দেশের বিভিন্ন জেলার মতো নওগাঁর ওপর দিয়েও বয়ে গেছে কালবৈশাখি ঝড়। ঝড়ে কবলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশংখা করছেন ইরি-বোরো চাষীরা। বুধবার ভোর ৪টা থেকে শুরু হয় ঝড় ও বৃষ্টি। চলে প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিনিট। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে নওগাঁয় ১ লাখ ৮৯ হাজার ৪৯০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ করা হয়েছে। হঠাৎ কালবৈশাখিত ঝড়ে লন্ডন -ভন্ড করে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ধান নুয়ে পড়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই কৃষকরা ধান কাটা-মাড়াই শুরু করতেন। এমন সময় ঝড়ে তাদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।
মহাদেবপুর উপজেলার ৯নাম্বর চেরাগপুর ইউনিয়ানের ৯নাম্বার চৌমাশিয়া সরকার পাড়া গ্রামের কৃষক শ্রী ধীরেন চন্দ্র সরকার জানান,আমি প্রয় ৭-৮ বিঘা ধান আবাদ করেছি খাট জিরা, কাটারী ভোগ ও লম্বা জিরা আর কতদিন পরে আমার খাটো জীরা ধান কাটা শুরু হবে এই কালবৈশাখী ঝড়ে লন্ডন -ভন্ড করে দিয়েছে আমার স্বপ্ন। খোদ্দনারায়নপুর পালপাড়া, বাঘধানা,ধুনজইল মাইবা শরিফপির। ঈশ্বরপুর গ্রামের কৃষক পান্জু সরদার জানান,‘আমি প্রায় ২৫ বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছি। ভোররাতের ঝড়ে আমার জমির সব ধানের শিষ মাটিতে পড়ে গেছে। আর ১৫থেকে ২০দিন পরেই ধান কাটা শুরু করতাম। এই সময় ঝড়-বৃষ্টিতে ক্ষতি হয়ে গেল। ধান কাটতে এখন বাড়তি খরচ হবে। ফলনও কিছুটা কম হতে পারে।’ নুয়ে পড়া ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তা মান্দা উপজেলার দক্ষিণ মৈনুম গ্রামের কৃষক অজয় কুমার আট বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘ধানের শীষ মাটিতে পড়ে যাওয়ায় দানা মাটির সঙ্গে লেগে পড়ে যেতে পারে। এমন ধান কাটতে শ্রমিকরা বেশি মজুরি নেবে।’
একই কথা জানান রাণীনগর উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের চাষি জুয়েল হোসেন এবং বড়খোল গ্রামের সাদ্দাম হোসেনও। ধানের ক্ষতির বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক শামছুল ওয়াদুদ বলেন, ‘অধিকাংশ জমির ধান আধাপাকা হওয়ায় খুব বেশি ক্ষতি হবে না। তবে এই ঝড়বৃষ্টিতে আমের বেশ উপকার হয়েছে। বৃষ্টিতে আমের বোঁটা শক্ত হবে। এতে অনাবৃষ্টিতে আম ঝরে পড়বে না। রোগবালাইও কম হবে।’ ভোররাতে ঝড়-বৃষ্টির পর সারা দিনই আকাশ মেঘলা রয়েছে। নওগাঁর বদলগাছী আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ইনচার্জ ফেরদৌস মাহমুদ জানান, কালবৈশাখির প্রভাবে দিনের বেলায় আকাশ মেঘলা আছে। দমকা হাওয়ার সঙ্গে ভারী বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।
এছাড়াও ধানের পাশাপাশি কলা চাষিদের ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি।
মহাদেবপুর উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের হরিচন্দ্রপুর গ্রামের মোঃ কফিলউদ্দিন প্রামাণিক এর পুত্র মোঃ নজরুল ইসলাম(গেদু) এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন এই ঝড়ে তার দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫০ টি কলা গাছ ভেঙ্গেছে।
এতে করে তার ৩ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধিত হয়েছে। তিনি আরো জানান যে তার বিভিন্ন এন,জি,ও তে রিন নেওয়া আছে
এখন সেই রিনের টাকা পরিশোধ করা অসম্ভব হয়ে যাবে।
তিনি এই ক্ষতির বিষয়ে সরকারি সহায়তা চেয়েছেন।