ফরিদ মিয়া নান্দাইল ময়মনসিংহ প্রতিনিধি:- জন্মের পরে সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল আনিস ও আমেনার।
আনিসের বয়স যখন পাঁচ বছর তখন তার এক ধরণের জ্বর হয়। চিকিৎসার একপর্যায়ে জ্বর ভালো হলেও বেঁকে যায় তার দু’পা,, সেই সাথে থেমে যায় তার শারিরীক বৃদ্ধি।
তার ছোট বোন আমেনার বয়স যখন সাত সেও আক্রান্ত হয় একই ধরণের বিরল রোগে। তার শারিরীক গঠনের পরিবর্তন ঘটতে থাকে সেই সাথে থেমে যায় শারিরীক বৃদ্ধি ।
৩ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার আনিসুর রহমান ও ৪ ফুট ৫ ইঞ্চি উচ্চতার আমেনা বেগমের বাড়ি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শ্রীমন্তপুর গ্রামে।এই গ্রামের ছিদ্দিক হোসাইন ও ফুলেছা বেগম দম্পতির সন্তান তারা।
এই দুই ভাইবোন শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়েও লেখাপড়ার হাল ছেড়ে দেয়নি,আনিসুর রহমান কিশোরগঞ্জ সরকারি গরুদয়াল কলেজ থেকে ২০১৭ শিক্ষা বর্ষে অনার্স কোর্স সম্পন্ন করেছে। ছোট বোন আমেনা কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ থেকে চলতি শিক্ষা বর্ষে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়েছে (সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী)।
আনিস জানায়,, আমরা দুই ভাইবোন শারীরিক প্রতিবন্ধী, ঝাঁলমুড়ি বিক্রেতা বাবার অভাবের সংসারে নানা প্রতিকূলতার মাঝে লেখাপড়া করেছি।প্রতিদিনের দুইজনের ঔষধ খরচ ৩০০/৪০০ টাকা পাশাপাশি সংসার খরচ, অসুস্থ বাবা আর পাড়ছেনা আমাদের হাল ধরতে।
শিক্ষার অমর্যাদা করে, অন্যসব প্রতিবন্ধীদের মতো আমারাও পাড়ছিনা রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানুষের কাছে হাত পাঁততে। সব মিলিয়ে আমাদের জীবন এখন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে।
আনিস আরো জানায়,চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারী প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মশিউর রহমান হুমায়ুনের দেখা করে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আবেদন দিয়েছি, তারপরদিন ১৯ ফেব্রুয়ারী মহামান্য রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গভবনে দেখা করে পরিবারের কষ্টের কথা জানিয়েছি। ১৯ সালের ২৪ডিসেম্বর স্থানীয় সংসদ সদস্য জাকিয়া নুর লিপির সাথে দেখা করে চাকরির দাবি জানিয়েছি।এমনকি গত ১৫ অক্টোবর কিশোরগঞ্জ জেলাপ্রশাসকের সাথে দেখা করে একটি কাজের দাবী জানিয়েছি।
আনিসের মা কান্না জড়িত কন্ঠে জানান,, আমার প্রতিবন্ধী সন্তানদের নিয়ে খুব কষ্টে আছি,, বাড়িতে একটি ভাঙ্গাচুড়া একটি ঘরে কোনমতে বসবাস করছি,, এদের বাবা আর সংসারের হাল টানতে পারছেনা। তিনি সন্তানের একটি সন্মানজনক পেশার ব্যবস্থা করতে কিশোরগঞ্জের কৃতি সন্তান মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মানবতার মা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা সহ প্রশাসনের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানায়।
সবশেষে আনিসুর রহমান বলেন, আমরা যাদের কাছে গিয়েছি আবেদন জানিয়েছি আশা করছি ইনশাআল্লাহ তারা কেউ না কেউ মানবিক দিক বিবেচনা করে আমাদের প্রতি সদয় হয়ে একটি সন্মানজনক পেশার ব্যবস্থা করবেন ।