গাজীপুর শহরের আদাবৈ এলাকার নেক্সট এক্সপোর্ট জোন ফ্যাক্টরীর ঝুট নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফ্যাক্টরীর সামনে গোলাগোলি সংক্রান্ত ঘটনায় জিএমপি সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। জনৈক করিমা বেগম বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে শনিবার দুপুরের পর জিএমপি সদর থানা পুলিশ সমন্বয়ে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান পরিচালনা করে ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রধান আসামী রাকিবুল ইসলাম শাহীন ওরফে ব্লাক শাহীনসহ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। এ উপলক্ষে রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জিএমপি কার্যালয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রেসব্রিফিং করা হয়। প্রেসব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন- গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশানার অপরাধ (উত্তর) আবু তোরাব মোঃ শামসুর রহমান। উপস্থিত ছিলেন- জিএমপির এসি ডিবি (উত্তর) ও এসি মিডিয়া মোঃ আসাদুজ্জামান ও জিএমপি সদর থানার এসি ফাহিম আসজাদ।
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়- ১৬ জুন রোজ শুক্রবার সদর থানা এলাকার আদাবৈ এলাকার এক্সপোর্ট জোন ফ্যাক্টরীর সামনে ঝুট নেয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মাঝে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রসহ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ওই সময় জনৈক আতিকুর রহমান কোমরে এবং শাহাদাৎ নামের আরেকজন পেটে গুলিবিদ্ধ হয়। আহতদেরকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। যার সংবাদ বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচার হলে ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জনৈক করিমা বেগমের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় মামলা নং- ২৫, তাং- ১৭/০৬/২০২৩ রুজু করা হয়। অতপর সদর থানা ও ডিবি পুলিশ সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে ছোট দেওড়া থেকে উক্ত ঘটনায় প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে গাজীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী ১৯ মামলার আসামী রাবিবুল ইসলাম শাহীন ওরফে ব্লাক শাহীনসহ তার সহযোগি ৯জনকে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেসব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়- গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অন্যান্যরা হলেন- তড়ৎপাড়া গ্রামের আক্তার হোসেনের ছেলে মোঃ সাকিবুল হাসান (২২), ভোড়া গ্রামের ওয়াজ উদ্দিন মিয়ার ছেলে বিপ্লব (২২), ছোট দেওড়া গ্রামের হেলাল উদ্দিনের ছেলে মোঃ রাকিবুদ্দিন (১৮), একই গ্রামের আজিজুল হকের ছেলে মোঃ শাহজাহান (২৭), রহিমের ছেলে রায়হান মাহমুদ (২৭), ওলিউল্লাহর ছেলে মনির হোসেন (২৮), দক্ষিণ ছায়াবিথীর আনোয়ার হোসেনের ছেলে খাইরুল (২৭) সর্ব থানা জিএমপি সদর ও জিএমপি পূবাইল থানার তেলীনগর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে হৃদয় (১৮)।
পুলিশ আরো জানায়- গ্রেফতারের পর শাহীনকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে তার দখলে থাকা ছোট দেওড়া এলাকার তার পরিচালিত ডিস ও ইন্টারনেট ব্যবসার অফিসে রোববার রাত সোয়া ২ টার পর অভিযান চালিয়ে অফিস কক্ষের সোফার নীচ থেকে লোহার তৈরী বিদেশী ১টি পিস্তল, ১টি ম্যাগজিন ও ১রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। ফলে শাহীনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও পুলিশ বাদী একটি মামলা অস্ত্র আইনে রুজু করা হয়। যার মামলা নং- ২৬, তাং- ১৮/০৬/২৩ ইং।
পুলিশের তথ্য মতে- গাজীপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী রাকিবুল ইসলাম শাহীন ওরফে ব্লাক শাহীন এর নামে গাজীপুরের বিভিন্ন থানায় ছিনতাই, চাঁদাবাজী, মাদক, ধর্ষণ, খুন ও অস্ত্র মামলাসহ মোট ১৯ টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ মামলায় সে চার্জশিটভুক্ত আসামী।