সোহেল চৌধুরী রানা, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে বাল্যবিবাহ দেওয়ার অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতে দুই জন অভিভাবকের ৬ (ছয়) মাসের বিনাশ্রম কারান্ডাদেশ প্রদান করা হয়েছে।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেচ ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) কল্যান চৌধুরী। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার সময় ইউএনও’র কার্যালয়ে এ রায় প্রদান করেন।
জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার পাতাড়ী ইউনিয়নের কলমুডাঙ্গা গ্রামের আকতারুল ইসলামের ৮ম শ্রেণীতে পড়ু মেয়ে খালেদা খাতুন (১৫) কে একই ইউনিয়নের বড় বৈকন্ঠপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে রবিউল ইসলাম (১৯) এর সাথে রেজিস্ট্রেরী ছাড়াই গ্রাম্য মৌলভী দ্বারা বিবাহ দেওয়া হয়। সে মোতাবেক বৃহস্পতিবার দুপুরে ছেলের বাড়ী বড় বৈকন্ঠপুর গ্রামে চলে বিয়ে বাড়ীর খাওয়া দাওয়ার উৎসব।
ওই বিয়ে বাড়ীর খাওয়ার অনুষ্ঠানে গ্রাম্য মুরুব্বী সহ দাওয়াতের সকল আত্মীয় স্বজন এবং মেয়ে পক্ষের লোকজনেরাও এসেছিল। ঠিক এই মহুর্তে বাল্যবিবাহের খবরটি পৌঁছে যায় সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট।
সঙ্গে সঙ্গে তিনি থানা থেকে ফোর্স পঠিয়ে দেয় সেই অনুষ্ঠানে। পুলিশ যাওয়ার আগেই খবর পৌঁছে যায় অনুষ্ঠানে, তড়ি ঘড়ি করে মেয়ে পক্ষের লোকজন ও দাওয়াতী মেহমানগন সরে পড়ে ঘটনাস্থল হতে।
পুলিশ সেখানে গিয়ে পেন্ডেল, গামলা ভর্তি ভাত তরকারী (মাংস) সবই দেখতে পেলেও গ্রামবাসী ছাড়া কাউকে দেখতে পায়নি। বিয়ের বর কনে সহ সকলেই পালিয়ে গেলেও বাড়ীতে অবস্থান রত ছেলের মা এবং ছেলের নানাকে পুলিশ ধরে নিয়ে আসে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর আদালতে।
সেখানে ছেলে মেয়ে উভয়ের জম্মসনদ পর্যালচনা করে বর কনে কারো বয়স না হওয়ায় অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দেয়ার অপরাধে ছেলের মা সামিনা বেগম (৪০) ও তার পিতা (ছেলের নানা) ওসমান গনি (৬৬) এর ৬ (ছয়) মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ প্রদান করেন।
রায় শেষে পুলিশ ওই দিনই উভয় আসামীকে নওগাঁ জেল হাজতে প্রেরণ করেন। উল্লেখ্য, ছেলের নানা ওসমান গনি উপজেলার আইহাই ইউনিয়েনের ইউপি সদস্য তার বাড়ী ওই ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে এবং তার উপস্থিতিতেই এই বিয়ে দেয়া হয়েছিল বলে অনেকেই জানিয়েছেন।
বিয়ের পরে হলেও এই দৃষ্টান্ত এলাকায় বাল্যবিবাহের বিপক্ষে বেশ প্রভাব ফেলবে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন তারা এজন্য নির্বাহী অফিসারকে ধন্যবাদও জানিয়েছেন।