আকাশ সরকার রাজশাহী ব্যুরোঃ রাজশাহীতে সকাল থেকে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। এসময় তারা সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাসহ আজ শুক্রবারের নতুন আদেশ সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করেছে সরকার, এটি বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে আছেন রাজশাহী জেলা প্রশাসন । এছাড়া নগরীর মনিচত্ত্বর, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, কুমারপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে চেক পোস্টের মাধ্যমে বাহিরে বের হওয়া প্রায় প্রতিটি মানুষকেই জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়েছে। আর নগরের প্রবেশ পথগুলোতেও রয়েছে কঠোর অবস্থানে পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অপ্রয়োজনে বাহিরে আসা ব্যক্তিদের বাসায় ফিরিয়ে দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী। সেই সাথে টিসিবির পণ্য নিতে আসা মানুষদেরও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে লাইনে দাঁড় করান তারা। নগরজুড়ে কড়া তৎপড়তা ছিলো তাদের। সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট লসমি চাকমা জানান, রাজশাহীতে জেলা প্রশাসনের ৫ টি টিমে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছে । মহামারি এই ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে আমরা সর্বদা জনগণকে রাস্তায় বের না হতে পরামর্শ দিচ্ছি, সবাইকে সচেতন করছি। দেশের জনগণের সুরক্ষার জন্য আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এ দিগে জেলা প্রশাসক তার ফেসবুকে লিখে সকর্ত করে লিখেছেন, রাজশাহী ভালো থাকা নির্ভর করছে আপনার মুভমেন্ট এর উপর।দয়া করে যে যেখানে আছেন,সে সেখানে থাকেন। ঘরের বাইরে যাবেন না, জেলা প্রশাসক। করোনাভাইরাসের প্রকোপ মোকাবেলায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এ সময়ে পর্যন্ত সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বের হওয়াও নিষিদ্ধ করেছে সরকার। শুক্রবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রজ্ঞাপনে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এতে বলা হয়, এই নির্দেশনা অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, আগের ছুটির ধারাবাহিকতায় ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হল। সাধারণ ছুটির সময় আগামী ১৭-১৮ এপ্রিল এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে। বর্ণিত ছুটি অন্যান্য সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না জানিয়ে আদেশে এই ছুটির সময় যেসব নির্দেশাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে তাও বলে দেয়া হয়েছে। ১. করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। ২. অতীব জরুরি প্রয়োজন ব্যতীত ঘরের বাইরে বের না হতে সবাইকে অনুরোধ করা হল। ৩. সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এ নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ৪. এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত করা হল। ৫. বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে। আদেশে বলা হয়েছে, জরুরি পরিষেবার (বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, ফায়ার সার্ভিস, পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট ইত্যাদি) ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা প্রযোজ্য হবে না। এতে আরও বলা হয়, কৃষিপণ্য, সার, কীটনাশক, জ্বালানি, সংবাদপত্র, খাদ্য, শিল্প পণ্য, চিকিৎসা সরঞ্জামাদি, জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন এবং কাঁচা বাজার, খাবার, ওষুধের দোকান ও হাসপাতাল এ ছুটির আওতার বাইরে থাকবে। আদেশে আরও বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে অফিস খোলা রাখা যাবে। প্রয়োজনে ঔষধশিল্প, উৎপাদন ও রফতানিমুখী শিল্প কারখানা চালু রাখতে পারবে। জনপ্রশাসনমন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, মানুষের জীবন জীবিকার স্বার্থে রিকশা-ভ্যানসহ যানবাহন, রেল, বাস সার্ভিস পর্যায়ক্রমে চালু করা হবে। জনগণের প্রয়োজন বিবেচনায় ছুটিকালীন বাংলাদেশ ব্যাংক সীমিত আকারে ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।