নওগাঁসহ ২১টি উপজেলার তীব্র খরায় বোর-আমন চাষ নিয়ে চিন্তায় কৃষকের মাথায় হাত
নওগাঁয় তীব্র খরা ও অনাবৃষ্টির কারণে বোর-আমন ধান নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। টানা ১৫-২০ দিন বৃষ্টি না হওয়া ও তীব্র রোদে জমিগুলো ফেটে চৌচির হতে বসেছে। এদিকে গভীর নলকূপ থেকে টাকা দিয়ে ধানের জমিতে পানি দিতে হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ২ লাখ ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫০ হাজার হেক্টর জমির আমন খরার কবলে পড়েছে।
মহাদেবপুর উপজেলা ৯নং চেরাগপুর ইউনিয়ন চৌমাশিয়া সরকার পাড়া কৃষক ধীরেন চন্দ্র সরকার অচিন্ত হাজরা মান্নান মন্ডল উজ্জ্বল সরকারসহ বলেন এ-ই চৌমাশিয়া সরকার পাড়া মাঠে প্রায় ২০-২৫ আগে বৃষ্টি পানিতে বোর-বর্ষালী ইরি লাগানো হয়েছে কিন্তু গভীর নলকুপের পানী প্রতিবিঘা আটশত থেকে ১ হাজার টাকা করে ধার্যকরেও সময় মত পানি পাচ্ছে না কৃষক ধিরেন চন্দ্র সরকার বলেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ আমার ৩বিঘা ইরির ধান ঐ দূর্যোগে পুরোধান নষ্ট হয়েছে আমি কোন সরকারি অনদান ও ভূরতুকি পাইনি,আবার আমন ধান সেচে আবাদ করা দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ১০নং ভীমপুর ইউনিয়ন এই কৃষক জানান আমন ধান সেচে আবাদ করা প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হবে তাতে কৃষকের মাথায় হাত।
নিয়ামতপুর এলাকার কৃষক জসিম বলেন, “১৭-১৮ দিন আগের বৃষ্টির পানিতে আমনের ধান জমিতে লাগাতে পেরেছি। কিন্তু ১৫ দিন হতে বৃষ্টি না হওয়ার ফলে জমি শুকিয়ে ধান মরতে বসেছে।”
পোরশা উপজেলার কৃষক সজল বলেন, “আমাদের দিকে কিছু এলাকায় ধান জমিতে লাগানো আছে। এখনো বেশির ভাগ জমি বৃষ্টির পানির অভাবে চাষ দিতে পারিনি।”
বিএমডিএর গভীর নলকূপ থেকে পানি কিনে আবাদ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে কৃষকরা জানান। কেননা, এই সময়ে জমি খরার কবলে পড়লে প্রচুর পানি লাগে। জমিতে পানি দেওয়ার জন্য সিরিয়াল নিতে হচ্ছে। সিরিয়ালের জন্য ৫-৬ -৭দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। আবার কোনো সময় সকালে পানি পাব বলে গেলে দিন গড়িয়ে রাতে পানি পাওয়া যাচ্ছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাপন করছেন।
মান্দা উপজেলার টিটিহারি গ্রামের কৃষক করিম বলেন, “আমাদের জমি পানির অভাবে চাষ দিতে পারিনি। বৃষ্টি ও গভীর নলকূপের পানি না থাকায় চরম অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে।”
বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী প্রকৌশলী সমসের আলী বলেন, “এই সময়েই ফসলের জন্যে বৃষ্টির পানি বেশি দরকার হয়। অথচ এবার বৃষ্টির দেখা নেই।”
সমসের আলী আরও বলেন, “ধান লাগানোর জন্য আরও উপযুক্ত সময় আছে। শ্রাবণ মাসজুড়ে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তাই আমরা এটাকে খরা বলব না।