মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, একুশে পদকপ্রাপ্ত ও বাংলা একাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত কথাসাহিত্যিক মরহুম খালেকদাদ চৌধুরী’র ৩৯ তম মৃত্যুবার্ষিকী শ্রদ্ধাভরে পালিত হয়।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) উনার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হয়। ঐদিন সকালে মরহুমের কবরে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে “বাংলাদেশ প্রেসক্লাব” নেত্রকোণা জেলা শাখাসহ সাহিত্য, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছোট্ট সোনামনিরা এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাগণ।
এসময় বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, নেত্রকোণা জেলা শাখার পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন, সংগঠনের উপদেষ্টা সদস্য সিনিয়র সাংবাদিক অরবিন্দ ধর, সহ- সভাপতি বুলবুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন তালুকদার, সাংবাদিক লাকী সরকার, সাংবাদিক সাদিয়া সুলতানা প্রমুখ।
বাদ আসর মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত ও সন্ধা ৬ টায় জেলা সাধারণ গ্রন্থাগার পাঠকক্ষে তাঁর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) বাবু বিপিন চন্দ্র।
সাধারণ গ্রন্থাগারের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান রন্জনের সভাপতিত্বে আলোচনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, কবি রতিষ মজুমদার উজ্জ্বল, অধ্যাপক বিধান মিত্র, প্রফেসর ননী গোপাল সরকার,বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আককাস আহমেদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, সিনিয়র সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল,শিখর সভাপতি আ ফ ম রফিকুল ইসলাম আপেল,বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক বাচ্চু,অধ্যাপক হরলাল সরকার, নেত্রকোণা গ্রন্হ পরিচয়ের প্রতিষ্ঠাতা মো:ইসহাক প্রমুখ।স্বাগত বক্তব্য রাখেন, গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হাসান খান অভ্র।
উল্লেখ্য যে, ১৯০৭ সালে খালেকদাদ চৌধুরী নেত্রকোণা জেলার মদন উপজেলার চানগাঁও তাঁর নানার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯২৪ সালে জেলার দত্ত উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক ও ১৯২৬ সালে কলকাতা রিপন কলেজ থেকে আই এ পাস করেন।পরে কলাকাতা ইসলামিয়া কলেজে ইংরেজি তে অনার্স ভর্তি হন।
১৯২২ সালে কলকাতা থেকে প্রকাশিত কবি বন্দে আলী মিয়া সম্পাদিত ‘বিকাশ’ পত্রিকায় তাঁর লিখা প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি কলকাতা করপোরেশনে একটি স্কুলে কিছুদিন শিক্ষকতা করার পর ১৯৪১ সালে তথ্য অফিসার হিসেবে সরকারি চাকুরিতে যোগদান করেন। তিনি কবি কাজী নজরুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন। ১৯৬১ সালে সরকারি চাকুরি ইস্তফা দিয়ে সাহিত্য চর্চায় মনোনিবেশ করেন। সে সময় নেত্রকোণায় “উত্তর আকাশ” নামীয় মাসিক সাহিত্য পত্রিকাও বের করেন তিনি।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বইগুলো হচ্ছে –রক্তাক্ত অধ্যায়,একটি আত্মার অপমৃত্যু, এ মাটি রক্তে রাঙ্গা ও শতাব্দীর দুই দিগন্ত ইত্যাদি। তিনি বিখ্যাত মরু-সাহারা,বেদুইনের মেয়ে নামের গ্রন্থের অনুবাদক।
বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলা একাডেমি ১৯৮৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার ও ২০১৮ সালে একুশে পদকে ভূষিত করেন।