শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির সাথে উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা কুলিয়ারচরে শিশুদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে গ্রাম পুলিশসহ ৩জন আহত ঠাকুরগাঁওয়ে সাফ জয়ী তিন নারী ফুটবলারকে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সংবর্ধনা ভয়াল সিনেমাটি সবার জন্য উন্মুক্ত সিরাজদিখানে নবাগত সহকারী পুলিশ সুপারের সাথে ঝিকুট ফাউন্ডেশনের মতবিনিময় জনগণের অধিকার ও ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে- ছাগলনাইয়া বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম রাউজান প্রেসক্লাবের নব-নির্বাচিত কমিটির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত দাকোপের সাহেবের আবাদ শ্রীশ্রী কৃষ্ণের রাসমেলায় চতুর্থদিনে সাংকৃতিক সন্ধ্যা ঘোপাল যুবদলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ ঠাকুরগাঁওয়ে তিন জাতীয় দিবস উদযাপনে প্রস্তুতিমূলক সভা ঠাকুরগাঁওয়ে মাওলানা ভাসানীর মৃত্যুবার্ষিকীতে ইএসডিও’র আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছাগলনাইয়ায় ৩০ কেজি গাঁজা উদ্ধার আটক ০১ রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করতে হবে। দেশ চালাবে জাতীয় ঐক্যের সরকার। সনাতনীদের অস্তিত্ব রক্ষার্থে সকলকে একত্রিত হতে হবে ছাগলনাইয়া সেচ্ছাসেবক দলের লিফলেট বিতরণ ও গণসংযোগ
বিজ্ঞপ্তি :
বাংলাদেশ সরকারের তথ্য মন্ত্রানালয়ে আবেদনকৃত।

বীরত্ব’ সিনেমা আমার অনুভূতি-দৈনিক বাংলার অধিকার

রিয়েল তন্ময় বিনোদন সাংবাদিক / ১৪০ সংবাদটি পড়েছেন
প্রকাশ: সোমবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৮:৫৪ অপরাহ্ণ

গত রোববার বসুন্ধরা স্টার সিনেপ্লেক্সে বীরত্ব সিনেমা দেখার পর বাইরে বের হতেই চিত্রনায়ক ইমনকে দর্শক আধ ঘন্টা দাড় করিয়ে রাখলো। কেন ছাড়ছেন না? এই কারন খোঁজতে যেয়ে জানতে পারলাম দর্শকদের কাঁদানোর জন্যই নাকি ইমনের এই শাস্তি। তাকে আধ ঘন্টা স্ট্যানবাই দাঁড়িয়ে থেকে সবার সাথে ছবি তুলেই যেতে হবে। যে লোক হাজার হাজার দর্শককে বিনা অপরাধে কাঁদায় তাকে ছবি তুলে ফ্রেম করে ঘরে রাখবে সবাই। যেন মনে থাকে তার কথা।

চিত্রনায়ক ইমনের অভিনয়ের কথা আজ আর নাইবা বললাম। সেটা আপনারা তাকে দেয়া শাস্তির অবস্থা দেখেই বুঝে নিয়েন। এক কথায় যদি বলি ইমন নিজেই নিজেকে ছাড়িয়ে গেছে। আমার দেখা ইমনের ক্যারিয়ারের বেস্ট ছবি। এখানে ইমন কে কোন দিক থেকেই আমার কাছে চিত্রনায়ক মনে হয়নি। পুরোদস্তুর একজন ভালো অভিনেতা মনে হয়েছে।

ইমনের কথা বাদ। আমি একটু শিশু শিল্পীর কথা বলতে চাই। যাকে নিয়ে লিখতে ও বলতে আমার খুব ইচ্ছে করছে। যতদুর জানি বাচ্ছাটির আসল নাম এমিলিয়া। তবে পর্দায় তার নাম ছিল পুষ্পা। এই মেয়েটিকে ঈশ্বর এক অভাবনীয় অভিনয় ক্ষমতা দিয়ে দিয়েছেন। এই মেয়েটির আসলে মনে হয়েছে আলাদা করে অভিনয় করতে হয়নি। পর্দার পুষ্পাই যেন এমিলিয়া আর এমিলিয়াই যেন পুষ্পা। বার বার কেমন জানি গুলিয়ে ফেলছিলাম। এত নিখুত অভিনয় যা তার বয়সের সাথে আসলে যায় না। এই বয়সে এটা কিভাবে সম্ভব আমি মনে করি আমার মত সবারই মনে এই প্রশ্ন জাগবে। স্কীনে মেয়েটির পাকনা পাকনা কথা আর কিউটনেস দর্শকদের আরও আকৃষ্ট করেছে। এই মেয়েটা আসলেই প্রথম সিনেমা হিসেবে দুর্দান্ত করেছে। খুব বেশি শিশু শিল্পীর কথা আমার মনে নেই।শিশু শিল্পী হিসবে দীঘির ছবিই চোখের সামনে ভাসতো সব সময়। কিন্তু বীরত্ব দেখার পর মনে হয়েছে দীঘিকেও ছাড়িয়ে গেলো এমিলিয়া। এমিলিয়ার জন্য মন থেকে দোয়া/আশীর্বাদ ও ভালোবাসা রইলো। সে যেন ভালো একজন অভিনয়শিল্পী হতে পারে। সুযোগ হলে একদিন আলাদা করে এমিলিয়াকে নিয়েই শুধু লিখব।

