বিপুল উৎসাহে যথাযোগ্য মর্যাদা আর ধর্মীয় ভাব গম্ভীর পরিবেশে নিউইয়র্কসহ উত্তর আমেরিকায় শনিবার,৯ই জুলাই পবিত্র ঈদ-উল আযহা উদযাপিত হয়েছে।
তবে গরম আবহাওয়ার পূর্বাভাসের কারণে এবারে ঈদের জামাত খোলা মাঠেয় নামাজের ব্যবস্তা করা হয়।বাঙালি সমাজে এই ধর্মীয় উৎসব ‘কোরবানির ঈদ’ নামেও পরিচিত মুসলমানদের এই অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় উদ্দীপনা নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঈদ উল আযহা উথযাপনের খবর পাওয়া গেছে। খবর বাপসনিউজ সিনিয়র প্রতিনিধি মোঃনাসির MetLife stadium -New Jersey তে পরিবারের সাথে ঈদের নামাজ আদায় করেন।মুসল্লিরা ঈদ উল আযহার নামাজ শেষে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে পশু কোরবানি দিয়েছেন। কভিড ১৯ এর কারণে সরকারী বিধি নিষেধ মেনে স্থানীয় মসজিদ গুলোতে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুধুমাত্র অধিক মাত্রায় কভিড আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মসজিদ গুলোতে ঈদের জামাত সরকারী বিধি নিষেধ মেনে স্থানীয় মসজিদ গুলোতে একাধিক জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঈদুল আজহা ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র ইসমাইল (আ.)-এর সঙ্গে সম্পর্কিত। ইব্রাহিম (আ.) স্বপ্নে আদিষ্ট হয়ে পুত্র ইসমাইলকে আল্লাহর উদ্দেশে কোরবানি করতে গিয়েছিলেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে এই আদেশ ছিল ইব্রাহিমের জন্য পরীক্ষা। তিনি পুত্রকে আল্লাহর নির্দেশে জবাই করার সব প্রস্তুতি নিয়ে সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।বর্ণিত আছে, নিজের চোখ বেঁধে পুত্র ইসমাইলকে বেঁধে যখন জবাই সম্পন্ন করেন, তখন চোখ খুলে দেখেন ইসমাইলের পরিবর্তে পশু কোরবানি হয়েছে, যা এসেছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে।সেই ঐতিহাসিক ঘটনার স্মৃতি ধারণ করেই ইব্রাহিম (আ.)-এর ওয়াজিব হিসেবে পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে কোরবানির বিধান এসেছে ইসলামি শরিয়তে। সেই মোতাবেক প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জন্য পশু কোরবানি করা ওয়াজিব।সকালে মুসল্লিরা নিকটস্থ মসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদুল আজহার দুই রাকাত ওয়াজিব নামাজ আদায় করেন। খতিব নামাজের খুতবায় কোরবানির তাৎপর্য তুলে ধরেন।কোরবানির মূল কথা হল ত্যাগ। সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি দিয়ে দরিদ্র প্রতিবেশীদের মধ্যে এর মাংস বিতরণ করা প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব।রোজার ঈদের মতো ততটা জাকজমকপূর্ণ না হলেও কোরবানীর ঈদেও নিউইয়র্ক ত্রবং নিউ জার্সি ছিল উৎসবমুখর।তবে ওয়ার্কিং ডে না থাকায় অনেক প্রবাসী এবার ঈদেও নামাজ পড়তে পেড়েছে। অনেককেই ঈদের দিনে কাজ থাকায় নামাজ আদায় করে কর্মস্থলে যোগ দিতে দেখা যায়।আবার যারা কর্মস্থল থেকে ছুটি পেয়েছেন বা যাদের ছুটি ছিলো তারা স্বপরিবারে, অনেকে বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ঘনিষ্টজনদের বাসা-বাড়িতে গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এছাড়া প্রবাসীরা ফোনে বাংলাদেশে ফোন করে স্বজনদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। মহান আল্লাহতায়ালার নির্দেশে হযরত ইব্রাহীম (আ:) এর ত্যাগের মহিমায় চির ভাস্বর পবিত্র ঈদ-উল আযহা। হেমন্তের চমৎকার আবহাওয়ায় নিউইয়র্ক-নিউ জার্সি সহ উত্তর আমেরিকার একাধিক মসজিদ আর কমিউনিটি সেন্টারে পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ আদায় করা হয়। প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত নিউয়র্কের অন্যতম বৃহৎ মসজিদ জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে ঈদুল আযহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ঈদের জামাত শেষে অনুষ্ঠিত বিশেষ মুনাজাতে সমগ্র মুসলিম উম্মাসহ দেশ-জাতির মঙ্গল ও সমৃদ্ধি এবং দেশে-দেশে নিপীড়িত-নির্যাতিত মুসলমানদের রক্ষায় মহান আল্লাহতায়ালার রহমত ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করা হয়। এদিকে, কানাডা ও ওয়াশিংটন ডিসিসহ যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী, কানেকটিকাট, ম্যারিল্যান্ড, পেনসেলভেনিয়া, ভার্জেনিয়া, ওয়াহিও, ফ্লোরিডা, নর্থ ক্যারোরিনা, সাউথ ক্যারোলিনা, জর্জিয়া, মিশিগান, ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস প্রভৃতি অঙ্গরাজ্যে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে পবিত্র ঈদ-উল আযহা উদযাপিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য মসজিদ পরিচালনা কমিটির উদ্যোগে সর্বত্রই নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে সিটি প্রশাসনেরও বিশেষ নিরাপত্তা লক্ষ করা যায়। ঈদের নামাজ আদায়ের স্থানগুলোর আশপাশের রাস্তায় ফ্রি গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থা থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে শত শত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা সপরিবারে ঈদের নামাজে শরীক হন।