ব্যবসায়ী বাবার সর্বকনিষ্ঠ মেয়ে প্রকৃতি কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ এবং ২০২২ সালে কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে জিপিএ ৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। সিজরাত জাহান প্রকৃতি বর্তমানে ঢাকায় রয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইলে কথা হয় সিজরাত জাহান প্রকৃতির। নিজের সাফল্যে আনন্দিত প্রকৃতি বলেন, ‘আমি প্রথম হওয়ার জন্য পড়িনি, পড়েছি ভালো কিছু করার জন্য। নিয়মিত এবং রুটিন করে পড়ে আমি ভর্তি পরীক্ষায় সফলতা পেয়েছি। এখন কী সাবজেক্ট পাব, সেটা জেনে পরবর্তী লক্ষ্য ঠিক করব।’
শিক্ষকদের সহযোগিতা প্রসঙ্গে প্রকৃতি বলেন, ‘কলেজের সকল শিক্ষকের সহায়তা পেয়েছি। যখন কোনো বিষয় বুঝতে সমস্যা হতো, তখন স্যারদের কাছে গেলে তারা সমাধান করে দিতেন।’
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে প্রকৃতি বলেন, ‘ঢাকায় কোচিং করেছি। তবে সবকিছুর মূলে নিজের চেষ্টা ও নিয়মিত পড়াশোনা। আর নিজের বেসিক থাকতে হবে। বেসিক নলেজ ভালো থাকলে আর প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা পেলে সফলতা সহজ হয়।’
‘আমিও সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করতাম, এখনো করি। তবে আমাকে কখনো সেটার নেশায় পায়নি। আর কোনো কিছু নেশায় পরিণত না হলে সেটা আপনার ক্ষতির কারণ হবে না। এটা নির্ভর করে আপনি কীভাবে ব্যবহার করছেন।’ ফেসবুক ব্যবহার সম্পর্কে এসব কথা বলেন এই শিক্ষার্থী।
আগামীর ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে পরামর্শ হিসেবে প্রকৃতি বলেন, ‘বেসিক ভালো থাকতে হবে, নিয়মিত পড়তে হবে।’
মেয়ের সাফল্যে আনন্দিত বাবা বাদল আহমেদ বলেন, ‘আমাদের তিন মেয়ে। বড় মেয়ে সহকারী জজ হিসেবে কর্মরত। মেজো মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কেটিং নিয়ে পড়ছে। এখন ছোট মেয়ের ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্যে আমরা খুশি। তার যে বিষয় নিয়ে পড়তে ভালো লাগবে সে পড়বে। আমরা চাই সে সফল হোক। তার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’
কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজে পড়াকালে সিজরাতের শিক্ষক ছিলেন অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ সরকার। সদ্য অবসরে যাওয়া এই শিক্ষক বলেন, ‘সিজরাত বরাবর ভালো শিক্ষার্থী। আমরা নিয়মিত ওদের ক্লাস ও পরীক্ষা নিয়েছি। ইংরেজিসহ কয়েকটি বিষয়ে বাড়তি ক্লাসের ব্যবস্থা করেছি। কলেজের শিক্ষকরা দায়িত্ব নিয়ে তাদের পড়াশোনার যত্ন নিয়েছেন।’
কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই শিক্ষাবর্ষে সিজরাত জাহান প্রকৃতিসহ আমাদের কলেজ থেকে এখন পর্যন্ত ১৩ জন মেডিক্যাল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। ভর্তি পরীক্ষায় কুড়িগ্রামের মতো প্রান্তিক জেলা থেকে সে প্রথম হওয়ায় আমরা আনন্দিত।’