সালওয়া। সিলেটের মেয়ে। আমার দেশী বোন। আমাদের একই জায়গায় বাড়ি। তাই বলে সালওয়াকে ছাড় দিয়ে কথা বলবো তা হবেনা। এই মেয়েটাকে স্কীনে দেখে কেমন যেন চোখে একটা তৃপ্তি পেলাম। সত্যিই তার স্কীন লুক ভালো। তারপর অভিনয়ের কথা যদি বলি। প্রথম হিসেবে সে ভালো করেছে। পুরোনো সব বাঘা বাঘা অভিনয়শিল্পীর সাথে কাজ করতে প্রথমবার একটু হোচট খেতে হয় সবারই সেদিক থেকে উতরে গেছে সালওয়া। বেশ ভালোই সাবলীল অভিনয় করেছে। অতিরঞ্জিত ও অমার্জিত কোন কিছুই পেলাম না।

আরও দুজনের কথা একটু বলব তারপর ধরব পরিচালককে। এই সিনেমাতে খল চরিত্রে দেখা গেছে দুজন অভিনেতাকে আহসান হাবিব নাসিম ও ইন্তেখাব দিনারকে। আহসান হাবিব নাসিমের নাটক অনেক দেখা হয়েছে। আসলে একটা দর্শক কিন্তু অভিনয় শিল্পীদের অভিনীত চরিত্র গুলোর উপরে ভিত্তি করেই তাদেরকে ভালো বা খারাপ হিসেবে চিনে রাখে।নাসিম এতদিন যে ঘরানার কাজ করেছে বা তাকে যেভাবে দেখেছি পুরোদস্তুর একজন ভালো মানুষ। যদি ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে বলি তাও উনি নিতান্তই একজন ভদ্রলোক। এই নাসিম ভাইকে যখন পর্দায় একজন খারাপ লোকের চরিত্রে দেখছিলাম আর ভাবছিলাম এই লোক এত খারাপ!! একবারেরও জন্য ভাবিনি এটা অভিনয়। খুব কষ্ট পাচ্ছিলাম এই ভেবে যে, এই লোকটা কিনা অবশেষে নষ্ট হয়ে গেলো! প্রত্যেকটা মানুষের মধ্যেই মনুষ্যত্ব বোধ থাকে। শুধু সেটাকে জাগিয়ে তুলতে হবে। নাসিম ভাই যখন বুঝতে পারেন যে তিনি অন্যায় করছেন এবং তার কারনে ফুলের মত একটা বাচ্ছার জীবন নস্ট হয়ে যাচ্ছে, তখনই তার বিবেক বোধ জাগ্রত হয় এবং তার ভীতর থেকে আসল বাস্তবের আহসান হাবিব নাসিম বের হয়ে আসে। এই দৃশ্যটা সবাইকে ভাবাবে। এই দৃশ্যটার জন্য হলেও সিনেমাটা দেখা উচিত।যখন সে ভুল বোঝে ক্ষমা চায় ইমনের কাছে আর সত্য বলে দেয়ার জন্য নিজের প্রাণ হারাতে হয় সেখানেই বুঝা যায় ভালো মানুষ হয়ে বাঁচাটা কতটা কঠিন এই সমাজে। এই দৃশ্যটা দেখার পর নাসিম ভাইকে আবারও আমাদের নাসিম ভাই ভদ্রলোক নাসিম ভাই রুপেই আবার আবিষ্কার করলাম। বেশ একটু শান্তি পেলাম তখন।

