মোহনপুরে হাজার হাজার বিঘা ফসলি জমি, খাল, বিল, নালাসহ পানি নিস্কাসনের প্রধান স্থানগুলো দখল করেই চলছে বাণিজ্যিক পুকুর খননের মহোৎসব। স্থানীয়দের অভিযোগ নীরব দর্শকের ভুমিকায় কৃষিবিভাগ ও বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্প বিএমডিএসহ স্থানীয় প্রশাসন। বর্ষামৌসুমে উঁচু জমির ফসলহানির পাশাপাশি জলাবদ্ধতা ঝুঁকিতে কয়েক শতাধিক বাড়িঘর। তবে অনেক পুকুর খননকারিদের দাবী আগ্রহী কৃষকদের অনুরোধে সাংবাদিকসহ প্রশাসন ম্যানেজ করেই পুকুর খনন করা হচ্ছে। তবে অতিরিক্ত পরিমাণ পুকুর খনন বন্ধ করতে
১০ মার্চ ২০১৯ ইং উচ্চ আদালতের ২৪৭৬ নং রিট পিটিশনের আলোকে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারী করেছেন অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের।
দ্রুত ব্যবস্থাগ্রহণের জন্য উর্ধতোন কর্তৃপক্ষের নজরদারী র দাবি এলাকাবাসির।
সরোজমিন অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর প্রধান কৃষি অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত মোহনপুর উপজেলা। উপজেলা কৃষি বিভাগের হিসেব মতে ছোট আয়তনের এ উপজেলায় মোট আবাদী ভুমির পরিমাণ প্রায় সাড়ে ১২হাজার হেক্টর। তিন বছরের ব্যবধানে ফসলি জমি কমে এর পরিমাণ দাড়িছে প্রায় ১১ হাজার ৩২০ হেক্টর জমি। চলতি মৌসুমের পুকুর খনন শেষ হলে আরো কমে আসবে প্রায় সাড়ে ৭শ হেক্টর জমি। প্রতি বছর পুকুর খননের পরিমাণ বেড়ে দ্বিগুণ হচ্ছে। এভাবে পুকুর খনন চলতে থাকলে আগামি পাঁচ বছেরের মধ্যে আবাদী জমি ফুরিয়ে আসবে বলেও মন্তব্য করেন অনেকেই। সম্প্রতি চলছে বিশাল আয়োতনের প্রায় ৭টি পুকুর। পুকুর খননের ভয়াবহতার কবলে মোহনপুর ও সই পাড়া উল্লেখযোগ্য এসব পুকুর খননকারিরা হলেন। মোঃ মমিন, পিতাঃ মোঃ করিম,সাং: ধামিনপাকুড়িয়া,থানা: মোহনপুর,জেলা রাজশাহী,মমিন ধামিনপাকুড়িয়ার দূর্গাপুর বিলে,আনুমানিক ১১০ বিঘার পুকুর খনন করছে যাহার জেল নং,১৬১ মোজা: দূর্গাপুর,,অপর জন মোঃ মাহাবুব পিতাঃ মৃত মুসলেম সরকার সাং:পাইকপাড়া, থানা মোহনপুর জেলা রাজশাহী পুকুর খনন করছে আনুমানিক ৯০ বিঘা
চলতি বছরেই প্রায় অনেক পুকুর খননের কাজ শেষ হয়েছে। দিনরাত চলছে প্রায় অর্ধশতাধিক (এক্সিবেটর) মাটি কাটা যন্ত্র। এসব যন্ত্রের ঠিকারী, শাহ আলম, ব্যবসায়ি।উল্লেখ্য, প্রধান মন্ত্রীর পানি প্রবাহের সকল পথ উন্মুক্ত রাখার ঘোষনা উপেক্ষা করেই খাল, বিলসহ সবধরনের ফসলের জমি দখল করে একাধারে পুকুর খননের
কারণে চরম জলাবদ্ধতায় দিন দিন দ্বিগুণ হারে বাড়ছে ফসলহানির পরিমাণ।
বিখ্যাত মিষ্টি পানের ব্যপক চাষ হয়ে থাকে মোহনপুরে। এছাড়াও ধান, আলু, ভুট্টাসহ সকলপ্রকার সবজি চাষের প্রসংশার দাবীদার এ উপজেলাটি। এমন কি বরেন্দ্র বহুমুখী প্রকল্পের (বিএমডিএ) আওতাধিন গভীর নলকূপের মাটির নিচের পাইপ ড্রেন ও আউট লিটার রাতের আঁধারে তুলে ফেলে সেখানেও পুকুর খনন করা হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় নি।
