ফরিদপুর সমবায় ব্যাংকের সাবেক কো-অর্ডিনেটর পাশার বিরুদ্ধে বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ তুলে ধরেছেন সমবায় ব্যাংকের কতৃপক্ষ।
ফরিদপুর সমবায় ব্যাংকের সাবেক সমন্বয়কারী (বরখাস্তকৃত) রহুল কুদ্দুস পাশার বিরুদ্ধে তাঁর অধীনস্ত দুজন কর্মকর্তা ও কর্মীর সাথে যোগসাজসে ব্যাংকের ঋণ ও আমানতের প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ এর সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্যাংক সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় যে, উক্ত কর্মকর্তা গত ০২/০৪/২০১৯ইং তারিখ হইতে ২৬/০৪/২০২২ইং তারিখ পর্যন্ত প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর/সমন্বকারী (বরখাস্তকৃত) পদে কর্মরত ছিলেন। এই সময় কালে তিনি ব্যাংকের ফিল্ড ও ব্যাংকের হিসাব শাখার তদারকী ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বে যুক্ত ছিলেন। এই সময় কালে তিনি মাঠ হইতে আদায়কৃত টাকা ও হিসাব শাখায় জমাকৃত সর্বমোট ১৭,৮৭,২১৮/- (সতের লক্ষ সাতাশি হাজার দুইশত আঠারো) টাকার কোন হিসাব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটিকে দিতে পারেন নাই।
তিনি উক্ত পরিমান টাকা মাঠ কর্মকর্তা রাহুল খান শুভ ও হিসাব কর্মকর্তা সুমাইয়া আক্তার এর উপর চাপিয়ে নিজেকে আড়াল করে রক্ষা পাওয়ার চেষ্টা চালিয়েছেন বলে সমবায়ীরা অভিযোগ করেছেন। ব্যাংকের কর্মকর্তাদের হুমকি,অসদআচরন, অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ফরিদপুর সেন্ট্রাল কো: ব্যাংক কর্তৃপক্ষ গত ২৫/০৪/২০২২ ইং তারিখে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় জিডি করেন। যাহার নম্বর- ১৪৪১। এ ছাড়া জালিয়াতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে একটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
ব্যাংকের আভ্যন্তরিন নিরীক্ষা প্রতিবেদনে তাঁর দুর্নীতি,ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের প্রতি হুমকি প্রদান,ব্যাংকের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মাঠ পর্যায় হইতে সংগৃহিত ঋণ-আমানততের ৭,৬৬,০০০/- (সাত লক্ষ চেষট্্ির হাজার) টাকা ও ব্যাংকের হিসাব শাখা হইতে ১০,২১,২১৮/- (দশ লক্ষ একুশ হাজার দুইশত আঠারো) টাকা আত্মসাৎ এর সাথে তাঁর সরাসরি যুক্ত থাকার সম্পৃক্ততা উঠে এসেছে বলে সুত্র জানান। এ ছাড়া মাঠ কর্মী রাহুল খান শুভ ব্যাংকে লিখিত দিয়েছেন যে,তাঁর মাঠ হইতে আদায়কৃত ব্যাংকের টাকা তাঁর নিকট থেকে জোর পুর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে হাতিয়ে নিতেন কো-অর্ডিনেটর রহুল কুদ্দুস পাশা। পাশার বিরুদ্ধে আরও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ যাচাই প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
তিনি ব্যাংকে যোগদানের পর হইতে ব্যাংকের ঋণ কার্যক্রম ও হিসাব শাখার মূখ্য দায়িত্ব কো-অর্ডিনেটর পদে নিয়োজিত ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে অর্থঅত্মসাৎ ও বিভিন্ন অভিযোগে প্রথমে তাকে সাময়িক বরখাস্ত ও পরে চুড়ান্ত ভাবে বরখাস্ত করেন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কমিটি। উক্ত সাবেক কো-অর্ডিনেটর (বরখাস্তকৃত) মোঃ রহুল কুদ্দুস পাশাকে ইতিমধ্যে ব্যাংকের পক্ষ থেকে আত্মসাৎকৃত ১৭,৮৭,২১৮/- টাকা ব্যাংকের হিসাব শাখায় জমা দেওয়ার জন্য নোটিশ প্রদান করে হয়েছে বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, তিনি ব্যাংকের সাথে চুক্তিতে কাজে যোগ দেন এবং লিখিত অঙ্গীকারনামা দেন যে, তাঁর কর্মকালে ব্যাংকের আদায়কৃত কোন তহবিল ব্যাংকে যথা সময়ে জমা না হলে তার জন্য তিনি দায়ী থাকবেন। মোঃ রহুল কুদ্দস পাশার গ্রামের বাড়ী ফরিদপুর সদর উপজেলার কোমরপুর গ্রামে ও তাঁর পিতার নাম মৃত মো: আলী শেখ বলে জানা গেছে।
ব্যাংকের নোটিশে অভিযোগ আনা হয়েছে যে, আপনি (মোঃ রহুল কুদ্দস পাশা) উক্ত কার্যক্রম পরিচালনা ও তদারকীর জন্য আইনগত চুক্তিবদ্ধ হয়েও ব্যাংকের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর ও স্বার্থপরিপন্থী কাজে যুুক্ত হয়ে ব্যাংকের বিপুল পরিমান অর্থ আত্মসাৎ এ সরাসরি যুক্ত ছিলেন এবং ব্যাংকের সাথে ইচ্ছাকৃত ভাবে প্রতারণা ও বিশ্বাস ভংগ করেছেন। চুক্তিমোতাবেক এর সকল দায়ভার বহনের জন্য আপনি দায়বদ্ধ রয়েছেন।