নওগাঁয় ৫ দিন বন্ধ থাকার পর গত মঙ্গলবার সকাল থেকে আবারও শুরু হয়েছে নওগাঁ জেলার মাস ব্যাপী চলা তাঁত বস্ত্র ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মেলার প্রতিদিনের প্রবেশ মুল্যের নামে র্যাফেল ড্রর নামে চলছে লটারি টিকিট বিক্রির ধুম। বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের পূর্বাশা সিনেমা হলের সামনে কোন সিনেমা দেখার জন্য টিকিটের ভিড় নয়, এটা নওগাঁ জেলার মাস ব্যাপী চলা তাঁত বস্ত্র ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মেলার প্রতিদিনের প্রবেশ মুল্যের নামে র্যাফেল ড্রর নামে চলছে লটারি টিকিট কেনার ভিড়। আদমদীঘি উপজেলার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে, হাট-বাজারে, রেলগেট চত্বরে লটারির টিকিট কিনতে সাধারন মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্যে করা যাচ্ছে। মাস ব্যাপী তাঁত বস্ত্র, কুটির শিল্প ও পণ্য মেলার উদ্বোধনের দিন থেকে মেলায় প্রতিদিন চলছে লটারি খেলা। এজন্য উপজেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকায় গ্রামে গ্রামে সিএনজি ও অটোচার্জারে মাইকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে টিকিট। ২০ টাকায় মোটরসাইকেল, টেলিভিশন, মোবাইল ফোন, সোনার গহনাসহ নানা রকমের লোভনীয় পন্য পাওয়ার আশায় স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, দিন মজুর শ্রমিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ শত শত টাকা ব্যায় করে লটারির টিকিট কিনছে। এতে তাদের কষ্টর্জিত অর্থ পরিবারের প্রয়োজনে ব্যায় না করে টিকিট কিনে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। সকাল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে এসব লটারি টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। সান্তাহার পূর্বাশা সিনেমা হলের সামনে টিকিট কিনতে আসা ৭ম শ্রেনীর ছাত্র সিহাম বাবু বলেন, প্রতিদিন আমি ৩টি করে টিকিট ক্রয় করি। কিন্তু এখনও পযর্ন্ত কোন লটারির পুরষ্কার পায়নি। যদি মটরসাইকেল পাই এই আশায় লটারির টিকিট কিনি। টিকিট কিনতে আসা ভ্যান চালক বাদশা মিয়া বলেন, লটারির প্রথম দিন থেকে ৫টা করে টিকিট কিনেও কিছুই পায়নি। সোনার গহনা পাওয়ার আশায় এই ভাবে প্রতিদিন টিকিট কিনি। কারণ মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। তাকে সোনার গহনা দিতে হবো সেই লোভে প্রতিদিন লটারির টিকিট কিনি। সান্তাহার রেলগেট চত্বরে লটারির টিকিট কিনতে আসা আমেনা বিবি নামে এক গৃহিনী বলেন, প্রতিদিন টিভিতে লটারির খেলা দেখতে ভালো লাগে। তাইতো এবার নিজের ভাগ্য পরিক্ষা জন্য ৮টি টিকিট ক্রয় করলাম। সান্তাহার নাগরিক কমিটির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ও শহীদ আহসানুল হক ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক রবিউল ইসলাম রবিন বলেন, পুরস্কারের লোভে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা তাঁদের আয়ের বড় অংশ লটারির টিকিট কিনে টাকা শেষ করছে। এমনকি স্কুল- কলেজের শিক্ষার্থীরা বাড়ি থেকে যে টাকা নিয়ে আসে সেই টাকা টিফিন না খেয়ে লটারির টিকিট কিনছে। এখানকার প্রশাসন নিরব ভুমিকা পালন করছে। পরীক্ষার মধ্যে কি ভাবে মেলার অনুমতি দেওয়া হয় সেটি ভাবতে অবাক লাগে। সান্তাহার পূর্বাশা সিনেমা হলের সামনে নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক টিকিট বিক্রয়কারি বলেন, আমাদের মত প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন টিকিট বিক্রয়কারি আছে। আমরা সিএনজি ও অটোচার্জারে মাইকিং করে কমিশন ভিত্তিতে টিকিট বিক্রি করে থাকি। তবে টিকিট বিক্রি চাপ এত বেশি মাঝে মাঝে আমাদের কে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা বিভিন্ন উপজেলায় চার্যার-ভ্যানে ও সি এন জি তে করে আনাচে-কানাচেতে গ্রাম-গন্জে বিক্র করেছে। প্রায় ২৫০ টি টিকিটের বাস্ক্র রয়েছে
এ বিষয়ে সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরির্দশক আরিফুল ইসলাম বলেন, নওগাঁ অথবা বগুড়ার মেলার নামের যে লটারির টিকিট বিক্রি হচ্ছে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন যদি কোথায় টিকিট বিক্রি হয় সেটাও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শ্রাবনী রায় এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, তাঁত বস্ত্র ও ক্ষুদ্র কুটির শিল্প মেলার টিকিট বিক্রি তো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যদি কোথাও প্রবেশ মুল্যোর টিকিট বিক্রয় করতে দেখা গেলে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি জানান।