সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
পাঁচবিবিতে আলোচনার শীর্ষে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাজিনারা টুনি সীতাকুণ্ডে লোকালয় থেকে ব্রিটিশ আমলের গ্রেনেড উদ্ধার নতুন সিনেমায় সোহেল মন্ডল-আইশা খান শুক্রবার সারাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘সুস্বাগতম’ দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে ২ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার পাঁচবিবিতে কৃষি মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত খুলনার দাকোপের বাজুয়া চুনকুড়ি দাসপাড়ায় পরকিয়ার জের ধরে গৃহবধুর আত্নহত্যার ঘটনার ভিন্ন মত পোষন করেছে শংকর দাস কচুয়ায় তালা মার্কা ভোট চেয়ে বিরামহীন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক রাকিবুল হাসান পাঁচবিবিতে উপজেলা নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেয়ায় বিএনপির ২ নেতাকে অব্যাহতি দেশে ১১০টি প্রতিবন্ধী সহায়তা সেবা কেন্দ্র রয়েছে: রংপুরে দীপু মনি কালীগঞ্জে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত পূবাইলে গার্মেন্টস শ্রমিককে পিটিয়ে ছিনতাই রায়পুর উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করায় এমপির বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন খুলনার দাকোপের লাউডোব ইউনিয়নের ২০২৪-২৫ উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত পাঁচবিবিতে অনাবৃষ্টি জনিত লিচুর ফলন হ্রাস, বাগান মালিকের মাথায় হাত
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

নওগাঁর ধামইরহাটে কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার পলাশবাড়ি কাচারি অবস্থিত

মোঃ নুর সাইদ ইসলাম,ধামইরহাট(নওগাঁ)প্রতিনিধি: / ৩০৩ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: সোমবার, ৬ মার্চ, ২০২৩, ১১:৪৫ অপরাহ্ণ

