স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আজগর আলীর বসত ভিটা ও জমি দখলের চেষ্টায় বাড়ি ঘর ভাংচুর করে পরিবারটির সদস্যদের পথে বসিয়েছে এলাকার প্রভাবশালী একটি মহল।
ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, গত এক বছর পূর্বে ভুয়া দানপত্র দলিলের ভিত্তিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর বাড়ি ঘর ভাংচুর করার পর কেউ কোনো ভাবেই বিচার করেননি। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে নাগেশ্বরী থানা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অভিযোগ করাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন মরহম বীর
মুক্তিযোদ্ধা আজগর আলীর স্ত্রী মোছাঃ সুফিয়া বেওয়া।
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এ বিষয়ে কোনো সমাধান দিতে পারেনি কেউ।
জানা গেছে, গত ৮ জুন ২০২০ইং তারিখ সন্ধ্যা ৬ টার দিকে বিবাদীগণ পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ১৫- ২০জনের এক দল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ উক্ত মুক্তিযোদ্ধার বাড়িতে অতর্কিত ভাবে হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসীরা বসত বাড়ির ঘর দরজা ভাংচুর করে এবং মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সকল সদস্যদের হুমকি দিয়ে চলে যায়।
এ ব্যাপারে বাদী সুফিয়া বেওয়া অভিযোগ করে বলেন, এ সময় আমি বিবাদীগনকে বিভিন্নভাবে বুঝানোর চেষ্টা করেও তারা আমার কোনো কথার কর্নপাত না করে বাড়ী ঘর ভাঙ্গচুর করে প্রায় তিন লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন করে বসত বাড়ীতে থাকা সমস্ত মালপত্র লইয়া যায়। তিনি আরও বলেন, আমি এখন একজন ভুমিহীন ব্যক্তি। আমি নিরুপায় অবস্থায় পিতাহারা সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছি। ৫৬ শতক জমি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারকে গৃহহীন করে রেখেছে এলাকার প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা। বিষয়টি রহস্যজনক বলে অভিমত প্রকাশ করেন এলাকাবাসী।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত আজগর আলীর দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। তার ছোট মেয়ে মোছাঃ নাজমা খাতুন বলেন, আমাদের বসত বাড়ী ঘর ভাংচুর করার পর প্রথমে গ্রামের লোকজন মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। এরপর নাগেশ্বরী থানায় অভিযোগ করা হয়, থানা পুলিশ বিবাদীদের পক্ষে কাজ করায় কোনো বিচার পাইনি আমরা। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে জানানোর পর সেখান থেকে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু অদৃশ্য কারনে সেটিও থেমে যায়। এখন এই ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা কয়েকটি টিন দিয়ে তৈরি একটি ছাপড়া ঘরে বসবাস করছে। ভুক্তভোগীরা অনাহারে, অর্ধাহারে খেয়ে না খেয়ে থেকে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে তারা জানান। তাই বাধ্য হয়ে আবারও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগী পরিবার।
একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা’র মৃত্যুর পর-তার পরিবারের উপর অমানবিক নির্যাতন ও বসত বাড়ী ঘর ভাংচুর এর ঘটনা জাতির কাছে লজ্জাজনক। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাসহ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করছেন সচেতন মহল।