নওগাঁর মহাদেবপুরে মারুফ হাসান (১৪) নামে এক স্কুল ছাত্রকে ইভটিজিংয়ের অপবাদ দিয়ে লাঠি দিয়ে পিটালেন ঐ স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।
প্রধান শিক্ষক বলছেন বিষয়টি তিনি জানেন না।
মারপিটের শিকার ছাত্র হলেন, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে এবং জয়পুর ডাঙ্গাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এর দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছাত্র।
মারপিটে অসুস্থ হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি ছাত্র মারুফ বৃহস্পতিবার ১ জুন বিকালে সাংবাদিকদের জানায়, বুধবার সকালে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবু হাসান আমাকে বাড়ি থেকে স্কুলে ডেকে নেয়। সেখানে পৌছামাত্র সভাপতি তার হাতে থাকা বাঁশের লাঠি দিয়ে আমাকে বেদম পিটিয়ে মারাত্মক আহত করেন।
মারপিটে দুই হাতে, পিঠে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ পড়ে যায়। তার চিৎকারে তার বাবা জানতে পেরে স্কুলে ছুটে গিয়ে এর প্রতিবাদ জানালে সভাপতি স্টিলের রড বের করে তার বাবাকেও পিটানোর হুমকি দেন বলেও জানানো হয়। এসময় আহত ছাত্র মারুফ আরো বলেন, তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ইভটিজিংয়ের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসময় হাসপাতালে উপস্থিত থাকা স্কুল ছাত্র মারুফ এর বাবা জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের জানান, কোন মেয়েকে তার ছেলে ইভটিজিং করেছে তা জানতে চাইলেও সভাপতি তা এখনো বলতে পারেননি, কিংবা ওই মেয়েকে হাজির করাতে পারেননি। ঘটনার পর এলাকার লোকজন ও অভিভাবকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। কিন্তু সভাপতির লোকেরা তাদের হুমকি ধামকি দিতে থাকেন। এমনকি তারা আহত মারুফকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আনতেও বাধা দেয়। রাতে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে পরদিন সকালে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এনে ভর্তি করানো হয়।
মোবাইল ফোনে মারপিট করার বিষয়ে জানতে চাইলে সভাপতি আবু হাসান স্কুল ছাত্রকে লাঠি দিয়ে পিটানোর কথা স্বীকার করে দম্ভের সাথে বলেন, অপরাধির বিচার তিনি নিজের হাতেই করেছেন। কোন মেয়েকে ইভটিজিং করেছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, স্কুলের সব মেয়েকেই সে ইভটিজিং করেছে। তার মধ্যে তার ভাতিজিও রয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে তিনি কেন নিজেই আইন হাতে তুলে নিলেন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে, তিনি যা করেছেন ঠিকই করেছেন বলেও জানান।
ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম জানান, ঘটনার দিন তিনি স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না জন্য বিষয়টি জানেন না। তবে বিষয়টি মিমাংশার উদ্যোগ নিয়েও তা ব্যর্থ হয়েছে বলেও জানান।
মহাদেবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাফ্ফর হোসেন জানান, এব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।