জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার আওলাই ইউনিয়েনের শিরট্টি মোস্তফাবিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ফাজিল শাখা এমপিওভুক্ত করণের অজুহাতে অধ্যক্ষ মাও: আব্দুল বারীর বিরুদ্ধে ৮ লক্ষ টাকা ঘুষ গ্রহণ ও থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে উল্টো হয়রানী করার প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শিরট্টি গ্রামে তার নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছেন ভুক্তভুগী একই মাদ্রাসার অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী মরহুম হাজী জয়নুল হকের পুত্র মোঃ মতিয়ার রহমান। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বিগত ২০০২ সালের ১৮ই এপ্রিল শিরট্টি মোস্তফাবিয়া ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসায় অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী পদে সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে একই সালের ২৭ এপ্রিল থেকে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে কর্মরত আছি। এমতাবস্থায় বর্তমান অধ্যক্ষ মাওঃ আব্দুল বারী মাদ্রাসায় এক আলোচনায় আমি সহ আরো ২জন ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীকে ডেকে বলেন যে, আমাদের মাদ্রাসার ফাজিল শাখা এমপিও ভুক্ত করনে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ৮ লক্ষ টাকা দিতে হবে। কোন কারণে এমপিওভূক্ত না হলে টাকা ফেরত দিব। আমরা সরল বিশ্বাসে সরকারি বেতন পাওয়ার আশায় জমি বন্ধক রেখে ৩জন মিলে (প্রত্যেকে ২ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭০০ টাকা) মোট ৮ লক্ষ টাকা অধ্যক্ষকে দেই। কিছুদিন পর মাদ্রাসা পরিদর্শনে আসেন আরাবী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১জন পরিদর্শক। পরিদর্শন রিপোর্ট ভালো নেয়ার জন্য আমাদের ৩ জনের নিকট থেকে আরো ৩০ হাজার টাকা গ্রহণ করেন অধ্যক্ষ। কিছুদিন পর এমপিও ভুক্তির তালিকা প্রকাশ হলে দেখা যায়, আমাদের মাদ্রাসার ফাজিল শাখা এমপিও ভুক্তই হয়নি। তখন এমপিও ভুক্তি বাবদ দেয়া আমার টাকা ফেরত চাইলে অধ্যক্ষ ২ মাসের সময় নেন। এর কয়েকদিন পর আমার পদ (অফিস সহকারী কাম হিসাব সহকারী) সহ আরাবি কম্পিউটার অপারেটর পদে ২জন চাকুরি প্রার্থীর নিকট থেকে গোপনে অধ্যক্ষ ও মাদ্রাসা কমিটি ১৫ লক্ষ টাকা করে মোট ৩০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন বলে জানতে পারি। এ সংক্রান্ত ২০২২ সালের ১০ই সেপ্টেম্বর দৈনিক মুক্ত সকাল ও দৈনিক জনতা পত্রিকায় মাদ্রাসায় শূন্য পদ উল্লেখ করে ১টি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন অধ্যক্ষ। এই নিয়োগের বিরুদ্ধে আমি জয়পুরহাট জজ কোর্টে ১টি মামলা দায়ের করি। যার নং-৪৪ /২০২৩ । মামলার প্রেক্ষিতে আদালত অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটিকে শোকজ করেন এবং নিয়োগ সংক্রান্ত স্থগিতাদেশ জারি করেন। এরপর আবারো আমাদেরকে এক আলোচনায় ডেকে বলেন যে, তোমার পদে তো আমরা নিয়োগ দিচ্ছি না। ঐ দুই পত্রিকায় সংশোধনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে বলেন যে, তুমি মামলাটি উঠিয়ে নাও, তোমার পদে নিয়োগ হচ্ছে না। আমি সংশোধনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ফটোকপি নিয়ে ওই তারিখের ঢাকা এবং বগুড়ার ওই দুই পত্রিকা সংগ্রহ করে দেখতে পাই যে, ওই তারিখে কোন সংশোধনী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশই হয়নি। আমার নিকট এমন জালিয়াতি করায় অধ্যক্ষের নিকট দেয়া আমার সমুদয় টাকা ফেরত চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। এ নিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে আমার বাক-বিতন্ডা ঘটে। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ আমার বিরুদ্ধে থানায় ১টি সাধারণ ডাইরী করে পুলিশকে লালিয়ে দিয়ে হয়রানি করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমি খুবই ভীত ও সন্ত্রস্ত। এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট বিচার প্রার্থনা করছি।