রাজশাহীতে নিরাপদ ও বালাইমুক্ত আম উৎপাদনে এ বছর ৫০ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করা হচ্ছে। এ থেকে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। এর মধ্যে অন্তত ৩০০ মেট্রিক টন বিদেশে রপ্তানির আশা করছেন চাষিরা। এবারও উন্নতজাতের আমগুলোতে ফ্রুট ব্যাগিং করা হবে।
রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটি নামে একটি সংগঠনের চাষিরা প্রতিবছর আমে ফ্রুট ব্যাগিং করে থাকেন। সোসাইটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। রোববার সকালে রাজশাহী সেনানিবাসের পাশে পাঁচ বিঘা আয়তনের একটি আমবাগানে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
এ সময় তিনি বলেন, রাজশাহীর আম ইউরোপসহ বাইরে বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে, এটি আমাদের জন্য অত্যান্ত সুখবর। রাজশাহী কৃষি প্রধান অঞ্চল। এ অঞ্চলে কৃষিপণ্যভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে তোলা সম্ভব হলে এ অঞ্চলের ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটবে ও অর্থনীতি শক্তিশালী হবে।
মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রডিউসার সোসাইটির সভাপতি আনোয়ারুল হকের বাগানে ফ্রুট ব্যাগিংয়ের উদ্বোধন করেন। আনোয়ারুল হক জানান, তাঁদের সংগঠনের ২০০ জন সদস্য এবার কমপক্ষে ৫০ লাখ আমে ফ্রুট ব্যাগিং করবেন। উৎপাদন হবে প্রায় এক হাজার মেট্রিক টন আম। এর মধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন আম বিদেশে রপ্তানি হবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
তিনি বলেন, আম বিদেশে রপ্তানি করতে হলে অবশ্যই ফ্রুট ব্যাগিং করতে হয়। ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে উৎপাদিত আম নিরাপদ, বালাইমুক্ত ও স্বাস্থ্যসম্মত। রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে এই আম ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়। গতবছর করোনা পরিস্থিতিতে অল্প কিছু আম রপ্তানি করা গিয়েছিল। তার আগের দুই বছর ‘কোয়ারেন্টাইন’ নিরীক্ষার নামে অত্যন্ত কড়াকড়ির কারণে আম তেমন রপ্তানি হয়নি। তবে এবার শর্তগুলো শিথিল করা হয়েছে। তাই তাঁরা আশা করছেন আম রপ্তানি করা হবে। এ জন্যই আমে ব্যাগিং শুরু হলো।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কেজেএম আবদুল আউয়াল জানান, ফ্রুট ব্যাগিং ব্যবহার বেসরকারি পর্র্যায়ে হয়ে থাকে। তাই কত আমে ব্যাগিং হচ্ছে তার সঠিক হিসাব তার কাছে নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা সব সময় চাষিদের ফ্রুট ব্যাগিং করে আম উৎপাদনে উৎসাহ দিয়ে থাকি। কারণ, এই আম নিরাপদ-বালাইমুক্ত। বিদেশে রপ্তানি না হলেও বেশি দামে দেশেই বিক্রি করা যায়। অনেক মানুষ আছেন যাঁরা টাকা বেশি লাগলেও নিরাপদ আমটি খেতে চান।’
কৃষি বিভাগের হিসাবে, রাজশাহীতে এ বছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট দুই লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। তবে এবার শিলা ও খরার কারণে আমের অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।