নওগাঁর ধামইরহাটে কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার পলাশবাড়ি কাচারি অবস্থিত
মোঃ নুর সাইদ ইসলাম ধামইরহাট(নওগাঁ)প্রতিনিধি:
নওগাঁর ধামইরহাটে কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার পলাশবাড়ি কাচারি অবস্থিত।জেলার ধামইরহাট উপজেলার আড়ানগর ইউনিয়নের পলাশ বাড়ি গ্রামে অবস্থিত কলকাতার পাথুরিয়াঘাটার পলাশবাড়ি কাচারি অবস্থিত।এই পলাশবাড়ির কাচারির ইতিহাসের বর্ননায় প্রভাষক মোঃ আব্দুর রাজজাক রাজুর বলেন,রাজস্ব ঋণ পরিশোধের সুর্যাস্ত আইনে ধামইরহাটের পলাশ বাড়ি অঞ্চলের জমিদারীক্রয় করেন কলকাতার বিখ্যাত জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবারের বড় তরফের পাথুরিয়া ঘাটার দর্পনারায়ণ ঠাকুরের পরিবারের কন্যা অক্ষয় কুমারী দেবী। পলাশ বাড়ি কাচারির অধীনে ধামইরহাটের সাহাপুর মৌজায়j,l-no ১৭৩ খতিয়ান নং ৪২৩ এই খতিয়ানে অক্ষয় কুমারী দেবীর ৭৫,৩৬ একর জমির উল্লেখ পাওয়া যায়।
কলিকাতার ঠাকুর পরিবারের আসল পদবি ছিল কুশারী। তারা ছিলো রাডি ব্রাহ্মণ। আদি নীবাস পূর্ব বঙ্গের যশোহর জেলায়। কুশারী বংশের আদি পুরুষ দীননাথকে মহারাজা ক্ষিতিসুরা পশ্চিম বঙ্গের বর্ধমান জেলার “কুশ” নামে একটি গ্রাম বসবাসের জন্য দান করেন। কুশগ্রামে বাসকারি দীননাথের পুত্রদের কুশারী বলা হয়।
এই পরিবারের যাত্রা শুরু হয় ১৮ শতকে বাংলায় ইউরোপীয় বণিকদের বানিয়া হিসেবে। উনিশ শতকের প্রথম দিকে এই পরিবারের বিস্ময়কর সাফল্য লক্ষণীয়। ব্যবসা, জমিদারী, সাহিত্য, রাজনৈতীক সকল ক্ষেত্রে তারা নিজেদের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস প্রতিষ্ঠা করেন।
অক্ষয় কুমারী দেবীর পরিচয় জানতে চাইলে তিনি জানান, অক্ষয় কুমারী দেবীর স্বামীর নাম অতনন্দন ঠাকুর,১২ নং পাথুরিয়া ঘাটে “আনন্দলয়” কলিকাতায় তিনি প্রজাবৎসল জমিদার ছিলেন। ধামইরহাট, পত্নীতলা, বদলগাছী,ও জয়পুরহাট জেলার বিশাল অংশজুড়ে ছিল তার জমিদারী। কথিত আছে প্রতিবছর তিনি নিজে খাজনা আদায় করার জন্য পলাশবাড়ী কাচারিতে আসতেন এবং নিজে প্রজাদের দুঃখ দুর্দশার কথা শুনতেন। এখানে কয়েকদিন অবস্থান করে আবার ফিরে যেতেন।
তিনি তাদের পরিবারের সম্পর্কে বলেন,গবেষকদের মতে পূর্ববাংলা থেকে ভাগ্যান্নষনে পশ্চিমবাংলায় আগত ৫ ঘর ব্রাহ্মণদের প্রধান ভট্ট নারায়ণের থেকে ঠাকুর পরিবারের যাত্র শুরু হয়েছে। ঠাকুরদের আদি নিবাস ছিল যশোর জেলায় এই পরিবারের জয়রাম ঠাকুর (মৃত ১৭৬২ সন) প্রথমে চন্দননগরে ফরাসিদের ও পরে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বানিয়া হিসেবে যোগদান করেন।নবাব মীর জাফর ১৭৫৭ সালে ২৪ পরগণা লর্ড ক্লাইভ কে জায়গীর হিসেবে এক প্রকার বাধ্য হয়ে দান করেন।এই জাইগীর স্টেটে লর্ড ক্লাইভ জয়রামকে আমিন হিসেবে নিয়োগ করেন। ঠিক এই সময় জয়রাম ঠাকুর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কতৃক প্রতিষ্ঠিত কলিকাতা নগরীর গোবিন্দ পুরে স্হায়ী বসতি স্হাপন করেন। জয়রাম ঠাকুর থেকে ঠাকুর পরিবারের গৌরবান্বিত ইতিহাস শুরু হয়।পরবর্তী
সময় এই পরিবারটির তিনটি শাখা (ক) গোবিন্দ পুর (খ) পাথুরিয়া ঘাটা। ও (গ) জোড়া সাঁকো এই তিনটি স্থানে বসতি স্হাপন করে।এই অক্ষয় কুমারী দেবীর আদি পুরুষ দর্প নারায়ণ ঠাকুর (মৃত্যু ১৭৯১ সন) কলিকাতার পাথুরিয়াঘাটায় প্রথম বসতি স্হাপন করেন। তার বংশদ্বারায় গঠিত হয় ঠাকুর পরিবারের সিনিয়র পাথুিয়াঘাটা শাখা। দর্পনারায়ণ ঠাকুরের অপর ভাই নীলমনি ঠাকুর চট্টগ্রামে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর সেরেস্তাদার ছিলেন। তিনি কলিকাতার মাছুয়া বাজারে বসবাস করতেন। পরবর্তীতে এই জায়গাটি জোড়াসাঁকো নামে পরিচিতি পায়। এই জোড়া সাঁকোর বংশের দ্বারা গঠিত হয় ঠাকুর পরিবারের জুনিয়র শাখা।
(সূত্রঃ প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্র জীবনী ১ম)জমিদারী প্রাপ্তি দিকে ঠাকুর পরিবারের প্রথম প্রসিদ্ধ ব্যক্তি গোপীমোহন ঠাকুর (১৭৬০-১৮১৮) তিনি বাংলার সর্বত্রই ব্যাপক জমি ক্রয় করেন এবং কলিকাতার উচ্চ সমাজে জমিওয়ালা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন।গোপীমোহন ঠাকুরের পুত্র প্রসন্ন কুমার ঠাকুর (১৮০১-১৮৬৮) তাদের জমিদারী ও পারিবারিক ব্যবস্যার পাশাপাশি দেওয়ানী আদালতের একজন আইনজীবি হয়ে ওঠেন এবং উক্ত আয় থেকে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি ক্রয় করেন। এছাড়াও তিনি নিজে একজন জমিদার হিসেবে তৎকালীন জমিদার সমাজকে সংগঠিত করেন।জোড়া সাঁকোর ঠাকুর পরিবারের জুনিয়র শাখা দ্বারকা

