কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক এর বিরুদ্ধে জন্ম নিবন্ধনে অতিরিক্ত ফি আদায় করার অভিযোগ তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে।
রোববার ২০ নভেম্বর দুপুরে ভুক্তভোগী উপজেলার লক্ষ্মীপুর মুন্সি বাড়ি গ্রামের ফুল মিয়ার ছেলে সাইদুজ্জামান (৪৫) স্থানীয় সাংবাদিকদের নিকট এ অভিযোগ করেন।
অভিযোগ দাখিলের পর গত ৭ নভেম্বর সোমবার উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফ-কে আহ্বায়ক করে উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের ও উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমানকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে তাদেরকে অভিযোগের বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য চিঠি ইস্যু করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া ইসলাম লুনা। চিঠি ইস্যু হওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রহস্যজনক কারনে তদন্ত কার্যক্রম শুরু না করে গড়িমসি করছে তদন্ত কমিটি।
সাইদুজ্জামান বলেন, সরকারী নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে ১নং গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক প্রতি জন্ম নিবন্ধনে অতিরিক্ত ফি আদায় করে জনগনকে হয়রানী করার অভিযোগে গত ৩১ অক্টোবর সোমবার তিনি বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।
গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদে অতিরিক্ত ফি আদায় নিয়ে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় এ বিষয়ে একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও ভাইরাল হয় জন্ম নিবন্ধনে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়টি।
ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করা সহ একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলেও অজানা শক্তির ক্ষমতা বলে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক বুক ফুলিয়ে তার লোকজন দিয়ে সরকারি নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করে আগের ন্যায় প্রতি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে ২০০-৫০০ টাকা আদায় করে নিয়ে জনগণকে হয়রানী করে আসছে। দেখার যেন কেউ নেই। এমন অবস্থা চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হওয়ার পাশাপাশি তদন্ত কমিটি ও প্রশাসনের উপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তাই অচিরেই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীদের আইনের আওতায় আনা হলে সরকার ও আইনের প্রতি সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা বেড়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভুক্তভোগী সাইদুজ্জামান।
এব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ে বসেননি। তাই তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা যায়নি।
এব্যাপারে তদন্ত কমিটির সদস্য উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় কর্তৃক তদন্ত কমিটির একটি চিঠি পাওয়ার পর কমিটির আহ্বায়ক এখন পর্যন্ত তাদের নিয়ে বসেননি।
এব্যাপারে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শরীফ এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত বসা হয়নি। তবে দু-একদিনের মধ্যে কমিটির দুইকে নিয়ে বসে কি ভাবে তদন্ত করা যায় এ বিষয়ে আলোচনা করে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করা হবে।
এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির মতামতের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।