সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
ট্র্যাব সম্মাননা পেলেন অপর্ণা রানী রাজবংশী ফেন্সি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টসের নতুন আউটলেট উদ্বোধন নবীনগরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে অস্ত্রসহ চার ডাকাত আটক সিরাজদিখানে বিক্রমপুর নামকরণে এক মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয় আমিরাতে বোয়ালখালী চরণদ্বীপ পাঠানপাড়া প্রবাসীদের জনকল্যাণমূলক সংগঠনের আত্মপ্রকাশ । ষোলঘরে  জাতীয়তাবাদী যুবদলের কর্মী সভা অনুষ্ঠিত  শ্রীনগরে তন্তরে ওয়ার্ড বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা যাত্রা শুরু করল বাংলাদেশ-চায়না ক্লাব রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

প্রবন্ধ “অপরিকল্পিত পরিবেশে জীবনযুদ্ধ”

লেখক মোঃআতাউর রহমান সরকার : / ১৪৩ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০২৪, ৪:৩১ অপরাহ্ণ

চৈত্র শেষ হয়ে বৈশাখ শুরু হয়ে আগামী কাল অবধি দিন পনেরো পার।

পরিবেশে গ্রীষ্মের উত্তপ্ত গরম। তাপমাত্রা চল্লিশ ডিগ্রির উপরে! নেই বৃষ্টি, নেই মেঘের ছায়া, নেই বাতাসের ছোঁয়া। দীর্ঘ সাত মাস পার হয়ে গেল, বৃষ্টির বালাই নেই। ভুলক্রমে হয়তো দুই এক দিন ছিটা ফোটার সন্ধান মিলেছিল। তাও মাটির ধূলোর গায়েও সাড়া লাগেনি। সেই আশ্বিনে রিমঝিম বৃষ্টির পানি দেখা গিয়েছিল। আজও পর্যন্ত কোন বৃষ্টির বালাই দেখা যায়নি। মাঝে মাঝে উত্তর আকাশে ঘন মেঘের আয়োজন হয়েছে। মাটিতে নামার সুযোগ হয়নি।

সেই চৈত্রে ও বৈশাখের কালবৈশাখী ঝড় কোথায় হারিয়ে গেল তার উত্তর খুঁজে পাওয়া যায় নি এখনো। রসের অভাবে গাছগুলো প্রায় অন্তঃসার হয়ে গেছে।

পূর্বের অভিজ্ঞতায় লক্ষ্য করা গিয়েছে কার্তিককে বৃষ্টির আয়োজন হতো। কখনো আবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিত প্রকৃতিকে ধ্বংস রূপে পরিণত করত। সাম্প্রতিক ২০০৭ সালের ১৫ ই নভেম্বর ঘূর্ণিঝড় সিডর এক মর্মান্তিক ইতিহাসের নাম। যার তাণ্ডবে প্রায় দশ হাজার মানব প্রাণ হারিয়েছিল। পশু পাখি গাছপালা সুন্দরবনের একটা বিশাল অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছিল।

এটা ছিল একটি দীর্ঘস্থায়ী ঘূর্ণিঝড়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল মাঠের ফসল। মোটামুটি খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছিল দেশে।

মাঝে মাঝে আবার অগ্রহায়ণের পনেরো অবধি একটা ছোট বৃষ্টির আয়োজন হয়ে যেত। কখনো তার আকার বৃহৎ ও হত।

পৌষের মাঝামাঝি মাঘের শেষে বৃষ্টি আয়োজন অহরহ হত কিন্তু এবছর ব্যতিক্রম অবস্থা লক্ষ করা গেল। মাঘের শেষে যখন ফাগুন আসলো চারিদিকে কোকিলের কন্ঠ সুর শিমুলের ফুলে কৃষ্ণচূড়ার ডালে বসন্তের আবাস। তখন কোকিলের মতো কবিরাও চারদিকে জাগ্রত হল। তাদের কাব্যধারায় বসন্তরাজ এর কীর্তন লেখার আয়োজন হল। কত কাব্য প্রকাশিত হলো। কিন্তু গগনে মেঘের কোন আভাস পাওয়া গেল না।

চারিদিকে গাছপালায় ধুলোয় আচ্ছাদিত। কৃষকের বোরো ধানে,সবজির মাঠে পানির সংকট। গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পুকুরগুলো তলা ভেসে উঠেছে। ছোটখাটো নদীগুলো শুকনো প্রায়।এখন আর গ্রামের শিশুরা খালে পুকুরে নদীতে সাঁতার কাটতে পারে না। যেসব অঞ্চলে গভীর নলকূপের এখনো সংকট রয়েছে, পানির জীবনের জন্য কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ!

