সুনামগঞ্জের ছাতকে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমের টানে রাজধানী
ঢাকা থেকে ছুটে আসলেন প্রেমিকা। প্রতারক প্রেমিকসহ প্রেমিকের বাড়ির লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে অবশেষে একাই ফিরলেন গন্তব্যে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পুরান মৈশাপুর গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার উত্তর খুরমা ইউনিয়নের পুরান মৈশাপুর গ্রামের আরশ আলীর ছেলে দুবাই প্রবাসী লোকমান আহমদের সাথে তিন বছর নয় মাস আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় ঢাকার ওয়ারলেস এলাকার ভাড়াটে বাসিন্দা ইভা আক্তারের সাথে। এক পর্যায়ে যুবতী ইভা আক্তারের সাথে লোকমান প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। চলে দিন-রাত ফোনালাপ। কমিটমেন্ট হয় বিয়ে করে তারা সংসার করবেন। কত স্বপ্ন ছিল তাদের। প্রায় সাড়ে তিন বছর তারা মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে কথা-বার্তা চলে আসছিল। ইভা আক্তার স্থানীয় সাংবাদিকদের জানায়, লোকমান দেশে এসে তাকে বিয়ে করে সুখের সংসার করার আশ্বাস দিয়ে আসলেও গত চার মাস ধরে কথা হয়নি। ইমুসহ যোগাযোগের মাধ্যমগুলো ব্লক করে রাখছে লোকমান। এর মধ্যে বিকাশের মাধ্যমে প্রেমিক লোকমান প্রেমিকা ইভার কাছ থেকে প্রায় পাঁচলাখ টাকা নিয়েছেন কিন্তু টাকা ফেরত দেয়নি।
সম্প্রতি তিনি জানতে পারেন লোকমান দুবাই থেকে বাংলাদেশে এসে বিয়ের পিড়িতে বসছে। এমন সংবাদ পেয়ে প্রেমিকা ইভা আক্তার ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার সকালে তার প্রেমিক লোকমানের বাড়িতে উপস্থিত হয়। কিন্তু প্রতারক প্রেমিক সহ তার পরিবারের লোকজন বিষয়টি মেনে না নিয়ে মারধর করে প্রেমিকাকে স্থানীয় কাঞ্চনপুর গ্রামের সানোয়ার নামের জনৈক এক ব্যক্তির হাতে দিয়ে দেয়। বিষয়টি ধামাচাপা দিতে অসৎ উদ্দেশ্যে প্রেমিকাকে সে কাঞ্চনপুর বাজারের মঈন উদ্দিনের ইসলামিয়া ফার্মেসীতে আটকে রাখে। এমন সংবাদ পেয়ে ওইদিন বিকেলে স্থানীয় সাংবাদিকরা অনুসন্ধান করে প্রেমিকাকে ওই ফার্মেসী থেকে উদ্ধার করে ইউপি সদস্য নূর উদ্দিনের জিম্মায় রেখে আসেন। পরবর্তীতে প্রেমিক লোকমানসহ তার পরিবারের লোকজন হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়ে নিলে বিয়ে না করে থানা পুলিশের মাধ্যমে প্রেমিকাকে তার বোন ও দুলাভাইয়ের জিম্মায় দেওয়া হয়।
এদিকে, শুক্রবার প্রেমিক লোকমান অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে। এ বিষয়ে ইউপি সদস্য নূর উদ্দিন বলেন, ছেলে মেয়েটির কাছে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় মেয়েটি ক্ষমা করে দিয়েছে।
এ বিষয়ে প্রেমিকা ইভা আক্তার বলেন, প্রেমিক তার সাথে প্রতারণা করায় বিয়ে করেন নি। পাওনা পাঁচ লাখ টাকা দিতে না পারায় প্রেমিক লোকমানসহ তার পরিবার ক্ষমা চাওয়ায় তিনি ক্ষমা করে দিয়েছেন। ছাতক থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক পিয়াস জানান, মেয়েটির কোন অভিযোগ না থাকায় তার স্বজনদের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।