নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলরা নাটশাল মাঠে দুপুর থেকেই নেচে-গেয়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ। ঢোল,মাদল আর মন্দিরার শব্দে ঐতিহ্যবাহী দলবদ্ধ নৃত্য। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বিভিন্ন সম্প্রদায় নাচে-গানে ও ঢোল-মাদলের আওয়াজে মাতোয়ারা ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির তরুণীরা। সমতল ভূমির ওড়াও, মুন্ডা, সাঁওতাল, মাহাতো, হাড়িসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্ত্বার সবচেয়ে বড় পার্বন কারাম উৎসবে বর্ণিল সাজে নেচে-গেয়ে নিজেদের ঐতিহ্য তুলে ধরে জেলার বিভিন্ন উপজেলার ক্ষুদ্র নৃগ বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে বিকেল ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে কারাম উৎসবের উদ্বোধন করেন নওগাঁ-৩ (মহাদেবপুর-বদলগাছী) আসনের সংসদ সদস্য জনাব ছলিম উদ্দিন তরফদার। উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশনেয় মহাদেবপুর উপজেলা ছাড়াও জেলার সাপাহার, নিয়ামতপুর ও ধামইরহাট থেকে আসা ২০টি সাংস্কৃতিক দল। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নারীরা লাল-হলুদ-বেগুনী শাড়ী আর খোপায় বাহারি ফুল গুঁজে ঢোল আর মাদলের তালে মেতে উঠেন নৃত্যে। আলতা মাখা পায়ে নুপুরের ঝংকারে হাতে হাত রেখে তাঁরা ফুটিয়ে তুলেন নিজ নিজ সংস্কৃতির ঐতিহ্যবাহী নৃত্য। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব সংস্কৃতিকে তুলে ধরাই এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য বলে জানান আয়োজকেরা। সমাবেশে বক্তারা বলেন, কারাম মেলার আয়োজন শুধু নিছক বিনোদনের জন্য করা হয় না। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী মানুষের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে কারাম মেলার আয়োজন শুরু হওয়ার পর ইতিমধ্যে মধ্যে বাংলাদেশে সমতল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের মধ্যে কারাম উৎসব ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রতি বছর ভাদ্র মাসের একাদশী তিথিতে জাঁকজমকপূর্ণভাবে কারাম উৎসব পালিত হয়ে আসছে। এই উৎসব ঘিরে শুধু নওগাঁতেই প্রতি বছর ২০টির অধিক স্থানে কারাম মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এসব উৎসবে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নানান সম্প্রদায়ের মানুষ তাঁদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তুলে ধরার সুযোগ পাচ্ছে।