নওগাঁ জেলাসহ ১১ টি উপজেলায় ভরা বোর-ইরি মৌসুমেও মিলছে না ধানের কাঙ্ক্ষিত ধানের দাম।
বোরো ধানের ভরা মৌসুমে বিভিন্ন হাটে কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে হতাশ নওগাঁর তৃনমুল কৃষকরা । কৃষক বলছেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে প্রতিমনে ১২০-১৫০ টাকা। দাম কমার পেছনে ধান ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটকে দায়ী করছেন সাধারণ চাষিরা, জানান প্রতিবছরে তৃনমুল পর্যায়ের কৃষক ১-২ বিঘা জমির বর্গা-আদি নিয়ে ধান আবাদ করে ধানের দাম নাথায় মরার উপর খারারঘা চকগৌরীহাট সুতিহাট মহাদেবপুর মাতাজীহাট এবং চৌবাড়িয়াহাটে দেখা যায়, এ হাটে ধানের বেচাকেনা ও আমদানি জমজমাট।
চাষিরা মাঠ থেকে তোলা ধান- দোকানের হালখাতা দেনা পাওনা পরিষদ দেওয়ার জন্য বিক্রির জন্য হাটে আনছেন। কয়েক দিনের তুলনায় ধানের সরবরাহ বেড়েছে। আর এতেই হঠাৎ ধানের দর মণপ্রতি ১২০-১৫০ টাকা পর্যন্ত কমেছে।
হাটে সরু জাতের ধান সর্বোচ্চ ১ হাজার ২০০-১২২০ টাকা আর সুগন্ধি জাতের ধান ১ হাজার ৩০০-১৩২০ টাকা মণ দরে কিনছেন মিলাররা। এর মধ্যে জিরা শাল বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১৭০-১১৮০ টাকায়, কাটারি ১ হাজার ২০০-১২০০ টাকায়, সুবলতা ১ হাজার ১৩০-১১৫০ টাকায়, ব্রিধান ১ হাজার ৯০, ১ হাজার ২৫০ টাকায়, হাইব্রিড ৯০০-৯৩০ টাকায় এবং পারিজা ১ হাজার ২০০ টাকায়।
কৃষকরা জানান, চলতি বছরের বোরো মৌসুমে সেচযন্ত্রের জ্বালানি ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম রেকর্ড পর্যায়ে থাকায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। এ ছাড়া খরার কারণে সেচও লেগেছে অনেক বেশি। একই সঙ্গে বেড়েছে সার, কীটনাশক ও শ্রমিকের মজুরি। তবে ব্যয় অনুযায়ী বাজারে ধানের কাঙ্ক্ষিত দাম মিলছে না।
কৃষকরা বলেন, “আমাদের উৎপাদন করতে যা খরচ হয়েছে, তার অর্ধেক দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি। যদি দুই হাজার টাকা হতো তাহলে আমাদের কিছুটা লাভ হতো।”
কৃষি উপকরণের দাম বেশি, তাই এ দরে ধান বিক্রি করে লাভ হচ্ছে না উল্লেখ করে আরেকজন কৃষক বলেন, “গত হাটেই প্রতি মণ ধান বিক্রি করেছি ১ হাজার ৪০০ টাকায়, যেখানে এ হাটে ১ হাজার ৩০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়েছে। সপ্তাহ ব্যবধানে ধানের মণ ১০০-১৫০ টাকা কমে গেছে। আমাদের উৎপাদন খরচ উঠছে না।হাটে ধানের জোগান দেখে দর কমিয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে বড় মিলাররা ধান কেনা কমিয়ে দেওয়ায় ধানের দরে প্রভাব পড়েছে।ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে ধান কেনাবেচায় প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে নওগাঁর নিয়ামতপুরের জিয়া ট্রেডার্সের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, “চালের বেচাবিক্রি তেমন ভালো নয়। তাই একটু—- কমেই কেনা হচ্ছে।”
ধান ব্যবসায়ী আতাউর রহমান বলেন, “ধানের দাম অনেক কম। এতে অনেক কৃষকই বলছেন, তারা আর ধান আবাদ করবেন না। আমরা ধান কিনে মিলে বিক্রি বিক্রি করি। মিলাররা ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছে, তাই আমরা সে অনুযায়ী ধান কিনছি।”
জেলায় ৫টি করপোরেট প্রতিষ্ঠান, ৫৪ অটো ও সাড়ে ৭০০ হাসকিং মিল রয়েছে। চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে, যা থেকে প্রায় ১২ লাখ টন ধান পাওয়া লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। এখন পর্যন্ত মাঠ থেকে ৮০ শতাংশ ধান কৃষকের ঘরে উঠেছে।