নাথ ঠাকুর (১৭৯৪-১৮৪৬) তিনি নিল মুনী ঠাকুরের দ্বিতীয় পুত্র ও রমনী ঠাকুরের পুত্র ছিলেন। দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮১৭-১৯০৫) সুর্যাস্ত আইনের অধীন দুর্বল জমিদার দের খাজনা পরিশোধের ব্যর্থতার সুযোগে বরেন্দ্র অঞ্চলে বহু জমি ক্রয় করেন।
পরিবার ধারাবাহিকতায় তিনি জানান,প্রথম পরিবার = গোবিন্দ পুর।কলিকাতা।পঞ্চাণন ঠাকুর, সুকদেব ঠাকুর, জয়রাম ঠাকুর। দ্বিতীয় পরিবার = পাথুরিয়া ঘাটা, কলিকাতা।দর্পনারায়ণ ঠাকুর, গোপীমোহন ঠাকুর, হারা কুমার ঠাকুর,কৃষ্ণকুমার ঠাকুর,ও প্রসন্ন কুমার। কন্যা= অক্ষয় কুমারী দেবী।তৃতীয় পরিবার =জোড়া সাঁকো, কলিকাতা। নীল মনি ঠাকুর, রাম লোচন ঠাকুর, রামমনি ঠাকুর, রাজবল্লভ ঠাকুর, দ্বারকানাথ ঠাকুর,দেবেন্দ্রনা ঠাকুর দ্বিতীয় প্রজন্ম=সত্যেন্দ্রনাত ঠাকুর,হেমেন্দ্রনাত ঠাকুর। কন্যা=সওদা,মিনি,সুকুমারী,শরৎকুমারী,স্বর্ণকুমারী বর্ণ কুমারী।প্রসঙ্গত ভারতবর্ষের ক্রিকেট বোর্ডের সাবেক অধিনায়ক পতৈদির নবাব মনসুর আলী পতৈদির স্ত্রী বরেণ্য অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুর,বিখ্যাত বিজ্ঞানী স্যার জগদীশচন্দ্র বসুর স্ত্রী সরলা দেবী ও পূর্ববঙ্গের পাবনা জেলার বিখ্যাত কবি প্রমথ চৌধুরীর স্ত্রী ইন্দ্রা দেবী কলকাতার ঠাকুর পরিবারের মেয়ে ছিলেন।
এ ছাড়া ও চারটি কাচারি ছিল বলে উল্লেখ্য করেন, জমিদার দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্ববঙ্গে চারটি কাচারি ছিল। যার দুইটি নওগাঁ জেলায় অবস্থিত। (১)পতিশর-আত্রাই (২) কালী গ্রাম – মান্দায়। আপর দুটি (৩) শিলাইদহ- কুষ্টিয়া ও সিরাজগন্জ কাচারি সিরাজগঞ্জে অবস্থিত। পূর্ববঙ্গের এই কাচারি গুলি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নিজে দেখভাল করতেন।এই রকম অভিজাত ও প্রসিদ্ধ জমিদারপরিবারের কন্যা হয়েও পলাশ বাড়ি কাচারীর জমিদার অক্ষয়কুমারী দেবী ছিলেন ধর্মপ্রান নারী। এই মহিয়ষী নারী শেষ জীবনের অধীকাংশ সময় কাশীধামে বাস করতেন বলে জানান প্রভাষক মোঃ আব্দুর রাজজাক (রাজু)।
মোঃ নুর সাইদ ইসলাম,ধামইরহাট(নওগাঁ)প্রতিনিধি:
প্রতিনিধি:০৬- মার্চ-২৩


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!