শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড ও শিক্ষকরা হলেন এই মেরুদন্ড গড়ার কারিগর। একটি জাতি গঠনে শিক্ষকদের ভুমিকা অপরিসীম। শিক্ষকরা হচ্ছেন মানুষ গড়ার কারিগর। আর সে শিক্ষককেই একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় স্থাপিত উলুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী ও অপপ্রচারের মাধ্যমে মানহানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তার পরিবার।
উলুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির যুগ্ন-মহাসচিব মো. কামাল হোসেন ও তার নাম মাত্র ভাগিনা উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়ন উলুকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বায়জিদ আহমেদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকুরি দিবে বলে ১০লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে চাকুরি দেয়নি এমন অভিযোগ তুলে বাংলাদেশ সচিবালয়ের প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ জানিয়ে আবেদন করেছেন দাউদকান্দি উপজেলা মিনারদিয়া গ্রামের বাসিন্দা মাহমুদা আক্তার।
খোজ নিয়ে অনুসন্ধানে জানা যায়, মাহমুদা আক্তার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষিকা পদে চাকরির জন্য ২০২০ সালে আবেদন করেন এবং ২০২২ সালে ২২ এপ্রিল লিখিত পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করে। পরে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর কথিত পিয়ন পরিচয়ধারী সাদ্দাম ও ফিরোজ নামের দুই ব্যাক্তিকে মাহমুদা আক্তারের পিতা আব্দুর রশিদ বায়জিদ আহমেদ এর দ্বারা পরিচয় হয়ে মেয়েকে সহকারী শিক্ষিকা পদে নিয়োগ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে ঘুষের টাকা লেনদেন করে।
কিন্তু প্রমান হিসেবে তাদের কাছে থেকে কোন প্রকার ডকুমেন্টস নেয়নি পরে ঘুষ দিয়ে মেয়ের চাকুরি না হওয়ায় বাইজিদ আহমেদ কে আব্দুর রশিদ ২০২২ সালের ২৫ এপ্রিল তারিখে নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ড লিংক রোড এলাকায় ডেকে নিয়ে সন্ত্রাসীদের দ্বারা চাপ প্রয়োগ করে দাবি করেন টাকা লেনদেনের সময় তুমি উপস্থিত ছিলে তাই এই টাকার দায়ভার তোমার। এক পর্যায়ে ভয়ভিতি দেখিয়ে বায়জিদের এর কাছ থেকে ১০লাখ টাকা উল্লেখ্য করে জোরপূর্বক তিনশো টাকার স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয়। সে সময় ঘটনাস্থলে কামাল মাষ্টার উপস্থিত থাকায় চাপ প্রয়োগ করে তাকে ১নং সাক্ষী বানায়।
এ ঘটনার বিরুদ্ধে বায়জিদ আহমেদ বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মাহমুদা আক্তারের স্বামী আক্তার হোসেন ও তার পিতা আব্দুর রশিদ এর নামে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৪১৭/২০২২। মামলাটির রায় ও নিষ্পত্তি হয় সেখানে বায়জিদ আহমেদ ও কামাল মাষ্টার নির্দোশ প্রমানিত হয় এবং স্ট্যাম্প গুলোকে অবৈধ মর্মে আদালতে জমা করার নির্দেশ দেওয়া হয় বীবাদিকে। এর কিছু দিন পর আব্দুর রশিদ তার মেয়ে মাহমুদা কে দিয়ে কুমিল্লা বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে কামাল মাষ্টার কে জড়িয়ে একটি সিআর মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৯১৯/২২ । মামলার শুনানি শেষে মামলাটি পরিচালনা করার মত কোন তথ্য প্রমানাদী না পাওয়ায় মামলাটি আমলে না নিয়ে খারিজ করে দেন বিজ্ঞ আদালত। পরে নিম্ন আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে মাহমুদা আক্তারের পিতা আব্দুর রশিদ কুমিল্লা বিজ্ঞ জেলা দায়রা জর্জ আদালতে ফৌজদারি রিভিশন মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং ৯১/২৩ সেই মামলাটিতে আদালত নিম্ন আদালতের আদেশ বহাল রাখেন। পরবর্তীতে মাহমুদা আক্তার কোন উপায় না পেয়ে কামাল মাষ্টার কে জড়িয়ে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর অভিযোগ জানিয়ে আবেদন দরখাস্ত দেন। তারই পেক্ষিতে কুমিল্লা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সফিউল আলম লাকসাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলমান। এ ঘটনায় কামাল মাষ্টার কে লাকসাম উপজেলা শিক্ষা অফিসার তদন্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা মর্মে একটি নোটিশ দেন সেই নোটিশে দেখা যায় উলুকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সাদ্দাম এবং ফিরোজ কে বিদ্যালয়টির পিয়ন হিসেবে উল্লেখ্য করা হয়েছে। কিন্তু এ বিদ্যালয়ে আজ পর্যন্ত কখনোই কোনো ধরনের পিয়ন নিয়োগ হয়নি।
এরই মধ্যে নারায়ণগঞ্জ আদালত এবং কুমিল্লা আদালতে মামলার বিচারের রায় শেষ হওয়ার পরেও একটি কুচক্রী মহলের ইন্দনে এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানী ও মান সম্মান নষ্ট সহ নানান অপপ্রচার চালিয়ে পায়তারা করছে মাহমুদা আক্তার ও তার বাবা আব্দুর রশিদ অভিযোগ তুলে এমনটাই জানান কামাল মাষ্টারের বড় ছেলে মেহেদী হাসান। তিনি তার পরিবারের হয়ে এসব মিথ্যে অভিযোগ থেকে তার বাবা কামাল মাষ্টারের অব্যহতি চেয়ে কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক কামাল হোসেন সারাজীবন শিক্ষকদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষে কাজ করে গেছেন। একজন শিক্ষক নেতা হিসেবে সামনে থেকে শিক্ষকদের বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন। এছাড়াও উলুকান্দি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় মনোযোগী হতে ও সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।
এবিষয়ে অভিযুক্ত মাহমুদা আক্তার মুঠোফোনে বলেন, আমি এ বিষয়ে কোন প্রকার বক্তব্য দিতে চাচ্ছি না। তদন্তের পর কথা হবে।