মালয়েশিয়ায় চালু হচ্ছে বিদেশি কর্মীদের জন্য আবাসন সুবিধা। আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এ সুবিধা কার্যকর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান।
সেপ্টেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় আবাসন সুবিধা পাচ্ছেন বিদেশিকর্মীরা
আর কর্মীদের এ সুবিধা দিতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির মালিকদের জরিমানা গুনতে হবে ৫০ হাজার রিঙ্গিত। শ্রমিকদের আবাসন বা থাকার ব্যবস্থা ন্যূনতম কেমন হতে হবে- তা নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ২৭ আগস্ট নতুন প্রবিধানে আগের নিয়মের সঙ্গে ফ্যান এবং লাইট সরবরাহ বাধ্যতামূলক করে দেয়া হয়েছে।
সারাভানান সাংবাদিকদের বলেন, শ্রমিকদের বিছানা বা থাকার জায়গা সর্বনিম্ন ১.৭ বর্গমিটার হতে হবে যদি সেটা ডাবল ডেকের বেড হয়। সেক্ষেত্রে দুটি বেডের মধ্যকার দূরত্ব ০.৭ বর্গমিটার হতে হবে। তবে এরকম না হলেই সরকার থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
একটি বেড বা বিছানা দিতে হবে যা কমপক্ষে ৪ ইঞ্চি মোটা, একটি বালিশ এবং কম্বল অবশ্যই বাধ্যতামূলক দিতে হবে।
শ্রমিকদের মূল্যবান জিনিসপত্র নিরাপদে রাখার জন্য একটি লক করা আলমারি দিতে হবে। এটি এমন হবে যা যেকোনো সময় কর্মচারী যেন সহজেই তা ব্যবহার করতে পারে।
সরকার শ্রমিকদের আবাসন সুবিধা প্রদান করার জন্য কোম্পানি মালিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। নিয়োগকর্তা বা দায়িত্বরত আবাসন সরবরাহকারীরা নিরাপদ পানি এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে কি না- তা নিশ্চিত করতে হবে।
একই বিধানে প্রতিটি কর্মীর বেডরুমের জন্য ন্যূনতম ৩.৬ বর্গমিটারের জায়গা সুনির্দিষ্টভাবে প্রদান করতে হবে। যদি সেটা শ্রমিক ডরমিটরি না হয়। আর যদি শ্রমিক ডরমিটরি হয় তবে সেক্ষেত্রে প্রতিটি কর্মীর জন্য ন্যূনতম ৩ বর্গমিটার আয়তনের জায়গা প্রদান করতে হবে।
বিধিমালা অনুযায়ী অবশ্যই নিয়োগকর্তা বা কোম্পানি মালিকদের অথবা দায়িত্বরত আবাসন সরবরাহকারীদের প্রদান করতে হবে সেটা ডরমিটরি হোক বা যেকোনো আবাসিক ভবন হোক। রান্নাঘরের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা এবং চেয়ার টেবিলসহ খাবারের জন্য ডাইনিং এরিয়া প্রদান করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো- যদি ডরমিটরি বা হোস্টেল না হয় তবে ছয়জন কর্মীর জন্য একটি টয়লেট এবং গোসলখানার ব্যবস্থা করতে হবে। তবে ডরমিটরি বা হোস্টেল না হলে সেক্ষেত্রে ১৫ জন কর্মীর জন্য একটি টয়লেট এবং গোসলখানা প্রদান করতে হবে।
এ দিকে মালয়েশিয়ার ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস এমটিইউসি বলছে, নিয়োগকর্তারা এখনও বিদেশি কর্মীদের আবাসনে উন্নতি করতে পারেনি। সরকারের পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে।
এমটিইউসির সেক্রেটারি জে সলমন বলেছিলেন, অভিবাসী শ্রমিকরা তাদের ওয়ার্কসেট, ভাড়া অ্যাপার্টমেন্ট এবং টেরেস হাউজে অসুবিধাগ্রস্ত ও অসম্পূর্ণ পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছেন। সব খাতের শ্রমিকদের আবাসন ও সুযোগসুবিধার আওতাভুক্ত আইনটি গত বছরের জুলাইয়ে পাস হয়েছিল। নিয়োগকারীদের মেনে চলার জন্য পর্যাপ্ত সময়ও দেয়া হয়েছে।
এছাড়া স্বাস্থ্য মহাপরিচালক তানশ্রী ডা. নূর হিশাম আবদুল্লাহ বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন, অভিবাসী শ্রমিকের সঙ্কটবদ্ধ এবং ভিড়যুক্ত জীবনযাত্রার পরিস্থিতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ হওয়ার একটি প্রধান কারণ।
সতর্কতা সত্ত্বেও, নিয়োগকর্তারা তিন কক্ষের অ্যাপার্টমেন্ট এক বা দুটি ওয়াশরুমের সঙ্গে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিককে থাকতে বাধ্য করেন