাকাত হিসেবে দান করা হয়। সখবশত পরিবারের সবাই মিলে বাসার ছাদে সবজি বাগান করেছি। এখান থেকে সবজি চাহিদা মেটাতে আমরা সক্ষম হচ্ছি।
প্রতিবছর এই চাকগুলো থেকে প্রায় প্রচুর পরিমানে মধু সংগ্রহ করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি। দূর থেকে বাড়িটি দেখলে মনে হয় যেন মৌমাছির বাড়ি।
স্থানীয়রা বলেন, আশপাশে অনেক বাড়িঘর এবং গাছ পালা থাকলেও অন্য কোথাও মৌমাছিদের চাক বসায় না। প্রতি বছর একই বাসায় এবং সেই বাসার বিভিন্ন গাছে মৌ মাছিরা বাসা বাঁধে। তবে মৌমাছিরা কখনও কাউকে আক্রমণ করে না।
পাশাপাশি পরিবারের সদস্যগন বাসার ছাদে সবজি ও ফলজ গাছের চারা রোপন করে বাড়তি আয়ের সুযোগ নিচ্ছেন। তবে বাসার ছাদে টমেটো,মরিচ,লাল শাক,বেগুন,ফলজ, ওষুধী গাছ রোপন করে সবজি ও ফলের চাহিদা মেটাচ্ছেন। এতে করে তাদের বাড়তি অন্য কোনো ব্যয় হচ্ছে না। এমন সবজি চাষে স্বাবলম্বী হচ্ছেন তারা।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সন্তোষ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, প্রাকৃতিকভাবে গড়ে উঠা মৌ চাকের মধুর স্বাদ এবং পুষ্টিমান অনেক ভালো। মৌমাছিদের কেউ বিরক্ত না করলে তারা এভাবেই থাকবে এবং এখান থেকে অনেক আয় হবে বাড়ির মালিকের। তবে বাসার ছাদে সবজি চাষ এটা একটা ভালো উদ্যোগ। এখান থেকে ওই পরিবারের সবজি চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে এবং বানিজ্যিক ভাবে লাভবান হবে।