জন্মনিবন্ধন করতে মা-বাবার জন্মসনদ বাধ্যতামূলকের নিয়মটি তুলে দিয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন)। এখন থেকে মা-বাবার জন্মসনদ ছাড়াই জন্মনিবন্ধন করা যাবে।
এখন থেকে হাসপাতালে জন্ম নেওয়ার পর দেওয়া ছাড়পত্র বা টিকার কার্ড যেকোনো একটি প্রমাণ দেখিয়ে শিশুর জন্মনিবন্ধন করা যাবে। সোমবার (১৫ আগস্ট) বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মির্জা তারিক হিকমত।
তিনি বলেন, আইন অনুযায়ী সবার জন্মনিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ২০২১ সালে একটি বিষয়যুক্ত করা হয়েছিল যে, যাদের জন্ম ২০০১ সালের পর তাদের বয়স ১৮ না হওয়ায় এনআইডি হয়নি। কাউকে যদি জন্মের পর একটি আইডি দিতে চাই সেক্ষেত্রে বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন অপরিহার্য। স্কুলে এখন ইউনিক আইডির বিষয়টি প্রচারণা হচ্ছে। সেটি অটোমেটিক হয়ে যেতো যদি বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন থাকতো এবং সেটি যদি সন্তানের জন্মনিবন্ধনের সঙ্গে থাকে তাহলে ডিজিটালি সেই সন্তান পরিচিত হয়। এটি ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড। এ পর্যন্ত যারা সঠিকভাবে জন্মনিবন্ধন আবেদন দিয়েছে তাদের প্রায় ৩০ লাখের বেশি ইউনিক আইডি অটোমেটিকালি জেনারেল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের জন্য বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন দেয়ার বিষয়টি আবেদনে বাধ্যতামূলক থাকলেও সেটি আমরা তুলে দিয়েছি। ১৮ বছরের নিচে যারা তাদের টিকা নিতে হলে হয়তো বাবা-মাসহ তিনটি জন্মনিবন্ধন করা লাগতো। সেজন্য এটি তুলে দিয়েছি। পরবর্তী সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে নিবন্ধন কার্যক্রম চলবে।
২০২১ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জন্মনিবন্ধনের নিয়মে পরিবর্তন এনে বলা হয়েছিল, ২০০১ সালের পর জন্ম নেওয়া ব্যক্তিদের জন্মনিবন্ধন করতে হলে তার বাবা-মায়ের জন্মনিবন্ধন সনদ অবশ্যই প্রয়োজন হবে। ওই সময় জন্মনিবন্ধন করতে গিয়ে নানা ভোগান্তি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবকরা। নতুন নিয়ম যেভাবে কার্যকর হচ্ছে সে বিষয়ে রেজিস্ট্রার জেনারেল বলেন, এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা জারি করা হয়নি। সিস্টেম থেকে মা-বাবার জন্মসনদের বাধ্যবাধকতা বাদ দেয়া হয়েছে। সেটা আবেদন করতে গেলেই বোঝা যাবে। এর আগে গত বছর যে নিয়ম কার্যকর হয়েছিল, সেই সময়েও কোনো নির্দেশনা জারি হয়নি।
জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (গ) ধারা অনুসারে, কোনো ব্যক্তি এতিম, প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ, পিতৃ-মাতৃ পরিচয়হীন, পরিচয়হীন, বেদে, ভবঘুরে, পথবাসী বা ঠিকানাহীন বা যৌনকর্মী হলে যেসব তথ্য অসম্পূর্ণ থাকবে, সেসব স্থানে ‘অপ্রাপ্য’ লিখে জন্ম ও মৃত্যুনিবন্ধন করতে হবে। এসব ক্ষেত্রে তথ্যের ঘাটতির কারণ দেখিয়ে নিবন্ধক জন্ম বা মৃত্যুনিবন্ধন প্রত্যাখ্যান করতে পারবেন না।