নওগাঁর মহাদেবপুরে বহুল আলোচিত প্রকাশ্য দিবালোকে নিজেদের আইনের লোক পরিচয় দিয়ে বাড়িঘরে হামলা, মারপিট করে লুটপাটের তিন দিন পর অবশেষে থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করেছে। মামলা রেকর্ডের আগে এজাহারভূক্ত আসামিরা থানা প্রাঙ্গনে বাদির লোকজনদের বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) মামলাটি রেকর্ড করে নওগাঁ কোর্টে পাঠানো হয়। অভিযুক্তরা বলছেন, মেয়ের মোহরানা ও খোরপোশের টাকার জন্য তারা ওই বাড়ি থেকে মালামাল নিয়ে গেছেন। উপজেলার চেরাগপুর ইউনিয়নের উত্তর ঈশ্বরপুর গ্রামের মৃত সামছুর রহমানের ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন যে, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার পাইকরা বালিকাপাড়া গ্রামের আফতাব উদ্দিনের নেতৃত্বে আফজাল আলী ওরফে হোসেন, মহাদেবপুর উপজেলা সদরের দুলালপাড়া গ্রামের ডিএম আসাদুজ্জামান রতন, গার্লস স্কুলপাড়া এলাকার নওশাদ আলী বেপারী, হোসেনপুর গ্রামের খোকন আলীসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জন গত সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে মোস্তাফিজুরের বাড়িঘরে হামলা চালায়। তারা মোস্তাফিজুর ও তার মা সামছুন্নাহারকে মারপিট করে আটকে রেখে বাক্স ভেঙ্গে স্বর্নালংকার, নগদ টাকা, এলইডি টিভি ও একটি বিদেশী গাভী লুট করে নিয়ে যায়। বাধা দিলে রতন ও নওশাদ নিজেদের আইনের লোক পরিচয় দিয়ে তাদের নানান হুমকি দেয়। মোস্তাফিজুর এব্যাপারে পরদিন মহাদেবপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করলে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও ওই দিন মামলাটি রেকর্ড হয়নি। এদিন সন্ধ্যায় আসামিরা মহাদেবপুর থানায় বাদির লোকজনদের হুমকি দেন।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত আফজাল হোসেন জানান, তার মেয়ে সুলতানার সাথে মামলার বাদি মোস্তাফিজুরের ছোট ভাই সোহাগ হোসেনের বিয়ে হয়। ৫ মাস সে বাপের বাড়ি আছে, তার কোন খোরপোশ দেয়নি। খোরপোশ ও মোহরানার টাকার জন্য তার মেয়েসহ ওই বাড়িতে গিয়ে তারা তাদের দেয়া উপহারের মালামাল নিয়ে এসেছেন।
মোস্তাফিজুর জানান, তার ভাই গতমাসে সৌদি আরব গেছে। লুট হওয়া টাকা তিনি নিজে ব্যাংক থেকে তুলে এনে রেখেছেন, এলইডি টিভি ও স্বর্ণালংকার তিনি নিজে এবং গাভী তার ভাই সোহাগ কিনেছে। তবে এর কোন কিছুই সন্ত্রাসী কায়দায় লুট করা যায়না বলে অভিযোগ করেন।
মহাদেবপুর থানার ওসির দায়িত্বে থাকা ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ জানান, এই ঘটনায় সুলতানা বাদি হয়ে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে মারপিট করে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে অপর একটি মামলা দায়ের করেছেন। উভয় মামলাই থানার এসআই শাহ আলম তদন্ত করছেন। আসামীদের গ্রেফতারের তৎপরতা চলছে কিনা জানতে এসআই শাহ আলমের মোবাইলফোনে বার বার কল দেয়া হলেও তিনি কল কেটে দেন।