ইন্তেখাব দিনার ভাই। উনার মত শক্তিশালী অভিনেতাকে নিয়ে আর কিছু বলার নাই। খল চরিত্রে এভাবে উনাকে দেখে আসলে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে একটু কষ্ট হচ্ছিল। এই কি সেই আমাদের নাটকের দিনার ভাই!! এতটা পরিবর্তন!!ততক্ষনেই আবার নিজেকে বুঝালাম যে তারাতো অভিনেতা। আর অভিনেতারা সব পারে। দুর্দান্ত করেছেন দিনার ভাই। যা আসলে লিখতে গেলে শেষ হবে না। আর লিখার কিছু নেই। যারা দেখেছেন এই সিনেমা তারা বুঝে গেছেন দিনার ভাইয়ের ক্ষমতা। আর যারা দেখেন নাই তাদের বলব দিনার ভাইয়ের ম্যাজিক দেখতে হলে একবারের জন্য হলেও বীরত্ব দেখে আসুন। অনেক ম্যাজিক দেখতে পারবেন শুধু এটাই বললাম।

৫ দিন পতিতালয়ে থেকে বেশ আলোচনায় চলে এসেছেন নিপুণ আক্তার। অভিনয়ের জন্য যে কতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তার-ই প্রমাণ রাখলেন নিপুণ আক্তার । তার সাথেই ছিলেন আরেক অভিনেত্রী জেসমিন আক্তার। দুজনকেই এই সিনেমায় যৌনকর্মীর চরিত্রে দেখা গেছে। দুজনের অভিনয়ই সাবলীল ছিল। আলাদা করে বলার কিছু নেই। তারা এই কাজ টা করতে যেয়ে যে কি কষ্ট করেছেন তা স্পষ্ট পর্দায় দেখা গেছে।

এই সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন মনিরা মিঠু, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, কচি খন্দকার, বড়দা মিঠু, আরমান পারভেজ মুরাদ, শিল্পী সরকার অপু, সাবিহা জামান, হান্নান শেলি, পীরজাদা শহিদুল হারুন, তানভীর রিজভী, স্বর্না, প্রনব ঘোষ, প্রিয়স্তি গোমেজ, রিমু জাহাঙ্গীর আলম সহ অনেকে। সবাই সবার জায়গা সর্বোচ্চটা দেয়ার চেষ্টা করেছে বলেই একটা ভালো সিনেমা হয়েছে। যা দর্শককে সিনেমা দেখার একটা ভিন্ন স্বাদ দিতে পেরেছে বলেই আমি বলব।

নাটের গুরু কে নিয়ে কিছু বলা যাক। আমাদের সম্মানিত পরিচালক সাইদুল ইসলাম রানা। যিনি এই অসাধারন একটি সিনেমার কারিগর। ক্যামেরার পিছন থেকে কলকাঠি নেড়েছেন। আসলে একটি ভালো কাজের পিছনে অনেক গল্পই থাকে। দর্শক শুধু সিনেমাটা দেখে। এর পিছনের গল্প দেখে না,জানে না। একটি ভালো কাজ একদিনের ফসল নয়। দীর্ঘ দিন-মাস-বছর পরিশ্রম করার পরেই এরকম একটি ভালো কাজ তৈরি হয়। এর মূল নায়কের ভূমিকায় থাকেন একজন পরিচালক। পরিচালকের মেধা,দক্ষতা ও পরিশ্রমই কিন্তু পারে একটি ভালো সিনেমা উপহার দিতে। রানা ভাই তার মত করে সবাইকে দিয়ে তার স্বপ্নের চরিত্র গুলোর মত করেই কাজ করিয়ে নিতে পেরেছেন বলেই তো আজ বীরত্ব দর্শক মহলে বীরত্ব দেখাচ্ছে।

সবশেষে বলব, বীরত্ব দেখলে একটি অন্যরকম স্বাদ পাবেন। সিনেমা তো সব গুলোই ভালো। দেশীয় সিনেমাকে খারাপ বলার দৃষ্টতা আমার নেই। প্রত্যেকটা সিনেমা তার পরিচালক তার ঢঙ্গে নির্মাণ করেন। আলাদা আলাদা গল্প,আলাদা আলদা অভিনয়শিল্পী। তাই একেকটা সিনেমা একেক রকম হয়। আবার অনেক সময় গতানুগতিক শব্দটাও আমরা ব্যবহার করি। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে গতানুগতিক শব্দটা ব্যবহার করা যায় না বীরত্বের ক্ষেত্রে। একটু ভিন্ন রকম গল্প,একটু ভিন্ন স্বাদ রয়েছে। মনের শান্তি আর চোখের শান্তি দুইটাই পাওয়া যাবে। তার সাথে সিনেমা দেখার ক্ষুধাটাতো মিটবেই। এরকম ভালো ভালো সিনেমা আরও আসুক এটাই চাওয়া।শুভকামনা বীরত্ব টিমের সবার জন্য। জয় হোক ‘বীরত্ব’ সিনেমার। জয় হোক বাংলা সিনেমার।

লেখক
রিয়েল তন্ময়
বিনোদন সাংবাদিক


এ বিভাগের আরও সংবাদ

আর্কাইভ

এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Don`t copy text!
Don`t copy text!