মুখের ভাষা কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে ২১শে ফেব্রুয়ারী ছাত্র জনতা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মাতৃভাষাকে রক্ষা করতে সেদিন হাসিমুখে নিজেদের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়েছে রফিক, জব্বার, বরকত, সালাম সহ অনেকেই। সেই ভাষা আন্দোলনের ৬৯ বছর পরও ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলা শতভাগ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
উপজেলার শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, অধিকাংশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও নির্মিত হয়নি ভাষা শহীদের স্মৃতিচিহ্ন শহীদ মিনার। ৫২ এর ভাষা আন্দোলনে যাদের বুকের রক্ত দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছে তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন সরকার পিছপা হচ্ছে সেটাও জানা নাই তাদের। জানা যায়, ছাগলনাইয়া উপজেলার ৭৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে অন্তত ২১টি বিদ্যালয়ে স্থানীয় ও সরকারী উদ্যোগে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হলেও বাকী ৫৭ টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনো শহীদ মিনার নির্মিত হয়নি। ওইসব বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানে না শহীদ মিনার কি। আরও জানা যায়, পুরাতন সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ নিশ্চিত করা হলেও সদ্য জাতীয়করণ ও ‘বিদ্যালয়হীন গ্রামে নতুন বিদ্যালয়’ প্রজেক্টে গড়ে ওঠা অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ হয়নি।
সরেজমিন দেখা গেছে, বেশ কয়েকটি পুরাতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এখনও শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি। এর মধ্যে রয়েছে ছাগলনাইয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, দূর্গাপুর সিংহনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আঁধার মানিক সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, পূর্ব বাঁশপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিচিন্তা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, করৈয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সহ অনেক বিদ্যালয়ে।
এ ব্যাপারে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহ আলম দৈনিক বাংলার অধিকারকে জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণে সরকারি কোনো বরাদ্দ আজও আসেনি। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের সম্পৃক্ত করে কয়েকটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করেছেন। যেসব বিদ্যালয় বাকি আছে সেখানেও স্ব স্ব উদ্যোগ নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে। তিনি আরো জানান, রেজিস্ট্রি বিদ্যালয় থেকে জাতীয়করণ হওয়া অধিকাংশ বিদ্যালয়ের সঙ্গে উচ্চ বিদ্যালয় সম্পৃক্ত থাকায় শহীদ মিনার গড়ে ওঠেনি। এছাড়া অনেক বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের কাজ চলছে। এবিষয়ে ফেনী-১ আসনের সংসদ সদস্য শিরীন আখতার এমপি ও জেলা প্রশাসক’র নিকট আবেদন করা হয়েছে শিক্ষা অফিস থেকে। শিক্ষা অফিসার মোঃ শাহ আলম আরো জানান, আশা করি আগামীতে কয়েক বছরের মধ্যে উপজেলা শতভাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপন করা হবে।