শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১ রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। দেশ চালাবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সনাতনীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকলকে একত্রিত হতে হবে ছাগলনাইয়া সেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

সাদা মনের মানুষ করিম ভাই-দৈনিক বাংলার অধিকার

প্রতিবেদক,শ্যামল সরকার / ২০৩ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: শুক্রবার, ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ৭:০২ অপরাহ্ণ

লেখক
জীবন কানাই চক্রবর্তী

মানুষ নন্দিত হয় তার কর্মে, নিন্দিতও হয় কর্মে। কর্মই মানুষকে চিরধন্য, চির বরেণ্য করে, করে চিরধিকৃত, চরম কলংকিত।

আমার অগ্রজপ্রতিম প্রয়াত আবদুল করিম পাটওয়ারী সাহেব- যাঁকে আমি ‘করিম ভাই’ বলেই ডাকতাম, ডেকে আনন্দ পেতাম, তাঁর সুকৃতির সামান্য আলোকপাতের লক্ষ্যেই এক অক্ষম লেখকের লেখনির আকারের সঞ্চালন।

করিম ভাই’-এর কথা মনে হলেই স্মৃতির দর্পণে অত্যুজ্জ্বল হয়ে ভেসে উঠে সহজ-সরল, নিরহঙ্কার সাদামনের, মুক্ত চিন্তার, এক মহাপ্রাণ ব্যক্তির অবয়ব।কৈশোরে তাঁর সাথে পরিচিত হতে হতে নানা কর্মের মাধ্যমে একদিন চিনে নিলাম সম্যকভাবে করিম ভাইকে। সে অনেক দিন আগের কথা। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা বলতে যারা সেদিন ছিলেন পরিচিত, নিবেদিত, সমাদৃত তাঁদের মধ্যে আমার খুব কাছের মানুষ ছিলেন প্রয়াত চাঁদবঙ্ পাটওয়ারী সাহেব।হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দি সাহেব আসবেন চাঁদপুরে। সে জন্যে ডাকা হলো নেতাদের। এলেন করিম ভাই, প্রয়াত এ. বি. খান, প্রয়াত আবুল কাশেম চৌধুরী টুনু ভাই, প্রয়াত আবদুল হামিদ মাস্টারসহ জনা পাঁচেক নেতা। সভাটি আহুত হয়েছিলো প্রয়াত চাঁদবঙ্ পাটওয়ারী সাহেবের চেম্বারে। সেদিনটি ছিল লক্ষ্মী পূজার দিন। আমি তখন ডিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র। আমাকে বাসা থেকে ডেকে পাঠানো হলো। গেলাম সভায়। সবাইকে সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম। চাঁদবঙ্ পাটওয়ারী সাহেব সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে টিনের চোঙ্গা হাতে দিয়ে তখনই জনগণকে আহূত পরের দিনের সোহরাওয়ার্দির জনসভায় উপস্থিত থাকার প্রচার কাজে নেমে পড়ার কথা বলে রিঙ্া ভাড়া বাবদ কিছু টাকা, সম্ভবত ১০ টাকা হাতে গছিয়ে দিলেন। সেদিনই খুব কাছ থেকে করিম ভাইকে দেখার সুযোগ পেয়েছিলাম। তাঁর সামান্য কিছু উপদেশেই মুগ্ধ হলাম। চেহারায়, পোশাকে ছিলো না কোনো চাকচিক্য। একেবারে সাধারণ মানের পরিচ্ছদ। শহরের প্রধান প্রধান রাস্তায় টিনের চোঙ্গায় প্রচার করতে করতে শহর ছেড়ে বাবুরহাট পর্যন্ত গিয়ে ফিরে এলাম রাত ৯ টায়। বাসায় লক্ষ্মীপূজার কাজ শেষ। মা খুব রাগ করেছিলেন বাসার পূজা ফেলে রেখে নেতাদের আদেশে চোঙ্গা ফুঁকার জন্যে।ধীরে ধীরে যতই করিম ভাই-এর সানি্নধ্যে এসেছি, ততই জনগণের জন্যে, দেশের জন্যে তাঁর মনের গভীরে সঞ্চিত ভালোবাসার স্ফূরণের সন্ধান পেয়ে উদ্দীপ্ত হয়েছি, হয়েছি প্রাণিত।জাতি, ধর্ম-বর্ণ-স্ত্রী-পুরুষ এবং বয়স নির্বিশেষে সব মানুষের হৃদয় জয় করার সহজাত অনন্য-অনুপম গুণাবলি ছিলো বলেই করিম ভাই খুব সাধারণ শিক্ষায় স্বশিক্ষিত হয়েই সত্যিকার অর্থে সুশিক্ষিত হতে পেরেছিলেন। সুবিধা বঞ্চিত মানুষের উন্নয়নে, সমাজ গঠনে, তাঁর চিন্তা-চেতনায় ছিলো গণতান্ত্রিক-প্রগতিশীলতার দৃশ্যমান ছাপ। পদলোভ বা ধনলোভ তাঁকে প্রলুব্ধ করেনি কখনো।পন্ডিতের পান্ডিত্য পূর্ণভাষণ তুষ্ট করে মুষ্টিমেয়কে। এই মুষ্টিমেয়র তুষ্টি সাধনে তিনি তৎপর ছিলেন না। সাদামাটা ভাষায় কথা বলতেন জনসভায়। তাতেই প্রকাশ পেত জ্ঞানের গভীরতা। শ্রোতারা মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে বসে বক্তৃতা নয়, মনের কথা শুনতো করিম ভাই-এর কাছ থেকে। ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সামাজিক, ক্রীড়া সাংস্কৃতিক এমনকি প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও যখন তিনি বক্তব্য উপস্থাপন করতেন তখনো ব্যত্যয় ঘটত না বক্তৃতার আঙ্গিকে। ব্যত্যয় ঘটত শুধু শব্দ চয়নের কুশলতায়। যেখানে যেমন, সেখানে তেমন-এক কথায় স্থান, কাল, পাত্র, বিষয়বস্তুর গুরুত্ব ইত্যাদি সুবিবেচিতভাবেই উপস্থাপিত হতো তাঁর বক্তব্যে। জনগণের প্রাণের কথা, দুঃখ-বেদনার কথা, তাঁদের সমস্যা-সঙ্কটের কথাগুলো অনায়াসেই প্রাঞ্জল ভাষায় প্রকাশ করতেন তিনি। মুসলিমলীগ বিরোধী আন্দোলন, আইয়ুবের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলন, হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ৬ দফা, ১১ দফার আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানসহ মুক্তি সংগ্রাম পূর্ব সকল আন্দোলনে তিনি ছিলেন নিত্যদিনের সহচর, আদর্শনিষ্ঠ নেতা, আশা-উদ্দীপনা সৃষ্টিতে আলোর দিশারী, দুর্দিন-দুঃসময়ে ছাত্র-যুবসহ সব বয়সী আন্দোলনকারী মানুষের প্রেরণার উৎস, সত্যাদর্শী নেতা।মুক্তিযুদ্ধের প্রাক্কালে জনগণকে সংগঠিত করার দুঃসাহসিক দুরূহ কাজে নির্ভীকচিত্তে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন মহকুমা সংগ্রাম কমিটি গঠনে। আওয়ামী লীগের মহকুমা জেলা নেতৃত্বে কখনো প্রকাশ্য, কখনো অপ্রকাশ্য বিভক্তি পরিলক্ষিত হলেও করিম ভাই, টুনু ভাই, আউয়াল ভাই এবং চাঁদবঙ্ পাটওয়ারী সাহেব প্রমুখ ছিলেন এসব সংকীর্ণতার ঊধর্ে্ব। সংকীর্ণতার গ্লানি থেকে মুক্ত ছিলেন বলেই সংগ্রাম কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হতে পেরেছিলাম ন্যাপের এই আমি সহ অনেকেই।
পাক-সেনারা যেদিন চাঁদপুর শহরের একেবারে সনি্নকটে, পাক-বাহিনীর মর্টারের সেল যখন বর্ষিত হচ্ছিল শহরে- ঠিক সে সময়ে চিত্রলেখা সিনেমা হলের নিচে অবস্থিত কফি হাউজের সামনে তাঁর সাথে কথা বলে শেষ রাতে যখন আমরা চাঁদপুর শহর ছেড়ে ইচলীর কাছে অবস্থিত প্রয়াত কলন্দর গাজীর বাড়িতে পৌঁছি-তখন প্রায় ভোর হয়ে আসছিলো। তিনিই একমাত্র নেতা যিনি সর্বশেষ সেই রাতেই শহর ছেড়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধাদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজে নিয়োজিত হবার মহাব্রত নিয়ে। শহরের মানুষকে অসহায় রেখে, অরক্ষিত রেখে তিনি শহর ছেড়ে যেতে চাননি। নেতা-কর্মীদের সকলে চলে যাবার পরেই তিনি শহর ছেড়ে ছিলেন। সেদিন এর আগে রাত ১২/১ টায় টাউন হলের নিচে দাঁড়িয়ে তিনি সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গিয়ে যথাসময়ে, যথাযথ কর্তৃপক্ষের আহ্বানে, যথাস্থানে সমবেত হবার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
এই ছিলো তাঁর দায়িত্ববোধ, নেতা-কর্মী, সাধারণ জনগণের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার বহির্প্রকাশ। এপ্রিল মাসের প্রথমদিকে পাইকপাড়া হাই স্কুলে অনুষ্ঠিত গোপন সভায় ৯ সদস্য বিশিষ্ট মুক্তাঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনার্থে গঠিত হয় ২ নং সেক্টরের অধীনে মধুমতি সাব-সেক্টরের মিনি কেবিনেট_ মন্ত্রী পরিষদ। করিম ভাই-এর ওপর অর্পিত হয় আইন, অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা, সমাজকল্যাণ, খাদ্য-স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব। ওই বয়সে তাঁর পক্ষে আমাদের সঙ্গে ক্যাম্পে ক্যাম্পে থাকা, অর্থাৎ যুদ্ধক্ষেত্রে থাকা সম্ভব ছিলো না বিধায় মন্ত্রীসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাঁকে নিরাপদ স্থানে থাকার পরামর্শ দেয়া হলে ফরিদগঞ্জস্থ মুন্সিরহাটের তালুকদার বাড়িতে (তাঁর শ্বশুর বাড়ি) থেকেই তিনি কৌশলে


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!