রুস্তম আলী সায়ের গমারা প্রতিনিধিঃ
রাজশাহীর বাগমারায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার দুপুর ১ টায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে জাতির জনের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরপর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের নাম ফলক উন্মোচন করেন প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক। পরে ভবানীগঞ্জ নিজ মার্কেট অডিটোরিয়ামে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,এফ,এম, আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুলের পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক।
প্রধান অতিথি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক এমপি সরাসরি বিএনপি জামায়াত ওর উদ্দেশ্যে বলেন,জামাত-বিএনপি এখনো পাকিস্তানের পক্ষে ঢোল বাজায়।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফকরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্যে করে বলেছেন, উনি মির্জা ফখরুল সাহেব আজকাল বক্তৃতায় বলে বেড়ান ”দেশ নাকি পাকিস্থান আমলেই ভালো ছিল”। হায়রে মির্জা ফখরুল সাহেব এতই যদি দরদ। এতই যদি পাকিস্থান প্রীতি তাহলে আর দেরি কেন আজই পাকিস্তানে চলে যান। ওরা (মির্জা ফকরুল সাহেবরা) বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু তার সুযোগ্য কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কারণে তা সম্ভব না হওয়ায় তাদের এত মনোকষ্ট। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে বড় বড় প্রকল্প শুরু হওয়ায় তাদের মনোকষ্ট মনোজ্বালা আরো বেড়ে গিয়ে তারা এখন বেসামাল হয়ে পড়েছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন কি উন্নয়ন করেছে সেটা চোখে দেখা যায় না। আওয়ামী লীগের উন্নয়ন দৃশ্যমান। দেশে এখন তরতর গতিতে উন্নয়ন হচ্ছে। বাগমারার মানুষ আর কোন ভাই চাই না। বাংলা ভাইয়ের অত্যাচারে শান্তির বাগমারা রক্তাক্ত বাগমারায় পরিনত হয়েছিল।
মন্ত্রী উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, আজ বিএনপি জামায়াত নানান ভাবে সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা লেবাস পাল্টিয়ে মুখোশ পরে ছদ্মবেশে আওয়ামীলীগের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুপ্রবেশ করে সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট ও সরকারকে বিতর্কিত করার চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। এর মোকাবেলা করতে হবে আপনাদের। শেখ হাসিনা রাষ্ট্রের ক্ষমতায় আছে বলেই বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষ নিরাপদে আছে। মুক্তিযোদ্ধারা সম্মানিত হতে হয়েছে। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদ জিয়ার উদ্দেশ্যে বলেন, আপনি এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। আবার ক্ষমতায় গেলে ষোল কোটি মানুষের হক নষ্ট করবেন না তার কি গ্যারান্টি আছে বলেও উল্লেখ করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। আওয়ামী লীগ সরকার চুরি করে না। বিএনপি হরিলুট করে। মানুষ যেন না খেয়ে মারা না যায় সেদিকে লক্ষ্যে কাজ করে আওয়ামী লীগ সরকার। তাই আগামী নির্বাচনে নৌকায় ভোট দিয়ে আবারও শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সংসদ সদস্য, সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আব্দুল জব্বার। সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, পুঠিয়া-দূর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ মনছুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বাগমারা উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আহসান উল হক মাসুদ, ভবানীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আ’লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক মন্ডল, সহ-সভাপতি মতিউর রহমান টুকু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান আসাদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুনীল কুমার কুন্ডু, আব্দুল হামিদ, উপজেলা আ’লীগের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম প্রমুখ। উক্ত অনুষ্ঠানে জেলা, উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ উপস্থিত ছিলেন।
দুপুর বারোটার হেলিকপ্টার যোগে সালেহা ইমারত কোল্ড ষ্টোরেজ হেলিপ্যাড অবতরণ করেন মন্ত্রী। পরে ভবানীগঞ্জ দলীয় কার্যালয় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘর কমপ্লেক্সে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর সেখানে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু স্মুতি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। সেখানে থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে নেতৃবৃন্দের সাথে প্রথমে মতবিনিময় সভা করেন। বিকেলে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক একই হেলিকপ্টারে ঢাকার উদ্দেশ্যে বাগমারা ত্যাগ করেন।