মো: আতাউর রহমান সরকার (মতলব উত্তর প্রতিনিধি)
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার গজরা ইউনিয়নের অন্তর্গত গজরা মুন্সি বাড়ির কৃতি সন্তান অধ্যাপক আলী রিয়াজ সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান।
আলী রীয়াজ একজন বাংলাদেশী-মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও লেখক। তিনি ২০০২ সালে ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। তিনি বর্তমানে ইলিনয় স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের বিশিষ্ট অধ্যাপক (ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর)। তিনি আটলান্টিক কাউন্সিলের অনাবাসিক সিনিয়র ফেলো এবং আমেরিকান ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের সভাপতি। তার বেশিরভাগ গবেষণা ও প্রকাশনা ধর্ম এবং রাজনীতি বিষয় নিয়ে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি এবং ইসলামী রাজনীতি সম্পর্কিত। তিনি বাংলাদেশী রাজনীতি এবং দক্ষিণ এশিয়ার মাদ্রাসাগুলি নিয়ে অনেক লেখালেখি করেছেন। তিনি ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মিড-ওয়েস্টার্ণ কনফারেন্স অন এশিয়ান এফেয়ার্সের ষান্মাসিক জার্নাল স্টাডিজ অন এশিয়ার সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০১৩ সালের ওয়াশিংটন ডিসিতে উড্রো উইলসন ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর স্কলার্স-এ জননীতি বিশেষজ্ঞ ছিলেন।
মূলত পিতা উচ্চপদস্ত সরকারী কর্মকর্তা বিদায় শহরে বসবাসের কারণে রীয়াজ ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার মাতার নাম বিলকিস আরা এবং পিতার নাম মোহাব্বত আলী মুন্সি যিনি বাংলাদেশের উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মচারী ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ১৯৮১ সালে স্নাতক ও ১৯৮৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ১৯৮৭ সালে হাওয়াইয়ের হুনলুলুতে ইস্ট ওয়েস্ট সেন্টারের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী হিসাবে ফেলোশিপ লাভ করেন। এরপর তিনি হাওয়াই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যোগাযোগ (১৯৮৯) এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানে (১৯৯১) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশের বেসামরিক -সামরিক সম্পর্কের বিষয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডক্টর অব ফিলোসফি ডিগ্রী অর্জন করেন। এই গবেষণা কর্মে ১৯৭২-১৯৮১ সালের প্রথম দশকে বাংলাদেশের সামরিক শাসনের কারণ ও উপাদানগুলোর কাঠামোগতভাবে ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা আছে।
কর্মজীবনে তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন যেখানে তিনি ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ডক্টরাল ডিগ্রি শেষ করার পর তিনি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতায় ফিরে আসেন। ১৯৯৪ সালে তিনি সিঙ্গাপুরে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ইনস্টিটিউট অফ সাউথইস্ট এশিয়ান স্টাডিজ (আইএসইএএস) এর দক্ষিণ-দক্ষিণ এশিয়া ফেলোশিপ পান যেখানে তিনি সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক বিকাশে টেলিযোগাযোগের ভূমিকা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন। ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে তিনি লন্ডনে বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে সিনিয়র ব্রডকাস্ট সাংবাদিক ছিলেন। পরে তিনি ইংল্যান্ডের লিংকন বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার দক্ষিণ ক্যারোলিনার ক্ল্যাফলিন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ২০০২ সালে ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটিতে রাজনীতি ও সরকার বিভাগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালে তিনি অধ্যাপক হয়েছিলেন এবং ২০১২ সালে তিনি ইউনিভার্সিটি প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হন।