বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১ রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। দেশ চালাবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সনাতনীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকলকে একত্রিত হতে হবে ছাগলনাইয়া সেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ মুন্সীগঞ্জে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্নয়
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন ও শেখ হাসিনার নীতি ও পরিকল্পনা সফল করাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য-দৈনিক বাংলার অধিকার

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৯৯ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: সোমবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ৭:০৯ পূর্বাহ্ণ

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের রাজনীতিতে এসে যা দিয়েছেন তার তালিকা যেমন বিশাল, তেমনি আমাদের রাষ্ট্র, রাজনীতি, অর্থনীতি, সমৃদ্ধ ইতিহাস ঐতিহ্যের পথচলায় এক সময় নতুন করে মূল্যায়নের বিষয় হয়ে উঠবে।

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিশ্লেষকরা যখন গভীরভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করবেন তখন তাকে একজন আত্মত্যাগী অনুসরণীয় রাজনীতির মানুষ ও নেতা হিসেবে খুঁজে পাবেন। আমি সেই বিশ্লেষণে যাচ্ছি না। ভবিষ্যতের জন্য সেটি থাক। তবে আমার কাছে দলীয় রাজনীতির বাইরে একজন পর্যবেক্ষক হিসেবে মনে হয় শেখ হাসিনা যে কথাগুলো তার দলের নেতাকর্মীদের জন্য প্রায়ই বলে থাকেন সেগুলো অনুধাবন করা, পালন করার নেতা ও কর্মী কতটা আছেন তা নিয়ে মাঝেমধ্যে আমার মধ্যেও দ্বিধা হয়।

চারপাশে যখন তাকাই তখন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জীবন-জীবিকা ইত্যাদির সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কিংবা শেখ হাসিনার ত্যাগের ছিটেফোঁটা প্রভাবও পড়তে দেখি না। এখন কেন যেন সবকিছুতেই বৈষয়িক লাভালাভের বিষয়টি বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে প্রবল হয়ে উঠেছে। আমি বলি না রাজনীতি করে নিজের সবকিছু উজাড় করে দেয়ার প্রয়োজন খুব একটা পড়ে বলে মনে হয় না।

নিজের যা আছে তা রেখে দেশ এবং জাতির জন্য কাজ করার মনোবৃত্তি এখন রাজনীতিতে যেন ভীষণভাবে কমে গেছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত আছেন এমন অসংখ্য মানুষ প্রতিদিনই শেখ হাসিনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কথা খুব আবেগের সঙ্গে উচ্চারণ করেন। তারা শেখ হাসিনার আদর্শ বাস্তবায়নের কথাও প্রতিদিন উচ্চারণ করে থাকেন। এটি ভালো কথা যারা আওয়ামী লীগ করবেন তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নে শেখ হাসিনার নীতি ও পরিকল্পনা সফল করার কাজে আত্মনিয়োগ করবেন এটিই তো আমাদের কাছে প্রত্যাশার বিষয়। তাদের দলীয় কাজকর্মের উদ্দেশ্যও তাই হওয়ার কথা। তাহলেই তো আওয়ামী লীগ তৃণমূল পর্যায়ে আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে, জনগণের কাছে সমাদৃত হতে পারে।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক উন্নতি, সমৃদ্ধ আওয়ামী লীগের আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটলে অবশ্যই দৃশ্যমান হয়ে উঠবে। কারণ আওয়ামী লীগ উদার গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, অসাম্প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী, বৈষম্যহীন অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের যে নীতি-আদর্শে প্রতিষ্ঠিত দল- যার ভিত্তি স্থাপন করে গেছেন বঙ্গবন্ধু, বাস্তবায়নে হাল ধরেছেন শেখ হাসিনা। সেই দল বাংলাদেশে রাজনীতিতে যতবেশি সফল হবেন বাংলাদেশে ততবেশি ওইসব আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটবে। এই বাস্তবায়নটি ঘটবে যদি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলের ঘোষিত নীতি আদর্শ, পরিকল্পনা মতো কাজ করেন। এর জন্য তৃণমূল থেকে উপর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সততার সঙ্গে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই। শেখ হাসিনা তো তাদের সম্মুখেই জ্বলন্ত উদাহরণ হয়ে কাজ করছেন।

কিন্তু তারা কি শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করছেন? মনে হয় না। তেমনটি খুব ব্যাপকভাবে দেশব্যাপী হচ্ছে না। স্থানীয় পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বড় অংশই নিজেদের আখের গোটাতে ব্যস্ত বলে অভিযোগ আছে। আওয়ামী লীগের কোনো কর্মকাণ্ড গ্রামে বা উপজেলা পর্যায়ে খুব একটা দেখা যায় না।

কোনো নির্বাচন এলেই এজন-সেজন বিভিন্ন পদের প্রার্থী হওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক বলে জাহির করতে থাকেন, পোস্টারে পোস্টারে এলাকা ছেয়ে দেন, কিন্তু জনগণের সঙ্গে তাদের কয়জনের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক আছে সেই মূল্যায়ন করার সুযোগ তো দলের মধ্যে দেখা যায় না। সবাই দলকে ব্যবহার করে কিছু একটা হতে চান। আবার দলে যারা যোগ্য আছেন কিংবা সৎ নিবেদিত আছেন তাদের এগিয়ে দিচ্ছেন বলে মনে হয় না।