তা শুধু যে অঞ্চলের লোকজন এই সঙ্কট মুহূর্তে অবলোকন করছে। তারাই এর প্রকৃত উত্তর দিতে পারবে।

একদিকে মেঘ-বৃষ্টিহীন অন্যদিকে চলছে করোনার বৃত্তীয় তাণ্ডব। সেই ২০১৯ সালের চীনের উহান থেকে প্রাদুর্ভাব ঘটে সারা বিশ্বব্যাপী তাণ্ডব চালিয়ে এখনো তার কোন সুরাহা হয়নি। একদিকে শীতের সময় একটু নীরবতা পালনের শেষে আবারও সেই বসন্তের ডাকে তান্ডবের লীলা তীব্র আকার ধারণ করেছে।

লাখো লাখো মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে এবং মৃত্যুবরণ করছে।এটা যেন এক মহা শক্তি এই শক্তির কাছে দুনিয়ার সকল শক্তি মাথানত করতে বাধ্য। কাড়ি কাড়ি টাকা! কাড়ি-কাড়ি চিকিৎসা সেবা আজ তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। পৃথিবীর সভ্যতা এক দুরন্ত গতিতে অগ্রসর হচ্ছিল। তারই মাঝে এ যেন এক মহানাশে পরিণত করল। যারা ধর্ম কর্ম মানতো না। সৃষ্টিকর্তাকে স্বীকার করত না। প্রার্থনালয় গুলোর কাছেও ভিড়তো না। তারা যেন আজ প্রভুভক্ত হয়ে গেছে।

আজকাল তাদেরকে প্রার্থনালয় গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য সীমিত যাওয়ার নির্দেশ করলেও, তারা যেন নির্দেশের উল্টো পথে হাঁটছে! মহান সৃষ্টিকর্তার খুঁজে প্রার্থনালয় গুলোতে আগের চেয়ে তুলনামূলক বহু গুণ বেশি ভিড় জমেছে! এটা যেন সৃষ্টিকর্তার এক নির্মম খেলা!

গতবছর লক্ষ্য করেছি শহর থেকে লকডাউন এর তারণায় যখন গ্রামে নিজ নীড়ে ফেরল মানুষজন। পাড়া প্রতিবেশীদের অতি সচেতনতায় অসহায় মানুষগুলো নিজ নিড়েও আশ্রয় নিতে পারেনি। মানুষের চারদিকের হামলায় শেষ পর্যন্ত এম্বুলেন্স যুগে সেই শহরেই ফেরা ছিল তাদের জন্য নিরাপদ।

শহরে লকডাউন এর মাত্রা তীব্র হলে ও সামাজিক বিচ্ছিন্নতার জন্য বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের বসবাসের জন্য কে কার উপর এভাবে গ্রামের মতো কতৃত্ব খাটাবে? এ ঘটনা যেন ইতিহাসে সাক্ষী হয়ে থাকবে।

গতবারের মতো এ বছরও চারদিকে লকডাউন চলছে। বৈশাখের প্রথম দিনেই মাহেরমজানের প্রথম দিন। এদিকে লকডাউন। তিনটি মাত্রা যোগ হওয়াতে বৈশাখের আয়োজন দেখা যায়নি। সেই রমনা বটমূলে নেই কোনো আয়োজন। গ্রাম্য মেলা গুলো আজ স্থগিত। কোথায় হারিয়ে গেল নতুন প্রজন্মের শিশুগুলোর আনন্দ ঢেউয়ের খেলা। তাদের আনন্দটুকু আজ বুঝি কোন অজুহাতেও আর ফিরে এলো না। স্তব্ধ পৃথিবী! চারদিকে হাহাকার!

তারই মাঝে আবার সেই কালবৈশাখী প্রাণ ফিরে এসেছিল কয়েক মিনিট এর জন্য। রাতের আধারে হঠাৎ উত্তরের প্রান্ত হতে শুকনো ঝড়ের উত্তপ্ত বাতাসের তীব্র গতিতে বোরো মৌসুমের ফুল আসা ধানের উপর দিয়ে এক তাণ্ডব বয়ে গেল। ঝড়ের দুই-তিনদিন পর মাঠে লক্ষ্য করা গেল ধানের শীষ গুলোতে কালচে দাগ উঠেছে। কোথাও কোথাও শীষ শুকিয়ে গেছে। আহা! কৃষকের কি মায়াকান্না!

কোন কোন কৃষক মাঠ পরিদর্শন শেষে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা নেই। চারদিকে হাহাকার এমনিতেই বাজারে চালের মূল্য সর্বনিম্ন ৫০ টাকা কেজি। তারই মাঝে যদি মাঠে ফসলহানি ঘটে তো এর চেয়ে ভালো কি উপায় আছে মনকে সান্তনা দেওয়ার? চারিদিকে আর্তনাদ! হাহাকার!

একদিকে মাঠে ধান গুলো শুকিয়ে গেছে। অন্যদিকে চলছে করোনার তাণ্ডব হাসপাতালগুলোতে লাশের মিছিল। কোটি কোটি টাকা বিলাসবহুল স্বাস্থ্যব্যবস্থা এখন হার মানিয়েছে। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ গুলো পথে বসার অপেক্ষায়। গাড়ি চালক,ব্যবসায়ী,শিল্পকারখানার মালিক সহ মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থা করুন।

বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এর শিক্ষকগণ বুকের গভীরে মায়াকান্না লুকিয়ে রেখেছেন। মানবিক সাহায্য করা সেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গুলো অর্থঅভাবে দানদক্ষিণা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী পড়াশোনা থেকে বিমুখ হয়ে গিয়েছে। আর কত অপেক্ষায় থাকবো এ দুর্যোগ কাটিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরবো কি ?……………ইতিহাসের পাতা……২৭ এপ্রিল ২০২১…….
………১৪ বৈশাখ ১৪২৭……
………১৪ রমজান


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!