উপজেলা মৎসবিভাগসহ এধাধিক তথ্যসূত্রের আলোকে জানা গেছে, ২০১৭ সালে মোহনপুর উপজেলায় সরকারি ও বেসরকারি বানিজ্যিক পুকুরের সংখ্যা ছিল প্রায় ৩হাজার ৬শ ১৮টি পুকুর। যার আয়োতন প্রায় ৫৬৭ হেক্টর। এ তিন বছরে পুকুরের সংখ্যা বাড়ে প্রায় চার গুন মোহনপুর উপজেলা গন্যমান্য ব্যাক্তিরাবর্গরা বলেন, মোহনপুর উপজেলা একটি ছোট উপজেলা। ফসলি জমি নস্ট করে সরকারী নীতিমালা উপেক্ষা করে একের পর এক পুকুর খনন চলতে থাকলে খাদ্য সংকটসহ চরম জলাবদ্ধতায় ও পানিবন্দী হয়ে পড়বেন উপজেলার মানুষ। এটি ভবিষ্যৎ অন্ধকারের হাতছানি। এজন্য জনসাধারণকে সচেতনতার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় সব ধরণের ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের নজরদারি কামনা করেন
উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামের সচেতন ব্যাক্তি কামরুজ্জামান (রানা) ও নাদিম হোসেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহনপুর রাজশাহী ও ভূমি ও ইউওনো বরাবর অভিযোগ দিয়েছে,রানা ও নাদিম সাংবাদিক দের কে বলেন
বিলে তিন ফসলি জমিতে পুকুর করে বিলের আবাদী জমি প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন খাল-ডাড়া দখল করে পুকুর খননের কারণে উপরের জমিতে খরা মৌসুমে পানি জমে থাকার জন্য কোনো ফসল হচ্ছে না।
এভাবে তিন বছর ধরে আমাদের চাষ করা হাজার হাজার বিঘা জমির আউস ধান ডুবে বিনস্ট হচ্ছে। সরকারী লোকেরা ব্যবস্থা না নিলে,আমরা যাবো কথাই এখন আমাদের বাড়িঘর সহ জমিজামা পানিবন্দী হয়ে পড়বে।
অনুসন্ধাবে দেখা যাই, প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণ পুকুর খনন করা হয়েছে। ফলে এখন কৃষি ভুমির পরিমাণ দিন দিন কমেই আসছে। হুমকির মুখে পড়ছে এখানকার প্রধান ফসল পান ও ধান।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন অবৈধ পুকুর খনন বন্ধের জন্য উচ্চআদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অতিরিক্ত পরিমাণ পুকুর খননের জন্য নানা জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এজন্য পুকুর খননের খবর পেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধের নির্দেশ দেয়া হলেও রাতের আঁধারে পুকুর কেটে শেষ করে।
উপজেলা জুড়ে পুকুর খননের হিড়িক পড়েছে। চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে আমাদের কৃষি ভুমি। কৃষি ও কৃষক বাচাতে আমাদের সচেতন হতে হবে। অবৈধ পুকুর খনন বন্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নজরদারি কামনা করছি। টি এনও সাহেব কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে বলেন বিষয় টা আমার জানা নাই, নতুন কোনো পুকুর খননের অভিযোগ পেলে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে