শাস্ত্র মতে জানা যায় যে, কৃষ্ণের জন্মদিনের ১৫ দিন পর শুক্ল পক্ষের অষ্টমী তিথিতে মথুরায় পবিত্র বাসনায় রাজা বৃষ ভানু এবং তার স্ত্রী কীর্তিদা স্বর্ণ পদ্ম এর উপর রাধা কে পেয়েছিলেন। জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে রাধা অষ্টমীর দিন উপবাস রাখলে এবং রাধিকার আরাধনা করলে জীবনের সুখ শান্তি বজায় থাকে। এই রাধা অষ্টমী পূজোর কিছু নিয়মও রয়েছে। নিষ্ঠা ভরে যদি রাধা অষ্টমীর পূজা করা যায়, তাহলে জীবনের সমস্ত দুঃখ দুর্দশা দূর হয়ে যায়।
হিন্দু সমাজে রাধা অষ্টমী খুবই মহাসমারোহে পালন করা হয়। ভাগবত পুরাণে বর্ণিত আছে যে, কোন ব্যক্তি যদি একবার অন্তত এই রাধাষ্টমীর ব্রত পালন করে থাকেন, তাহলে তার কোটি জন্মের ব্রহ্ম হত্যার পাপ ক্ষয় হয়। এছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন যে, শত শত একাদশী ব্রত পালনের যে পূণ্য ফল অর্জন করা যায়, একটি রাধা অষ্টমীর ব্রত পালন করলে তার থেকেও বেশি পূণ্য লাভ করা যেতে পারে।
তবে বলা যায় যে, রাধার সঙ্গে সম্মিলিত রূপে থাকলে তবেই কৃষ্ণের নামের আগে শ্রী সম্মোধন যুক্ত হয়। তাই যারা কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী ব্রত উদযাপন করেছেন তারা যদি রাধাষ্টমী ব্রত পালন না করেন তবে পূণ্য ফল লাভ কিন্তু করতে পারবেন না। কেননা শ্রীকৃষ্ণ নিজেই বলেছেন যে, কৃষ্ণ আর রাধার মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সেই কারণে যদি সম্পূর্ণ পূণ্য লাভ করতেই হয়, তাহলে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীর সাথে সাথে রাধা অষ্টমীর ব্রতও অবশ্যই পালন করবেন।
রাধা অষ্টমী পূজার বিধি খুব সকালে উঠে স্নান সেরে পরিষ্কার কাপড় পরে ঠাকুর ঘরে গঙ্গা মাটি দিয়ে একটি গোলাকার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে।
তার মধ্যে একটি তামার পাত্র অথবা মাটির ঘট রেখে বা তামার ঘট রেখে তার উপরে রাধা কৃষ্ণের বিগ্রহ বা ছবি স্থাপন করতে হবে।
এবার সবার আগে রাধাকে ধুপ, দীপ, ফলের নৈবেদ্য অর্পণ করে উপবাসের সংকল্প করতে হবে।
নির্জলা উপবাসে অসমর্থ হলে অর্থ যদি আপনি না করতে পারেন, তাহলে ফল আহার করতে পারেন।
এই পৃথিবীতে পূন্য লগ্নের মধ্যে ফুল, নতুন কাপড়, আতপ চাল, সিঁদুর, মিষ্টান্ন, ফল, দিয়ে রাধার পুজো করতে হয়।
রাধা অষ্টমী ব্রত চলাকালীন ভক্তেরা অর্ধেক দিন পর্যন্ত নির্জলা উপবাসে থাকেন। এই দিনটির আরেকটি তাৎপর্য আছে হিন্দু রীতিতে বহু হিন্দু ভক্ত জন্মাষ্টমীর দিন হিমাচল প্রদেশের মনি মহেশ হ্রদের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। রাধা অষ্টমীর দিন সেখানে পৌঁছায় শৈব আরাধনার লক্ষ্য নিয়ে, একেই মনিমহেশ যাত্রা বলে।