নওগাঁয় জামাইকে যৌতুকের টাকা ও খাট দিতে না পারায় গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠেছে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে আছেন নিহত গৃহবধূ’র স্বামী ও শ্বাশুড়ী। মর্মান্তিক এ ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার খলিসাকুড়ি গ্রামে। খবর পেয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে, ময়না তদন্তের জন্য শনিবার সন্ধায় ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশি হেফাজতে নিয়েছে।
নিহতের স্বজন সহ স্থানিয়রা জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ের বিয়ের সময় চুক্তি করা যৌতুকের টাকা ও একটি খাটের দাবিতে সুখী বেগম (২৫) নামের ঐ গৃহবধূকে মাঝে-মাঝে মারপিট করা হতো। তারই জেরে
শনিবার ২৫ ফেব্রুয়ারি দুপুরের দিকে কোন এক সময় গৃহবধূকে হত্যা করে ঘরের ভিতর রেখে বাহির থেকে বাড়িতে তালা দিয়ে বাড়ির লোকজন দেন গা ঢাকা। দীর্ঘ সময় ধরে বাড়িতে কারো সাড়া-শব্দ না পেয়ে প্রতিবেশীরা ঘরের জানালায় উঁকি দিয়ে গৃহবধূ সুখী বেগম কে ঘড়ের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে থানা পুলিশ কে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিশ।
নিহত গৃহবধূ সুখী বেগম নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার খলিসাকুড়ি গ্রামের হোসেন আলীর স্ত্রী ও পার্শ্ববর্তী কাদোয়া গ্রামের আকরাম হোসেনের মেয়ে। ঘটনার খবর পেয়ে পাগলের ন্যায় ঘটনাস্থল জামাই বাড়িতে ছুটে আসেন তার পিতার বাড়ির স্বজনরা।
কান্নারত অবস্থায় স্বজনরা জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে তাদের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দু’ বছর বয়সি একটি ছেলে সন্তান ও রয়েছে। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে জামাইকে একটি খাট ও টাকা দেয়ার কথা থাকলেও সুখীর গরীব বাবা তা সময় মতো জামাইকে দিতে পারেন নি। তারপরও কিছু টাকা জামাইকে দেন।
শনিবার সকালে গৃহবধূ সুখীর মা ও বাবাকে ডেকে আবারও এক লাখ টাকা সহ বিয়ের সময় দিতে চাওয়া একটি খাট দাবি করেন জামাই হোসেন আলী ও তার মা শেফালী বেগম। সুখীর মা বাবা যতদ্রুত সম্ভব দেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুপুরে জামাই বাড়ি থেকে নিজ বাড়িতে ফিরে যান। এর পরই বিকালে প্রতিবেশীরা তার মৃতদেহ দেখতে পান।
নিহত গৃহবধূ সুখির শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখতে পেয়ে এঘটনায় গৃহবধূ সুখীর বাবা বাদী হয়ে জামাই সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ফায়সাল বিন আহসান জানান, খবর পেয়ে নিহত গৃহবধূর মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনাটি উদর্ঘাটনে পুলিশ তৎপর রয়েছে এবং হত্যাকান্ড হলে জড়ীতদের আইনের আওতায় আনতে ও কাজ শুরু করেছে পুলিশ। এছাড়া, ময়না তদন্ত রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারন জানাযাবে।
উজ্জ্বল কুমার সরকার ফোন০১৭২৬-৩৭৬২৮২ তারিখ ২৬/২/২৩
নওগাঁ।