একটা অসুস্থ প্রতিযোগিতা সর্বত্র লক্ষ করা যাচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রশাসনে তাদের কর্তৃত্ব করার যে মানসিকতা তাতে দল ও রাজনীতির স্বার্থের চাইতে ব্যক্তিগত লাভ ও ক্ষমতার সিঁড়ি স্থাপন করার উদগ্র বাসনাই প্রাধান্য পাচ্ছে। এরা আসলেই এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে দলের গ্রহণযোগ্যতা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার চেয়ে সাধারণ মানুষকে বিরূপ মনোভাবাপন্ন করতেই বেশি ভূমিকা রাখছেন।

লক্ষ করুন, ফেনীর মাদ্রাসা ছাত্রী নুসরাতের মাদ্রাসা কমিটি অধ্যক্ষের অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকা, মাদ্রাসার অর্থ লোপাট ইত্যাদিতে যুক্ত থাকা, নিরপরাধ নুসরাতের হত্যাকারীদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান, ইত্যাদিতে যাদের ভূমিকা বলিষ্ঠ ছিল তারা স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা বলে জানাজানি হয়েছে। এতে আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি কতটা ক্ষুণ্ন হয়েছে তা সহজেই অনুমেয়। এমন পরিস্থিতি শুধু ওই মাদ্রাসাকেন্দ্রিকই নয়।

দেশব্যাপী অনেক জায়গাতেই কমবেশি রয়েছে। আসলেই এই মানুষগুলো আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার আদৌ যোগ্যতা রাখেন কিনা সেই প্রশ্ন কি কেউ করেন? তাদের কি সেই ধরনের লেখাপড়া আছে? কিংবা সমাজে ভালো চিন্তা করার মতো তাদের সুখ্যাতি আছে কি? আমার তো মনে হয় অনেক জায়গাতেই আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের অনেকেরই সেটি নেই। অথচ তারাই দলের স্থানীয় পর্যায়ের পদ-পদবি দখল করে আছেন। এরকম নেতাকর্মীর সংখ্যা খুব বেশি থাকতে হবে এমনটি নয়। আওয়ামী লীগে সম্ভবত এখন এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়েছে যখন গ্রামেগঞ্জে নতুন প্রজন্মের শিক্ষিত, মার্জিত, দেশপ্রেমিক ছেলেমেয়েরা দলে প্রবেশ করার সুযোগ পাচ্ছে না। এর ফলে আওয়ামী লীগে ভালো নেতাকর্মী তৈরি হওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

ছাত্রলীগের কথা আমরা যা দেখি ও শুনি তাতে মনে হয় অনেক সম্ভাবনাময় তরুণ-তরুণী আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হতে এসে আদর্শের চর্চার ব্যবস্থাপনার অভাবে গতানুগতিক ধারাতে তারাও আদর্শ বিচ্যুত কর্মকাণ্ডে যুক্ত হয়ে পড়ছে। এ ধরনের প্রবণতা দূর করার উপায় হচ্ছে আওয়ামী লীগের দর্শন, রাজনীতি, কার্যক্রম, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ইত্যাদি নিয়ে অঙ্গ সংগঠনগুলোর মধ্যে ব্যাপকভাবে রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থাকা।

রাজনীতি শুধু বক্তৃতা দেয়ার জায়গা নয়, দলের আদর্শ জানা, বোঝা এবং এর প্রয়োগে নিজেকে সৎ, মেধাবী ও যোগ্য মানুষ হিসেবে যুক্ত করারও বিষয়। আমাদের রাজনীতিতে এখন আদর্শের চর্চা, চিন্তা ও মনন নেই, আছে শুধু প্রচার-প্রচারণা-বক্তৃতা। বঙ্গবন্ধুর লেখা বই, পুস্তক, ড্রয়িং রুমে সাজিয়ে রেখে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ধারক হিসেবে নিজেকে নেতাকর্মীদের কাছে প্রচার করা যেতে পারে কিংবা ড্রয়িং রুমে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ছবি টাঙিয়ে দেখানো যেতে পারে, কিন্তু ধারণ করার বিষয়টি একেবারেই শিক্ষাদীক্ষা ও সংস্কৃতির বিষয় যা নিরন্তর নেতাকর্মীদের করতে হয়।

বঙ্গবন্ধু এবং তার ঘনিষ্ঠ সহকর্মী রাজনীতিবিদরা, রাজনীতির লেখাপড়া কত ভালো জানতেন তা আমরা সেই সময়ে দেখেছি, শেখ হাসিনাকে দেখছি তিনি প্রয়োজনীয় লেখাপড়া শত কাজের মধ্যে চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে তো লেখাপড়ার সেই চর্চা খুব বেশি দেখা যায় না। তাদের অনেককেই স্থানীয় পর্যায়ের অনেক অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হতে দেখা যায়। তাহলে শেখ হাসিনার বক্তব্য আদর্শ চর্চার আহ্বান, বঙ্গবন্ধুর নীতি ও দর্শনের বাস্তবায়নের সুযোগ কোথায়?

আবু তালেব লিটন
তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক
হাজীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ,
চাঁদপুর।


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!