চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় ট্রাক চাপায় প্রাইভেট কার আরোহী ৫ বন্ধু নিহতের ঘটনায় ঘাতক ট্রাকের চালককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৭।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর ডবলমুরিং থানার রশিদ বিল্ডিং এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
ঘাতক চালক মো. রিপন (৩১) ভোলা জেলার লালমোহন থানার মহেশখালী গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে। ২০০৪ সালে চট্টগ্রাম এসে নিমতলা বিশ্বরোডে বসবাস শুরু করেন তিনি।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক নুরুল আবছার (মিডিয়া) মহানগর নিউজকে বলেন, রিপন গাড়ি চালাতে শারীরিকভাবে অক্ষম। তবুও সে প্রচলিত আইন অমান্য করে ভারি গাড়ি চালিয়ে আসছিল। প্রথমে সে গাড়ির হেলপার হিসেবে জীবিকা নির্বাহ শুরু করে। ২০০৪ সাল হতে ২০১৫ সাল পর্যন্ত সে গাড়ির হেলপার ছিল। ২০০৬ সালে হেলপার থাকা অবস্থায় গাড়ি চালাতে গিয়ে সে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটায়। এতে তার ডান পা পঙ্গু হয়ে যায় এবং পায়ের শক্তি হারিয়ে ফেলে। এই পঙ্গু পা নিয়ে সে ২০১৫ সালে হালকা লাইসেন্সের জন্য বিআরটিএ আবেদন করে। বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ এই অবস্থায় তাকে লাইসেন্সও দেয়। ভারি গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করলেও তার ডান পায়ের শক্তি হারানোর কারণে তাকে ভারী লাইসেন্স দেওয়া হয় নি। তবুও সে নিয়মিত ভারি যানবাহন চালিয়েছে আসছিল। ফলে অত্যন্ত করুণ ও নির্মমভাবে চলে গেল পাঁচ যুবকের প্রাণ। যাদের বয়স এখনও ত্রিশের কোটায়।
নুরুল আবছার আরও বলেন, ঘটনার দিন ওই ডাম্পার ট্রাকের মূল চালক ছিল ড্রাইভার মো. নুরনবী। নুরনবী গাড়িটি নিয়ে কক্সবাজার জেলার পেকুয়া মেরিন ড্রাইভ ও ফোর লেইনের চলমান সড়ক নির্মাণ কাজের জন্য পাথরবোঝাই করে নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নূরনবী টানা ১০দিন নির্ঘুম থেকে গাড়ি চালানোর কারণে ক্লান্ত ছিলেন। পরে গাড়িটি বদলি চালক হিসেবে রিপনকে দায়িত্ব দেন গাড়ির মালিক নিজেই। রিপন গাড়ি আনলোড করে শহরে আসার পথে লোহাগাড়া থানার আধুনগর বাজারে পৌঁছালে বেপরোয়া গতিতে নির্ধারিত লেইনের বাইরে এসে প্রাইভেটকারটির উপরে উঠে যায়। প্রথম ধাক্কায় প্রাইভেটকারটি থেমে গেলেও ট্রাক ড্রাইভার রিপনের ডান পায়ের পঙ্গুত্ব ও শক্তি কম থাকায় সে ব্রেক করতে পারেনি এবং প্রাইভেটকারের উপর ট্রাকটি সম্পূর্ণ উঠে যায়।
মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনায় সোমবার (২১ মার্চ) সকালে রশিদ হীরণ (২৬), খোরশেদ আলী সাদ্দাম (৩১), রিজভী শাকিব (২৬), মনছুর আলী (২৩) ও মুহাম্মদ হুমায়ুন (২৫) সহ গাড়ির ৫ যাত্রী