অল্প শ্রমে ও কম খরচে সব শ্রেণির মাটিতে উৎপাদন হওয়ায় তিল চাষে আগ্রহ বেড়েছে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার কৃষকদের। তিলের ব্যবহার বহুবিধ। ভোজ্য তেল ও তরকারি। তরকারী হিসাবে বাসা বাড়িতে যেমন তিলের চাহিদা বেড়েছে। তেমনি তিল থেকে তৈরি নাড়ু, খাজা, মোয়া সহ নানা মুখরোচক খাবারও বেশ জনপ্রিয়। পাশাপাশি প্রসাধনী শিল্পে তিলের তেল ব্যবহার হচ্ছে। সব মিলিয়ে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন আশা করছেন কৃষকরা।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি অফিসে তিল চাষের সঠিক কোন পরিসংখ্যান না থাকলেও চলতি মৌসুমে উপজেলার বাগজানা, ধরঞ্জী, আয়মারসুলপুর ও বালিঘাটা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ২০—২২ হেক্টর পতিত জমি, রাস্তায় পার্শ্ববর্তি জায়গা ও জমির আইলে প্রচুর পরিমাণ তিল চাষ হয়েছে ।
তিল চাষে তেমন খরচ নেই। প্রতি বিঘা তিল চাষে হালচাষ ও সার সহ প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বিঘা জমি থেকে ৪ থেকে ৫ মন তিল পাওয়া যায় বলে কৃষকরা জানান। বাজারে মান অনুযায়ী প্রতি মণ তিল ৮ হাজার থেকে ১১ হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার দমদমা গ্রামের তিল চাষী আনিছুর রহমান এবার ৪ বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছেন। তিনি বলেন, তিল চাষে সার ও কীটনাশক তেমন লাগে না বললেই চলে। গরু—ছাগলে তিল তেমন একটা খায় না, তাই রক্ষণাবেক্ষণে খরচ হয় যত—সামান্য।
ধরঞ্জী গ্রামের তিল চাষী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি প্রায় এক বিঘা জমির আইলে তিল চাষ করেছি। মাঝে অন্যান্য সবজি রয়েছে। তিলের গাছ জমির বেড়া হিসাবে কাজ করে। একারনে ক্ষেতে গরু— ছাগল প্রবেশ করতে পারে না।
কাঁচনা গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ আলী জানায়, অন্যান্য ফসল তেমন না হওয়ায় ৮ শতক জমিতে তিল চাষ করেছি। বাড়ীতে সারা বছর ভর্তা হিসাবে খাওয়ার জন্য রেখে বাঁকীটা বিক্রি করে দিবো।
পাঁচবিবি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. লুৎফর রহমান বলেন, “তিলের বহুবিধ ব্যবহার থাকলেও ভোজ্য তেল হিসাবে কোলেস্টেরল মুক্ত উন্নত মানের তিলের তেল । সম্প্রতি উপজেলায় বিভিন্ন অঞ্চলে তিলের চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি বিভাগ কৃষকদেরকে সার্বিক পরামর্শ ও তিল চাষে উৎসাহিত করছে।”