পৈত্তিক সম্পত্তি নদী গর্ভে বিলীনের পর সাত বোন আর তিন ভাই নিয়ে মাথা গোজার ঠাই না পেয়ে আশ্রয় নেন একসময়ে নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পর জেগে উঠা নতুন চর মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চর লক্ষী গ্রামে। নতুন চরে দশ বছর ধরে কৃষি শষ্য ফলনে চলছে তার সংসার। হঠাৎ একটি ভূমিদস্যু চক্র তাদের উচ্ছেদ করতে মরিয়া। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে প্রতিবেদককে এসব কথা জানাচ্ছেন ভূমিহীন হতদরিদ্র মো. রাসেদ। তার মতো প্রায় ৭০টি পরিবার প্রতিবেদককে দেখে চিৎকার করে বলতে থাকেন আমাদের মাথা গোজানোর সুযোগ চাই।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ৫০-৬০ বছর আগে নদী ভাঙনে বিলিন হয়ে গিয়েছিল নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের চরলক্ষী গ্রাম। তখন এসব জমির মালিক ছিলেন হিন্দু সস্প্রদায়ের লোকেরা। সে সুত্রে গ্রামের নামকরণ করা হয় চর লক্ষী। নদী ভাঙনের ফলে প্রকৃত জমির মালিকরা দেশ বিদেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলে যান। নদী ভাঙনের প্রায় ৩০ বছর পর জেগেছে নতুন চর। বসতি শুরু হয়েছে ২০ বছর ধরে। নতুন চর জেগেছে এমন খবর হয়তো জানেন না জমির মালিক কিংবা উত্তসুরীরা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, এসব জমি কিছু ভুমি দস্যু বছর বিশেক আগে নাম মাত্র মুল্যে বিক্রি করেছে কিছু ভুমিহীন পরিবারের কাছে। ফলে এসব জমি চাষাবাদ করে ভূমিহীনরা তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে। কিন্ত হঠাৎ স্থানীয় একটি ভূমিদস্যু চক্র ভূমিহীনদের এসব জমি প্রকৃত মালিক না হয়েও জোরপূর্বক দখল করে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করেন,
স্থানীয় ভূমিহীন ও জনপ্রতিনিধিদের অগোচরে এসব জমিতে হঠাৎ ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কাটা শুরু করায় সবার মাঝে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ভূমিহীনরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মহি উদ্দিন চৌধুরীকে বিষয়টি অবহিত করলে স্থানীয় তহসিলদার মাটি কাটার কাজ স্থগিত করে দেন।
স্থানীয় ভূমিহীন শামসুন নাহার, রাসেদা বেগম, লাভলী আক্তার, নুর জাহানসহ আরো অনেকে জানান , তাদের বসতকৃত এসব জমি একটি প্রভাবশালী মহল ভূয়া দলিল করে বিক্রি করে দেয়। ৮২ একর জমিতে প্রায় ৭০টি পরিবার এখন সঙ্কায় সময় কাটাচ্ছেন। তারা স্থানীয় ইউপি, চেয়ারম্যান, উপজেলা ভূমিকর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করছে এ বিষয়ে।
এবিষয়ে স্থানীয় মোহাম্মদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মহি উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, একটি ভূমিদস্যু চক্র জাল দলিল করে ভূমিহীনদের জমি বিক্রি করাটা সম্পুর্ণ বেআইনি। জমির প্রকৃত মালিক তারা নন। এবিষয়ে তিনি সুবর্ণচর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা অশোক বিক্রম চাকমাকে অবহিত করেছেন। তাদের নিদের্শে ভূমি দখল বন্ধ শ
থাকলেও পরবর্তীতে এ ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের কথাও জানিয়েছেন এ ইউপি চেয়ারম্যান।