নওগাঁ বাড়ছে রোগী, শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতে চলছে চিকিৎসা ব্যবস্থা দেখার কেউ নেই নেই কোন প্রতিকার নওগাঁ সদরে গত কয়েকদিন ধরে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। প্রতিদিন হাসপাতালে বাড়ছে নতুন নতুন রোগীর সংখ্যা। এদের মধ্যে শিশু ও বয়স্করাই বেশি।নওগাঁ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ধারণক্ষমতার চার পাঁচ গুণেরও বেশি রোগী ভর্তি আছেন। শয্যা খালি না থাকায় অনেক রোগী মেঝেতেই সেবা নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নওগাঁ জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড মিলে মোট ৯১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্য শিশু ওয়ার্ডে ২৪ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ২৬ জন এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৪০ জন। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে আরও ৮ জন ডেঙ্গু ও ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন।হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি সদর উপজলার মুরাদ হোসেনের (৪০) মা মমেনা বলেন, “আমার ছেলে বিশেষ কাজে ঢাকায় যায়। সেখানে বেশকিছু দিন থাকার পর নওগাঁয় ফিরে আসার পর থেকে গায়ে জ্বর, গাঁ কাঁপনি ও বমি-বমি ভাব শুরু হয়। পরে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে হাসপাতালে নিয়ে আসি। গত কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। তবে আগের চেয়ে এখন একটু সুস্থ।”
মহিলা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন সদর উপজলা মোকরামপুর এলাকার বাসিন্দা সাবিনা ইয়াসমিন (৩৫)। সাবিনার স্বামী মোশাররফ হোসেন বলেন, “হঠাৎ করে রোববার (৩০ জুলাই) সকাল থেকে আমার স্ত্রীর পাতলা পায়খানা। দুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে। শয্যা না পেয়ে স্ত্রীকে নিয়ে মেঝেতে আছি।”
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৭ বছরের ছেলে আফরিনের পাশে বসে আছেন বাবা আয়নাল হোসেন। তিনি বলেন, “রোববার সন্ধ্যার পর থেকে আমার ছেলের পেটে সমস্যা হয়। বমি ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। তারপর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করাই। হাসপাতালে এত রোগী যার কারণে কোনো শয্যা না পাওয়ায় মেঝেতেই চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।”
হাসপাতালের দায়িত্বরত নার্স ইনচার্জ ফরহানা আক্তার বলেন, “গত দুই-তিন দিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। রোগীদের সামলাতে গিয়ে নিজেদের অবস্থা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে যেসব শিশু ভর্তি হয়েছে তাদের বেশির ভাগই খাবারের সমস্যার কারণে অসুস্থ হয়েছে বলে স্বজনরা জানিয়েছেন।“তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে শিশু, মহিলা ও পুরুষ ওয়ার্ড মিলে মোট ৯১ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু ওয়ার্ডে ২৪ জন, মহিলা ওয়ার্ডে ২১ জন এবং পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি আছেন ৫৬ জন।জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. আশিষ কুমার সরকার বলেন, “নওগাঁয় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। ডায়রিয়া হলে প্যাকেট স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার যেমন ডাবের পানি, চিড়ার পানি ও ডালের পানি, ভাতের মাড়, চালের গুঁড়ার জাউসহ এ ধরণের পাতলা খাবার খাওয়ানোর পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুকে মায়ের দুধসহ অন্যান্য খাবার বারবার খেতে দিতে হবে। ডায়রিয়ার মাত্রা বেশি হলে রোগীকে অবশ্যই হাসপাতাল নিতে হবে।