বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১ রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। দেশ চালাবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সনাতনীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকলকে একত্রিত হতে হবে ছাগলনাইয়া সেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ মুন্সীগঞ্জে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্নয়
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

কচুর লতি চাষে লাভবান পাঁচবিবির কৃষকরা, অনাবৃষ্টিতে ক্ষতির আশঙ্কা

সাখাওয়াত হোসেন,পাঁচবিবি প্রতিনিধি / ২৬৪ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ১:২৭ অপরাহ্ণ

 

লতিরাজ কচু জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে। অন্যান্য সবজি চাষের চেয়ে কম অর্থ বিনিয়োগে বেশি লাভবান হওয়ায় প্রতি বছর এর চাষ বাড়ছে। পাঁচবিবির কচুর লতি কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে। ফলে এ অর্থকারী ফসল থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হচ্ছে, যা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে দারুণ অবদান রাখছে। আর অল্প সময়ে কচুর লতি চাষ করে লাভবান হচ্ছেন পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকরা।
জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে হাল চাষ, শ্রম, সেচ, গোবর, ডিএপি, পটাশ, জিপসাম, ইউরিয়া বাবদ ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ করে লতি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮৫ হাজার টাকায়। প্রতি বিঘা জমিতে সপ্তাহে ৩-৪ মণ কচুর লতি পেয়ে থাকে কৃষকরা। বৃষ্টি হলে সপ্তাহে দুই দিন লতি কাটতে হয়। এখন বৃষ্টি কম হওয়ায় সপ্তাহে একদিন করে কাটতে হয়। গোরা থেকে যে লতি বের হয় সেটি চিকন, ও ডাগুর থেকে যে লতি বের হয় সেটি মোটা ধরনের লতি। বাজারে প্রতিকেজি লতি ৪০-৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রী হচ্ছে। জয়পুরহাট জেলার মাঝে পাঁচবিবি উপজেলা কচুর লতির জন্য বিখ্যাত।
সরেজমিনে দেখা গেছে বাগজানা ইউনিয়নের গঙ্গাপ্রসাদ, রামভদ্রপুর, রামচন্দ্রপুর, ধরঞ্জী ইউনিয়নের সালুয়া, রাতনপুর, কোতয়ালীবাগ, নন্দইল সহ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নেই খরচ স্বল্প ও অধিক লাভ হওয়ায় ব্যপক পরিমানে কচুর লতি চাষ হচ্ছে।
দরগাপাড়া এলাকার বাড়িক চৌধুরী বলেন, “আমি প্রতিদিন সকালে জমি থেকে লতি কেটে পাঁচবিবি বটতলী লতি হাটিতে পাইকেরি ১৬০০ টাকা মণ লতি বিক্রি করি। ১ বিঘা জমিতে লতি চাষ করেছি। আমার দেখা দেখি অনেক চাষি লতি চাষ করেছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে আশানরুপ ফলন পাওয়া যাবে। তবে অনাবৃষ্টির কারনে এবার লতির আবাদ কিছুটা কম হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের রতনপুর হিন্দুপাড়ার আসান বর্মন বলেন আমি দুই বিঘায় লতি চাষ করেছি। জমিতে জল না থাকায় ধীর গতিতে লতি বের হচ্ছে ও চিকন হয়ে বের হচ্ছে। বাগজানার গঙ্গাপ্রসাদ এলাকার কৃষক সুমন বলেন আমি প্রায় দেড় বিঘা জমিতে কচুর লতি চাষ করেছি। নদীর ধারে জমি হওয়ায় জমিতে বেশ রস রয়েছে। এতে আশানরুপ ফলন পাওয়া যাবে। আকাশের শিশির ও জমিতে পানি পর্যাপ্ত থাকলে কচুর লতি তারাতারি বৃদ্ধি পায়।
বাগজানা ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের কৃষক সুবাস চন্দ্র বলেন, কচুর লতির উপরে আমরা বহুবার পাঁচবিবি কৃষি অফিসে প্রশিক্ষন পেয়েছি, তাই কচুর লতি চাষে আমাদের সুবিধা হয়। লতির পাশাপাশি কান্ডও উৎপাদন হয়, এতে কৃষকদের ভাগ্য অনেকটাই বদলাতে শুরু করেছে। আমি এবার ১৫ কাঠা জমিতে কচুর লতি আবাদ করেছি। অনাবৃষ্টির কারনে সপ্তাহে একদিন করে লতি সংগ্রহ করা হচ্ছে। বৃষ্টি থকলে সপ্তাহে দুইদিন করে কাটতে হতো। পাইকাররা এসে আমার বাড়ি থেকে লতি ৪০ টাকা কেজি দরে লতি নিয়ে যাচ্ছে, পাঁচবিবির উপজেলার সবচেয়ে বড় কচুর লতির ক্রয় বিক্রয়ের হাট- বালিঘাটা ইউনিয়নের “বটতলী লতিহাটি”তে। সেখান থেকে ট্রাক যোগে ঢাকার কাওরান বাজার সহ দেশের অন্যান্য জায়গায় চলে যাচ্ছে পাঁচবিবিতে উৎপাদিত কচুর লতি।
বটতলী লতিহাটির আরতদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এবার বৃষ্টির পরিমান কম হওয়ায়, লতির উৎপাদন কিছুটা কম হচ্ছে। কচুর লতির পূর্ণ মৌসুমে প্রতিদিন ৩-৪ ট্রাক করে তারা লতি পাঠাতো, তবে উৎপাদ কম হওয়ায় ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় ২ ট্রাক করে লতি প্রতিদিন ঢাকায় পাঠাচ্ছেন। লতির পাইকার মুমিন ও রনি বলেন পাঁচবিবির বটতলীতে এ লতির বাজার থেকে সিজন টাইমে প্রতিদিন ৬০-৭০ টন লতি দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠান তারা। বর্তমান কৃষকদের কাছ থেকে প্রকার ভেদে প্রতি কেজি লতি ৪০-৫০ টাকা দরে ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠিয়ে দিচ্ছেন। তবে পূর্ণ মৌসুমে লতির দাম কিছুটা কমে ২০-৩০ টাকা প্রতি কেজিতে নামতে পাবে। ডিজেলের দাম বাড়ায় পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চাষি ও পাইকাররা রিতীমত বিপাকে পড়েছে। পাঁচবিবিতে উৎপাদিত কচুর লতির প্রধান পাইকারী বাজার ঢাকার কারওয়ান বাজার। সেখান থেকে চলে যাচ্ছে যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তা, নারায়ণগঞ্জ, সাভার, বাইপাইল। পাঁচবিবির কচুর লতি স্থানীয় চাহিদা মিটায়েও ট্রেন যোগে চলে যাচ্ছে টাঙ্গাইল, দৌলতপুর, রাজশাহী, নাটোর, রংপুর, ঠাকুরগাঁ, পঞ্চগড়, দিনাজপুর,বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।
এ বিষয়ে পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফর রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন এই মৌসুমে ৫৫০ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, ইরি ধান ঘরে তোলার পরে নতুন কিছু জমিতে কচুর লতি চাষ করা হবে বলে তিনি জানান।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!