“সুরক্ষিত শ্রবণ, সুরক্ষিত জীবন” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে “শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প” এর আওতায় “আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস ২০২৩” উদযাপন উপলক্ষ্যে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে কুড়িগ্রামে যথাযথভাবে পালিত হলো আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস ।
বুধবার (২৬ এপ্রিল) জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় দিবসটি উপলক্ষে কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের আয়োজনে সকালে জেলা প্রশাসক চত্বরে শব্দদূষণ বিষয়ে বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে মানববন্ধন, র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত র্যালিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে শুরু করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এসে সমাপ্ত হয়।
র্যালি শেষে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম। তিনি বলেন এই দিবস উদযাপনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শ্রবণ,স্বাস্থ্য এবং মানসম্মত জীবন-যাপনের ওপরে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সকল স্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা। আলোচনা সভা শেষে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। পরে শহরের বিভিন্ন জায়গায় শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন এর মাধ্যমে জনসচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি বাস, ট্রাক, অটোরিক্সা ইত্যাদিতে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা মূলক স্টিকার লাগানো হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সাইদুল আরিফ। অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র কাজিউল ইসলাম, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক), সিভিল সার্জন, কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ, বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা বৃন্দ, পরিবেশ বিষয়ক বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি, মটর শ্রমিক ও মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
আলোচনা সভায় শব্দ দূষনের বিষয়ে ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এতে উঠে আসে শ্রবণ, স্বাস্থ্য এবং মানসম্মত জীবন-যাপনের উপর শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে সকল স্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করার বিষয়গুলো। এতে শব্দ দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরার পাশাপাশি দূষণ থেকে কিভাবে মুক্ত হওয়া যায় ও এর ক্ষতিকর প্রভাব মানবদেহের এবং পরিবেশের জন্য কতটা ক্ষতিকর সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। শব্দ দূষণ কীভাবে বন্ধ করা যায় সে বিষয়েও বিভিন্ন উদ্যেগ নেয়া হয়।
এ বিষয়ে কুড়িগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ রেজাউল করিম বলেন, শুধু অধিদপ্তরের একার পক্ষে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। সচেতন নাগরিক হিসেবে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সকলকে সোচ্চার হতে হবে এবং অন্যদেরকেও শব্দ দূষণ না করতে উদ্বুদ্ধ করতে হবে। এভাবেই আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর সুস্থ ও শব্দ দূষণমুক্ত নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে পারব।