প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী সেপ্টেম্বর মাসে ভারত সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক জোটের শীর্ষ সম্মেলনে অতিথি হিসেবে অংশ নেওয়ার ফাঁকে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের সেটাই শেষ বৈঠক। স্বাগতিক ভারত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শুধু বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। আগামী ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে জি-২০–এর অষ্টাদশ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা প্রথম আলোকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এ বছর দুই দেশের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের অনেকগুলো বৈঠক হবে। এরই অংশ হিসেবে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে। ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোত্রা পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে অংশ নিতে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দুই দিনের সফরে ঢাকায় আসবেন।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন এই প্রতিবেদককে বলেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। এ বৈঠকে যোগ দিতে বিনয় কোত্রার ঢাকায় আসার কথা রয়েছে।
কর্মকর্তারা জানান, দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকের আগে চলতি সপ্তাহে একটি প্রস্তুতিমূলক আন্তমন্ত্রণালয়ের বৈঠকের কথা রয়েছে। মূলত, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর বাস্তবায়ন–পর্যালোচনা হবে পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের বৈঠকে। এর পাশাপাশি আগামী সেপ্টেম্বরে শেখ হাসিনার ভারত সফরের প্রস্তুতি এবং জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণের বিষয়গুলো নিয়েও আলোচনা হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, ভারতের পররাষ্ট্রসচিব হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বিনয় কোত্রার এটি হবে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। ফলে, দুই দিনের এ সফরের সময় দুই পররাষ্ট্রসচিবের বৈঠকটি দীর্ঘ হতে পারে, যেখানে দুই দেশের সম্পর্কের নানা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনার পাশাপাশি জি-২০ শীর্ষ সম্মেলন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সেপ্টেম্বরে দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীদের আলোচনার সময় বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী পাইপলাইনের বাণিজ্যিক উদ্বোধনের কথা রয়েছে। আসামের নুমালিগড়ের তেল শোধনাগার থেকে পাইপলাইনে বাংলাদেশের পার্বতীপুরে ডিজেল সরবরাহ করা হবে। টঙ্গী-আখাউড়া রেললাইনের ডুয়েল গেজে সংস্কার, রেলের রোলিং স্টকের সরবরাহ এবং তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে রেলের উন্নত সেবা নিশ্চিত করতে অগ্রগতি কতটা হলো, তা পর্যালোচনা করা হবে।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিনয় কোত্রা ঢাকা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগে যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকসহ নানা স্তরের ১৫ থেকে ২০টি বৈঠক আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি সই নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে জেআরসির মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক নিয়ে ভারতের অনীহা রয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের প্রত্যাশা, দীর্ঘ এক যুগ পর মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকটি হবে। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে স্বরাষ্ট্র, নৌপরিবহন, বাণিজ্য, পরিবেশ, সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সম্মেলনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে