সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
পাঁচবিবিতে আলোচনার শীর্ষে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রাজিনারা টুনি সীতাকুণ্ডে লোকালয় থেকে ব্রিটিশ আমলের গ্রেনেড উদ্ধার নতুন সিনেমায় সোহেল মন্ডল-আইশা খান শুক্রবার সারাদেশে মুক্তি পাচ্ছে ‘সুস্বাগতম’ দাকোপ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পদে ২ জনের প্রার্থিতা প্রত্যাহার পাঁচবিবিতে কৃষি মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত খুলনার দাকোপের বাজুয়া চুনকুড়ি দাসপাড়ায় পরকিয়ার জের ধরে গৃহবধুর আত্নহত্যার ঘটনার ভিন্ন মত পোষন করেছে শংকর দাস কচুয়ায় তালা মার্কা ভোট চেয়ে বিরামহীন মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন সাংবাদিক রাকিবুল হাসান পাঁচবিবিতে উপজেলা নির্বাচনে প্রচারে অংশ নেয়ায় বিএনপির ২ নেতাকে অব্যাহতি দেশে ১১০টি প্রতিবন্ধী সহায়তা সেবা কেন্দ্র রয়েছে: রংপুরে দীপু মনি কালীগঞ্জে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালিত পূবাইলে গার্মেন্টস শ্রমিককে পিটিয়ে ছিনতাই রায়পুর উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করায় এমপির বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান প্রার্থীর সংবাদ সম্মেলন খুলনার দাকোপের লাউডোব ইউনিয়নের ২০২৪-২৫ উন্মুক্ত বাজেট অধিবেশন অনুষ্ঠিত পাঁচবিবিতে অনাবৃষ্টি জনিত লিচুর ফলন হ্রাস, বাগান মালিকের মাথায় হাত
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

সরকারের কাছে এখনও ৯০ হাজার মামলার জট-দৈনিক বাংলার অধিকার

অনলাইন ডেক্সঃ দৈনিক বাংলার অধিকার / ১৭৩ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: বুধবার, ৯ নভেম্বর, ২০২২, ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ

উচ্চ আদালতে বিচারাধীন সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন আইন-সংক্রান্ত মামলাটি বেশ সাড়া জাগানো। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনের মাধ্যমে উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে নেওয়া হয়। এই সংশোধনের বিরুদ্ধে রিট হলে হাইকোর্ট সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেন। আপিল বিভাগও হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন। এর পর সরকারের পক্ষ থেকে রিভিউর অনুমতি চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এখন মামলাটি রিভিউ নিষ্পত্তির অপেক্ষায়। অর্থাৎ অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে মামলাটি ঝুলছে।

মোবাইল কোর্ট-সংক্রান্ত আইনের মামলাটিও আলোচিত। ২০০৯ সালে প্রণীত মোবাইল কোর্ট আইনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ১১ অক্টোবর এক ভুক্তভোগী রিট করেন। এ মামলায় ২০১৭ সালের ১১ মে হাইকোর্ট সরকারের বিরুদ্ধে রায় দেন। মামলাটি এখন আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায়। অর্থাৎ গেল পাঁচ বছরেও মামলাটির শুনানি হয়নি।

হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে এ রকম সরকার-সংশ্নিষ্ট ৯০ হাজারের মতো মামলা নিয়ে লেজেগোবরে পরিস্থিতিতে পড়েছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এই বৃত্ত থেকে বের হতে বড় উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। মামলা কমিয়ে আনতে সরকারের ৫৬ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং ৮ বিভাগীয় কমিশনার অফিসসহ সব দপ্তর-সংস্থা থেকে সব মামলার (সরকার-সংক্রান্ত) তথ্য নেওয়া হয়েছে। গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, উচ্চ আদালতে এ বিষয়ক মামলার সংখ্যা ৯০ হাজার ৮২। এর মধ্যে ১ হাজার ৮৯৫ মামলাকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

আগামীকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে ‘উচ্চ আদালতে চলমান সরকারি স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট মামলা পরিচালনা কার্যক্রম পরিবীক্ষণ কমিটি’র বৈঠক বসতে যাচ্ছে। তথ্য বলছে, দুই হাজারের বেশি মামলা আছে আট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। এক হাজারের বেশি মামলা আছে ছয়টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের। মামলায় সবচেয়ে এগিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। এ বিভাগের মামলার সংখ্যা ১৭ হাজার ৪৫৭টি। ১১ হাজার ৯৫১ মামলা নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগের ৬ হাজার ৮৩৪, অর্থ বিভাগের ৫ হাজার ৪১৮, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশন অফিসের ৫ হাজার ১৬, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ৩ হাজার ৫৯ মামলা আছে। এক থেকে দুই হাজারের মধ্যে মামলা রয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, ঢাকার বিভাগীয় কমিশন অফিস, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, বিদ্যুৎ বিভাগ এবং স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে।

অন্যদিকে মামলার নিষ্পত্তির দিক থেকে এগিয়ে আছে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, আইন ও বিচার বিভাগ; এদের কোনো মামলাই নেই। কমসংখ্যক মামলা থাকা মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর মধ্যে রয়েছে- অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (একটি), মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (ছয়টি), পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় (চারটি), পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (ছয়টি), পরিকল্পনা বিভাগ (৯টি) ও আইএমইডি (চারটি)।

সংশ্নিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোতে আইন-সংক্রান্ত কর্মকর্তাদের অবহেলা, আদালতের দীর্ঘসূত্রতা, বেসরকারি স্বার্থ-সংশ্নিষ্টদের ছলচাতুরীসহ বিভিন্ন কারণে এসব মামলা নিষ্পত্তি না হয়ে দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল। বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আইন অনু বিভাগ উচ্চ আদালতের মামলাগুলোর সার্বিক বিষয় দেখভালের সিদ্ধান্ত নেয়।

আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, উচ্চ আদালতে থাকা সরকারের স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট মামলাগুলোর বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সলিসিটর উইং থেকে ঠিক মতো পদক্ষেপ নিলে এত মামলা জমা হতো না। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছে। তবে এটি নির্ভর করবে সলিসিটর উইং বিষয়গুলোকে কতটা দক্ষতার সঙ্গে শেষ করতে পারে, তার ওপর। সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তাদের কেউ কেউ অভিযোগ করেন, সলিসিটর উইং থেকে যেভাবে মামলার বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া দরকার, তা ঠিক মতো নেওয়া হয় না। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর রুনা নাহিদ আকতার কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে আইন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমকালকে বলেন, বিষয়টি শুধু সলিসিটর উইংয়ের ওপর চাপালে হবে না। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় থেকে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার ঘাটতি রয়েছে। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, সলিসিটর উইং নিজেরা মামলা শুনানি করে না, অনেকটা সমন্বয়ের কাজ করে। এই ক্ষেত্রে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঠিক তদারকি থাকলে মামলার ঝামেলা দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়ার পথ সুগম হয়।

আলোচ্যসূচিতে যা আছে :মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে পাওয়া সংখ্যা থেকে অতি গুরুত্বপূর্ণ মামলা আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মামলার তালিকা সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগে পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কালকের বৈঠকে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য কীভাবে উদ্যোগ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে কমিটি দিকনির্দেশনা দেবে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ চিহ্নিত মামলাগুলোর বিষয়ে কমিটির পক্ষ থেকে পর্যবেক্ষণ চাওয়া হবে। সে অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে নিজ নিজ মন্ত্রণালয় ও বিভাগ। মামলা-সংক্রান্ত কাজের অগ্রগতি সময়ে সময়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাবে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো। এ বিষয়গুলো দেখভাল করে প্রয়োজন মনে করলে নতুন নতুন নির্দেশনা দেবেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। সংগৃহীত মামলার তথ্য বিশ্নেষণ করতে গিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দেখেছে, বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের একই বিষয়ের ওপর একাধিক মামলা চলছে। এসব মামলা একত্র করে একসঙ্গে শুনানির ব্যবস্থা করা হবে। এতে করে অনেক বিরোধ একসঙ্গে নিষ্পত্তি হবে, সেই সঙ্গে আদালতের ওপর চাপ কমবে।

সরকারের বিরুদ্ধে সরকারি মামলা :এবারের বৈঠকে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের বিরুদ্ধে সরকারেরই অপর মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মামলা-সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। সংশ্নিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উল্লেখিত বিপুল সংখ্যক মামলা পর্যালোচনা করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ দেখতে পেয়েছে, সরকারি-স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো একটি আরেকটির বিরুদ্ধে নানা কারণে মামলায় জড়িয়েছে। এতে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের মামলা টানতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের টাকা গচ্চা যাচ্ছে। সেই সঙ্গে শ্রম ও সময়ের অপচয় হচ্ছে। এসব কারণে সংশ্নিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজে সময় দিতে পারছেন না। এই সমস্যা থেকে উত্তরণে সরকারি বিরোধ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত কমিটিতে সুরাহার নির্দেশনা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হবে।

মন্ত্রিপরিষদের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের (সমন্বয় ও সংস্কার) নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বিরোধ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত একটি কমিটি আছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বিরোধগুলো আদালতে না গিয়ে ওই কমিটিতে পাঠিয়ে দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব। এতে অনেক মামলার সংখ্যা কমে আসবে, খরচও বাঁচবে।

মামলা তদারকিতে সফটওয়্যার :সরকারের সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মামলা-সংক্রান্ত বিষয়গুলোর নিয়মিত হালনাগাদ তথ্য পেতে একটি সফটওয়্যার নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। ‘গভর্নমেন্ট কেস ম্যানেজম্যান্ট সিস্টেম (জিসিএমসি)’ শীর্ষক এ সফটওয়্যার নির্মাণের প্রাথমিক খসড়াও প্রস্তুত হয়েছে। সংশ্নিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের তত্ত্বাবধানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় জিসিএমসি সফটওয়্যার খসড়ার সংক্ষিপ্ত রূপরেখা কালকের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। উপস্থিত কর্মকর্তাদের পরামর্শ নিয়ে প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজনের মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে সফটওয়্যারটি।

এ-সংক্রান্ত মামলার একটি বৈঠক গত বছরের নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতিসহ আগামী দিনে মামলা কমিয়ে আনতে কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায়, তা নিয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে আলোচনা হবে।
বৈঠক সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, সরকারের স্বার্থ-সংশ্নিষ্ট মামলা নিয়ে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে একাধিকবার তাগিদ দেওয়ায় তালিকাটি তৈরি হয়েছে। এখন সফটওয়্যারের মাধ্যমে মামলা ব্যবস্থাপনার কাজটি তদারকি করা হবে। এতে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা এতদিন প্রয়োজনীয় কাজ না করে যে সমস্যা তৈরি করেছেন, সেটা কমিয়ে আনা যাবে। এতে সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকার স্বার্থ রক্ষা হবে।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!