রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার এক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক কলেজ ছাত্রীকে নিজের ফাঁকা বাসায় ডেকে এনে তিনদিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে । এঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। থানা ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫নং সয়ার ইউনিয়নের কাজীরহাট মধ্যপাড়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া মেয়ের মাস দুয়েক আগে বিয়ে হয় উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের পলাশবাড়ী গ্রামে। স্বামী ও পিতা উভয়ই দরিদ্র হওয়ায় নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজেই উপার্জন করার জন্য একটি চাকরি খুঁজছিলেন ওই যুবতী। সয়ার ইউনিয়নে তরুণীর বাড়ি হওয়ায় আগে থেকেই পরিচয় ছিল সয়ার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের সাথে। সেই পরিচয়ের সুবাদে চেয়ারম্যানকে জানিয়েছিল তার স্বপ্নের কথা। সেই দুর্বলতার সুযোগে চাকরি প্রার্থী ওই যুবতীকে রবিবার (১ অক্টোবর) তারাগঞ্জ পুরাতন চৌপথীতে অবস্থিত ফাঁকা বাসায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে কাগজপত্র সহ ডেকে নেন চেয়ারম্যান পাইলট। এরপর নানান টালবাহানা করে তিনদিন আটকে রেখে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন ওই তরুনীকে। ভুক্তভোগীর বাবা আবু বক্করের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মোর বেটির অনেক কষ্টে বিয়াও দিছুং মাস দুই আগোত। চেয়ারম্যান মোর বেটির সর্বনাশ করি দেইল। মোর বেটির তো আর ওই জাগাত সংসার হইবে না। হয় এখন মোর বেটিক চেয়ারম্যান বিয়াও করবে নাইলে এর সঠিক বিচার চাং। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বিয়ের সমস্ত খরচ গ্রামের সকলে মিলে চাঁদা তুলে বহন করে। হতদরিদ্র মেয়েটি কলেজের এইচএসসি ছাত্রী নিজের লেখাপড়ার খরচ নিজে উপার্জনের জন্য চাকুরী খুঁজতেছিলেন। তার এই দারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে ৫নং সয়ার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলট চাকরি প্রত্যাশী বুলবুলিকে তারাগঞ্জ পুরাতন চৌপতির নিজ বাসায় চাকুরী দেওয়ার কথা বলে ফাঁকা বাসায় ডেকে নেয়। সরল বিশ্বাসে ভুক্তভোগী চাকুরির আশায় চেয়ারম্যানের বাসায় গেলে চেয়ারম্যান তার মনের কু-বাসনা পূরণে মেয়েটিকে ধর্ষণ করেন। একজন চেয়ারম্যান যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটায় তাহলে সাধারণ মানুষ কার কাছে আশ্রয় নিবে প্রশ্ন এখন উপজেলার সর্বত্রই। ঘটনার বিষয়ে তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও ওসি তদন্ত জহুরুল হক বলেন, ভুক্তভোগী নিজে থানায় এসে এজাহার দায়ের করেন। মামলাটি নথিভুক্ত করে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য ভুক্তভোগীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। পলাতক থাকায় ওই চেয়ারম্যানকে এখনো গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি তবে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।এ ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন পাইলটের সাথে যোগাযোগের একাধিক বার চেষ্টা করে ও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।